জেলা প্রতিনিধি | আপডেট: মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২১
চট্টগ্রাম
সিটি করপোরেশনের ১ নম্বর দক্ষিণ
পাহাড়তলি ওয়ার্ড মাদক সমস্যায় জর্জরিত।
পাহাড় ও সমতল দুই
ভাগে বিভক্ত ওয়ার্ডে বর্ষায় জলাবদ্ধতা থাকে। পাহাড়ি ঢলের সৃষ্টি হয়
অতি বৃষ্টির সময়।
প্রায়
চার লাখ জনসংখ্যার এ
ওয়ার্ডে রয়েছে জবর দখল ও
পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস। শিক্ষা, স্বাস্থ্য সবকিছুরই সমস্যা এ ওয়ার্ডে। নগরের
১ নম্বর ওয়ার্ড হলেও উন্নয়নে ১
নম্বর নয় এ ওয়ার্ডটি।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র দুটির মধ্যে একটি দক্ষিণ পাহাড়তলী
স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও অপরটি নরেশ
মল্লিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র। এ ছাড়া দাতব্য
স্বাস্থ্য কেন্দ্র।
অভ্যন্তরীণ
সড়কের মধ্যে মোবারক রোড, ডাক্তার আবদুল
হামিদ সড়ক, খোসালশাহ সড়ক,
ভাটিয়ারি রোড, খিল্লা পাড়া,
ফতেয়াবাদ ঠান্ডাছড়ি সড়ক, ছৈয়দ কাসেম
সড়ক, ছড়ারকুল সড়কের সংস্কার জরুরি।
খোসালশাহ
ও ঠান্ডাছড়ি খাল বেদখল ও
কমলী ছড়া বিলুপ্ত হয়ে
যাচ্ছে। বালুখালি ছড়ার অবস্থাও ভালো
নয়। পাহাড়ি ঢলে এ খালগুলো
দিয়ে পানি সরতে পারে
না। এতে বড়দীঘির পাড়
থেকে শুরু করে আমান
বাজার পর্যন্ত জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। আপাতত ২০
কোটি টাকা বরাদ্দ পেলে
এসব খাল সংস্থার হবে।
আমান
বাজার আনোয়ার হোসেন বলেন, জাইকার প্রকল্পের মাধ্যমে এলাকা আলোকিত করা হয়েছিল ।
কিন্তু বাতি ও বিদ্যুতের
তার চুরি হয়ে গেছে
বেশ কিছু রাস্তায়। ফলে
এলাকায় বেশ বড় অংশ
অন্ধকার। রাতে মানুষ চলাফেরা
করতে পারে না।
আমিনুর
রহমান নামের ব্যবসায়ী বলেন, চসিকের ১ নম্বর ওয়ার্ড
এটি। কিন্তু এর সমস্যার শেষ
নেই। এখানে অনেকগুলো সড়কের উন্নয়ন দরকার। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার মান
ভালো করতে চসিককে এগিয়ে
আসতে হবে।
চট্টগ্রাম
সিটি করপোরেশনের এই ওয়ার্ডটি হাটহাজারী
থানার অধীনে। কিন্তু একটি মাত্র বিট
স্থাপন করা হয়েছে। সে
বিটের তেমন কোনো কাজই
এলাকাবাসী দেখে না। আইনশৃঙ্খলা
পরিস্থিতি নিয়েও তাঁরা খুশি নন।
পাহাড়
থেকে মাদক ঢুকে এলাকায়।
পুলিশ মাঝে মাঝে ধাওয়া
দেয়। তখন তারা পাহাড়ে
পালিয়ে যায়।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের
মধ্যে ফতেয়াবাদ ডিগ্রি কলেজ, ফতেয়াবাদ মহিলা কলেজ, মাধ্যমিক শৈলবালা চসিক উচ্চ বিদ্যালয়,
ফতেয়াবাদ গার্লস চসিক উচ্চ বিদ্যালয়,
প্রাথমিকের মধ্যে আম্বিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শৈলবালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, অলি আহম্মদ সরকারি
প্রাথমিক বিদ্যালয়, কে আই সোসাইটি
সরকারি প্রাথমিক, রাধকৃষ্ণ প্রাথমিক বিদ্যালয় অন্যতম।
মাদ্রাসা
শিক্ষায় গাউছিয়া মাদ্রাসা, লালিয়ার হাট তৈয়বিয়া মাদ্রাসা।
হাটহাজারী
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রফিকুল
ইসলাম বলেন, দক্ষিণ পাহাড়তলী এলাকায় কিছু ঠিকানাবিহীন লোক
বসবাস করেন। যাদের বাড়ি–ভিটা নেই
এখানে। তারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির
অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করে সব সময়।
কিন্তু পুলিশও সজাগ আছে। আর
পৃথিবীর এমন অঞ্চল নেই
যেখানে মাদক নেই। সুতরাং
এলাকায়ও মাদক আছে। তবে,
সেটি নিয়ন্ত্রিত। সব সময় মাদকের
বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়। অনেক মাদক
কারবারি এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
আবার নূতন করে অনেক
কারবার শুরু করে। তবে
তাদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসার সব
ধরনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তথ্য
পাওয়া মাত্র অভিযান শুরু করে দেব।
চট্টগ্রাম
সিটি করপোরেশনের ১ নম্বর দক্ষিণ
পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গাজী মোহাম্মদ শফিউল
আজিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডের প্রধান
সমস্যা মাদক। বারবার পুলিশকে এ বিষয়টি নিয়ে
বললেও কোনো ধরনের প্রতিকার
পাইনি। বেশ কিছু রাস্তার
উন্নয়ন ও সংস্কার করতে
হবে।
এই
কাউন্সিলর আরও বলেন, ‘আমার
এ ওয়ার্ডের আরেকটি সমস্যা হলো খাল বেদখল
হয়ে যাওয়া। ফলে বৃষ্টির সময়
খালের পানি লোকালয়ে ছড়িয়ে
পড়ে। এ ওয়ার্ডের একটি
অংশে পাহাড় থাকায় পাহাড়ি ঢলেও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি
হয়। বেশ কিছু উন্নয়ন
প্রকল্প জমা দেওয়া রয়েছে।
মোট ২০ কোটি টাকা
বরাদ্দ পেলে সব উন্নয়ন
প্রকল্পে কাজ শেষ হবে।
খাল থেকে শুরু করে
রাস্তা সংস্কার সব হয়ে যাবে
এই টাকায়।