ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২১
উত্তরাধিকারের
রাজনীতি নিয়ে নতুন করে বিতর্ক
সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেছেন যারা উত্তরাধিকারসূত্রে রাজনীতিতে আসতে
চায় তাদেরকে স্ট্রাগল করতে হবে, রাজনীতিতে
সক্রিয় থাকতে হবে। কুমিল্লা ৭
আসনে প্রয়াত এমপির পুত্র মনোনয়ন চেয়েছিলেন কিন্তু তাকে মনোনয়ন না
দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি অধ্যাপক
ডা. প্রাণ গোপাল দত্তকে মনোনয়ন দেন। শুধু এটি
নয় গত ১৭ টি
উপনির্বাচনের মধ্যে এমপিদের প্রার্থীদের আত্মীয়স্বজনের মধ্যে মাত্র ৩ জন মনোনয়ন
পেয়েছেন বাকিরা মনোনয়ন পাননি আর এর প্রেক্ষিতে
আওয়ামী লীগের মধ্যে উত্তরাধিকার রাজনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তা
তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে দেখা যায় উত্তরাধিকারসূত্রে
যারা রাজনীতিতে এসেছেন তারা অনেকে ভালো
করেছেন, আবার অনেকে ভালো
করতে পারেননি। রাজনৈতিক কিছু কিছু ব্যাক্তি
আছেন যারা উত্তরাধিকারসূত্রে রাজনীতিতে এসে
তাদের পূর্বসূরীদের সুনাম রক্ষা করতে পারেন নি।
এরকম কয়েকজনকে নিয়েই এই প্রতিবেদন।
১.
সাঈদ খোকন: সাঈদ খোকন ঢাকার
প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফের পুত্র। হানিফের কারণে তিনি রাজনীতিতে এসেছেন,
হানিফের কারণে তিনি বিভিন্ন সময়ে
সুযোগ পেয়ছেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি
কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে তাকে মনোনয়ন দেয়া
হয়েছিল। জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি
মনোনয়ন পেয়েছিলেন। ২০০১ সালে জাতীয়
সংসদ নির্বাচনে পরাজিত হলেও দক্ষিণ সিটি
কর্পোরেশন নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হয়েছিলেন।
কিন্তু মেয়র হিসেবে তিনি কতটুকু সফল
বা ব্যর্থ হয়েছেন সেটি জনগণ বিচার
করবে। আওয়ামী লীগের বিচারে তিনি সফল হননি।
এ কারণেই আওয়ামী লীগ দ্বিতীয় দফায়
তাকে আর মনোনয়ন দেয়নি।
তার বদলে শেখ ফজলে
নূর তাপসকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। পৈত্রিক সূত্রে তিনি আওয়ামী লীগের
কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হয়েছেন। সেখানে তিনি কতটুকু সেটি
প্রশ্নসাপেক্ষ।
২.
নাহিম রাজ্জাক: আওয়ামী লীগের অন্যতম জনপ্রিয় এবং হেভিওয়েট নেতা
আব্দুর রাজ্জাকের পুত্র নাহিম রাজ্জাক। আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতা ছিলেন না
বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ ছিলেন। যদিও আওয়ামী লীগ
সভাপতির দেশে ফেরার পর
যারা আওয়ামী লীগ ত্যাগ করে
বাকশাল গঠন করেছিলেন তাদের
প্রধান ছিলেন আব্দুর রাজ্জাক। আব্দুর রাজ্জাকের মৃত্যুর পর তার ছেলের
নাহিম রাজ্জাককে আওয়ামী লীগে মনোনয়ন দেয়।
সহযোগী মনোনয়ন দেয়া হিসেবে আছেন তবে এখনো
অনেক পরীক্ষা বাকি আছে। সামনের
দিনগুলোতে তিনি উজ্জ্বল হয়ে
উঠতে পারেন কিনা সেটাই দেখার
বিষয়।
৩.
মাহী বি চৌধুরী: অধ্যাপক
বদরুদ্দোজা চৌধুরীর পুত্র মাহী বি চৌধুরী।
মেধার দিক থেকে তিনি
কোনো অংশেই কম নন। যথেষ্ট
প্রতিভা সম্পন্ন ব্যক্তি। কিন্তু রাজনীতিতে তিনি অনুজ্জ্বল হয়ে
যাচ্ছেন ক্রমশই। আর্থিক বিষয়াদি থাকা এবং রাজনীতিতে
শর্টকাট পদ্ধতির কারণে তিনি রাজনীতিতে সম্ভাবনাময়
তারকা হয়ে উঠতে পারছেন
না বলে অনেকে মনে
করেন।
৪.
শামা ওবায়েদ: বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব মহাসচিব এবং রাজনীতিতে একজন
হেভিওয়েট তারকা কে এম ওবায়দুর
রহমানের কন্যা শামা ওবায়েদ। রাজনীতিতে
যথেষ্ট সম্ভাবনা নিয়ে আসার পরও তিনি
উজ্জ্বল নয়। বিএনপির সাংগঠনিক
সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ফরিদপুরে
তার একটি প্রভাব বলয়
রয়েছে। কিন্তু রাজনীতিতে তিনি তার পিতার
প্রতি ন্যায় বিচার করতে পারছেন না
বলে অনেকে মনে করেন। শামা
ওবায়েদের রাজনীতিতে যে সম্ভাবনা ছিল
সেই সম্ভাবনা এখন প্রায় তিরোহিত
বলে অনেকে মনে করেন।
৫. তানভীর ইমাম: আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এবং অন্যতম নীতিনির্ধারক ছিলেন এইচ টি ইমাম। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন। পৈতৃক সূত্রে তানভীর ইমাম আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি সিরাজগঞ্জ ৪ আসনের এমপি। কিন্তু এমপি হলেও রাজনীতিতে তিনি তেমন কোনো সম্ভাবনার ছাপ রাখতে পারেননি। বরং রাজনীতিতে তিনি শুধুমাত্র এইচ টি ইমাম এর পুত্র হিসেবে পরিচিত।