ফ্রিডম বাংলা নিউজ

রবিবার, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪ |

EN

ভাষা চর্চায় আরো যত্নশীল হতে হবে

জিহাদ হোসেন রাহাত, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি | আপডেট: মঙ্গলবার, ফেব্রুয়ারী ৭, ২০২৩

ভাষা চর্চায় আরো যত্নশীল হতে হবে
ফেব্রুয়ারী মাস আসতেই ভাষা নিয়ে শুরু হয় আমাদের নানান চর্চা। তৈরি হয় আবেগঘন পরিবেশ। আয়োজন হয় ভাষা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অনুষ্ঠান-পর্ব। অবশ্য এগুলো দোষের কিছু নয় বরং আমাদের জন্য পরম আনন্দের। বিস্ময়ের বিষয় হলো কেবল ফেব্রুয়ারী এলেই আমাদের মধ্যে জাগ্রত হয় ভাষাপ্রেম। সময় এসেছে, দেশের মানুষ কতটা গুরুত্ব দিয়ে ভাষার ব্যবহার করে তা খেয়াল করার। একজন ছাত্র হিসেবে ভাষার প্রতি আমার টান কিছুটা ভিন্ন হলেও ভাষার প্রতি ভালোবাসা অন্যসব বাঙালির মতো আমারও সমান। ভাষার প্রতি এই ভালোবাসার মাত্রা তীব্র হওয়ার একমাত্র কারণ হলো, অনুভূতি প্রকাশের বাধাহীন সুযোগ। তবে এই অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে যে আমরা ভাষার যাচ্ছেতাই ব্যবহার করছি- তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বর্তমান সময়ে এসে সভা,সেমিনার, সঞ্চালনা কিংবা প্রতিবেদন লিখন-উপস্থাপনে ভাষার যথাযথ প্রয়োগ ধীরেধীরে কমতে শুরু করেছে। গুটিকয়েক সুশিক্ষিত মানুষ ছাড়া অনেক শিক্ষিতরাই করছেন ভাষার নিদারুণ অপব্যবহার। লেখ্য ভাষা নয় আমি বলছি কথ্য ভাষার কথা। সমাজে এমন অনেকেই আছেন যাদের দ্বারা আঘাত প্রাপ্ত হচ্ছে বাংলা ভাষার কথ্য রুপ- এই সংকটের উত্তরণ জরুরি। বাড়াতে হবে জনসচেতনতা। কথ্য ভাষার কয়েকটি উন্নত ক্ষেত্রের মধ্যে একটি হলো- বক্তৃতা। বক্তৃতা মানুষের জীবনে বিস্তারকরে অন্য রকম প্রভাব। এখানে বক্তা প্রভাব বিস্তারকারী উপাদান। যার কথার ধরন এবং শব্দচয়ন অনায়াসে প্রভাবিত করতে পারে এক বা একাধিক শ্রোতাকে।আত্মবিকাশ, আপন চিন্তাধারার সম্প্রসারণ, স্বীয় আদর্শে উজ্জীবীত থাকা, চেতনা ও আবেগ-অনুভূতি প্রকাশকল্পে বক্তৃতার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। 

অতীতে যারা বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন কিংবা এখনো দিচ্ছেন তাদের বক্তৃতা শুনেই উজ্জীবিত হয়েছে শতসহস্র মানুষ। বঙ্গবন্ধুর এক ৭ই মার্চের ভাষণ শুনেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রান দিতে প্রস্তুত হয়েছিলো লাখো মানুষ। রুখে দিয়েছিলো শত্রুদের।দেশমাতৃকার স্বার্থে আত্মনিয়োগকল্পে সুন্দর, স্বপ্নময় ও কাঙ্খিত সমাজ গঠন করার জন্য নিজেকে সুবক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা দরকার। আর এই কাজটি সম্পাদন করার আগে প্রয়োজন শুদ্ধ ভাষা চর্চায় মনোযোগী হওয়া। সভা-সমাবেশে বক্তৃতা দেওয়ার অভ্যাসও গড়া একান্ত প্রয়োজনীয়।

বায়ান্নর সেই ভাষা আন্দোলনের পটভূমির কথা স্মরণ করলে দেখা যায়, সেই সময়টায় ভাষার প্রতি যে টান-প্রেম আপামর বাঙালির ছিলো তা বর্তমানে নেই। আবার থাকলেও তা নেহাতই সামান্য। ভাষার অপব্যবহার কমাতে ইতিবাচক উদ্যোগ প্রত্যেক বাঙালিকে মন থেকেই নিতে হবে। শুধু ভাষার মাস নয় ভাষা চর্চায় প্রত্যেক দিনকেই ভাষার দিন জ্ঞান করতে হবে। তবেই নিশ্চিত হবে ভাষার সুন্দর ব্যবহার। ভাষা একটি জাতির অলংকার স্বরুপ। আর এই অলংকারের সুন্দর ব্যবহার বিশ্ব দরবারে জাতির রুপ-শোভা বর্ধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই আমি মনে করি শোভাবর্ধক এই অলংকারের নিরাপত্তা ও সুন্দর ব্যবহার নিশ্চিত করা আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব। আমাদেরকে ভাষা চর্চায় আরো যত্নশীল হতে হবে।