ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শনিবার, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

নেতৃত্বের সংকটে ঘুরপাক খাচ্ছে বিএনপি

ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: রবিবার, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২১

নেতৃত্বের সংকটে ঘুরপাক খাচ্ছে বিএনপি

ক্ষমতার গর্ভে জন্ম নেয়া দল বিএনপি চরম নেতৃত্বের সংকটে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে দলটির প্রধান নেতা বেগম খালেদা জিয়া এতদিন কারাগারে ছিলেন। করোনা সংক্রমণের কারণে সরকারের নির্বাহী আদেশে বর্তমানে নিজের বাসায় অবস্থান করছেন। তবে দলে কোনো কাজ করছেন না। বয়স শারীরিক জটিলতায় দলীয় কোনো কর্মকাণ্ডে তার সম্পৃক্ততা নেই।

 

দ্বিতীয় প্রধান নেতা হলেন তারেক রহমান। তিনি নানা মামলায় দণ্ডিত এক যুগ ধরে লন্ডনে পলাতক। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে তিনি দেশে ফিরবেন না। বর্তমানে স্কাইপে বসে দল চালাচ্ছেন। তাই অনেকে মজা করে বিএনপিকে  ‘স্কাইপ পার্টি বলে। লন্ডন থেকে স্কাইপের মাধ্যমে বিএনপির মতো দল চালানো সম্ভব নয়। অনলাইনে সবকিছু করা গেলেও দলের নেতৃত্ব দেয়া যায় না।পাশাপাশি একটি রাজনৈতিক দল যদি বিদেশ বসে চালানো হয় তাহলে দলটি আর মানুষের দল থাকে না। মানুষের দলে থাকতে হলে জনসম্পৃক্ততা দরকার। এর জন্য মানুষের কাতারে দাড়াতে হয়। ছাড়া তার স্ত্রীজুবাইদা রহমানও রাজনীতিতে আগ্রহী নন। তার কন্যা জাইমা রহমানও ছোট, সবে ব্যারিস্টারি পড়াশোনা শেষ করেছেন।  

 

দলটির তৃতীয় প্রধান অ্যাকটিভ নেতা হলেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। জাতীয় নেতা হিসেবে তার কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। সাধারণ মানুষ ওনাকে রাজাকারের সন্তান হিসেবে জানে। যদিও তিনি নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দাবি করেন। তবে একাত্তর টিভি এক প্রতিবেদনে দাবি করে যে মির্জা ফখরুলের মুক্তিযোদ্ধর বিষয়টি ভুয়া।

 

স্থায়ী কমিটির রুগ্ন দশা

দলটির স্থায়ী কমিটির অর্ধেকেরও বেশি সদস্য অসুস্থ, রুগ্ন। নানা রকম রোগসুখে ভোগছেন তারা। ছাড়াও অনেকে আছেন যারা নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত। দলে সময় দেন না।

ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া দলীয় কোনো কর্মকাণ্ডে থাকেন না। আরেক নেতা খন্দকার মোশারফ হোসেন দলীয় অনুষ্ঠানে মাঝে মাঝে আসেন। আবার মাঝে মাঝে আসেনও না। দল নিয়ে তার খাপছাড়া ভাব দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। আরেক সদস্য মির্জা আব্বাস দলীয় বিষয়ে গা ছাড়া ভাব। একই অবস্থা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়েরও। ছাড়া অন্যান্য সদস্য যেমন . মোমিন, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুদের দলীয় কাজে দেখা যায় না।

 

কমিটি সমস্যা

বর্তমানে  ৮০ শতাংশ জায়গায় কমিটি ছাড়াই চলছে বিএনপি। ঢাকা মহানগরীতে শেষ পর্যন্ত একটি কমিটি যদিও হয়েছে। কিন্তু সেটাও এখন কতটুকু কার্যকর কেউ জানে না। পাশাপাশি ৭৫টি ওয়ার্ড কমিটিও ভেঙ্গে দিয়েছে দলটি। ছাড়া চলমান কমিটিগুলো যে প্রক্রিয়ায় দেয়া হয়েছে, তাতে  তৃণমূলে গণতন্ত্র চর্চা হচ্ছে না। এলাকায় এলাকায় গিয়ে নেতৃত্ব ঠিক করে দিচ্ছেন শীর্ষ পর্যায় থেকে নিয়োগকৃত প্রতিনিধিদল। এটা করতে গিয়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অসততা অনৈতিকতার অভিযোগ উঠছে। ফলে একটা অংশের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। অন্যদিকে তৃণমূল নেতারা মনে করছেন, শীর্ষ নেতৃত্ব তাদের গুরুত্বহীন মনে করছে। যদিও বিষয়ে নেতাদের কেউ প্রকাশ্যে কিছু বলতে চান না।

 

সুশীল সমাজ রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করেন, বিএনপি পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতিতে আবদ্ধ। এছাড়া দুর্নীতি সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে আজ জনগণের কাছ থেকে ছিটকে পড়েছে দলটি। বিএনপিতে অনেক মেধাবী যোগ্য নেতা আছে, যাদের নেতৃত্বে বিএনপি পুনরুজ্জীবিত হতে পারতো। কিন্তু পরিবারতান্ত্রিক হাওয়ায় সেটা সম্ভব হচ্ছে না। বিএনপিকে চলতে হচ্ছে ফেরারি আসামির নেতৃত্বে।

 

বলা হয়, একটি রাজনৈতিক দলের প্রথম দরকার হল নেতৃত্ব। সে নেতৃত্বের সংকটেই বিএনপি এখন ঘুরপাক খাচ্ছে।