ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শনিবার, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

বিএনপিকে শক্তিশালী করতে চায় পাকিস্তান

ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: শনিবার, সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১

বিএনপিকে শক্তিশালী করতে চায় পাকিস্তান

কদিন আগেও এই অঞ্চলের রাজনীতিতে পাকিস্তান ছিল অপাংক্তেয়, গুরুত্বহীন এবং একঘরে। কিন্তু এখন পাকিস্তান এই অঞ্চলে যেন আবার ছড়ি ঘোরানো শুরু করেছে। ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর পাকিস্তান তার কূটনৈতিক কৌশল পরিবর্তন করেছে। মার্কিন নির্ভরতা বন্ধ করে দিয়ে এখন চীনের সাথে সখ্যতা করেছে। আর চীন এই অঞ্চলের আধিপত্য তৈরি করার জন্য পাকিস্তানকে তার সহযোগী রাষ্ট্র হিসেবে ব্যবহার করছে। ইমরান খানের পররাষ্ট্রনীতিতে চীনের কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ নিয়ে কোনো রকম লুকোচুরি নেই। পাশাপাশি চীনের মদদে আফগানিস্তানে তালেবান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে তালেবান রাষ্ট্রটি আসলে পাকিস্তানেরই একটি অঙ্গ রাষ্ট্র বলে অনেক কূটনৈতিক মনে করছেন। কারণ, তালেবানে যে সরকার গঠিত হয়েছে তা পুরোটাই পাকিস্তানের অভিপ্রায় অনুযায়ী এবং পাকিস্তানের পৃষ্ঠপোষকতায়। আফগানিস্তানে আসলে পাকিস্তানি রাজত্ব কায়েম হয়েছে বলেই অনেকে মনে করেন। আর এরকম একটি পরিস্থিতিতে একদিকে যেমন শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মালদ্বীপে চীনের আগ্রাসন এবং অন্যদিকে পাকিস্তানের আফগানিস্তান দখল সব মিলিয়ে এই উপমহাদেশে এখন জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদের নতুন পটভূমি তৈরি হয়েছে। আগামী দিনগুলোতে এই অঞ্চলে অসাম্প্রদায়িক এবং মুক্তচিন্তার রাজনীতি বাধাগ্রস্ত হবে তা অনুমান করতে কারো কষ্ট হবে না। পাকিস্তান এই অঞ্চলে চীনের সহায়তায় একটি নতুন পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়। আর এরকম পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ যে খুব একটা বিচ্ছিন্ন থাকবে এমনটি মনে করছেন না বিশ্লেষকরা।

 

গত দুই বছর পাকিস্তানের সঙ্গে এক ধরনের দৃশ্যমান সম্পর্ক লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে দুই দফা ফোন করেছেন। পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন। ইত্যাদির মধ্য দিয়ে একটি সুসম্পর্ক আবহাওয়া তৈরি করতে চাইছেন ইমরান খান। কিন্তু বাস্তবে যেভাবে তালেবানদের পিছন থেকে মদদ দিয়েছেন ঠিক তেমনিভাবে বাংলাদেশেও বিএনপিকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে পাকিস্তান। বিশেষ করে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই, এমন খবর পাওয়া যাচ্ছে। কারণ পাকিস্তান যদি এই অঞ্চলে ভারতকে কোণঠাসা করতে চায়, ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে আবার উস্কে দিতে চায় তাহলে বাংলাদেশকে তার লাগবেই। আর এ কারণেই চীন-পাকিস্তান ঐক্যের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য আওয়ামী লীগ কখনো তাদের পছন্দের দল হবেনা।

 

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির অবস্থা অত্যন্ত নাজুক এবং কোণঠাসা। দলটির সাংগঠনিক শক্তি অত্যন্ত দুর্বল। দলের প্রধান নেতা খালেদা জিয়া একরকম রাজনীতি থেকে এক রকম নির্বাসনে আছেন। দ্বিতীয় প্রধান নেতা লন্ডনে পলাতক এবং তার রাজনৈতিক ইমেজ নেই বললেই চলে। এ রকম একটি জটিল পরিস্থিতিতে বিএনপিকে নিয়ে বেশি দূর এগোনো সম্ভব না। আবার আওয়ামী লীগকে দিয়ে এমন কিছু কাজ করানো যাবেনা যেটি আসলে পাকিস্তান এবং চীন চায়। যেমন: পাকিস্তানের প্রধান লক্ষ্য হল যে, বাংলাদেশে ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা করা কিন্তু যেটি আওয়ামী লীগ সরকারের নীতিগত অবস্থানের বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দায়িত্ব গ্রহণ করে বলেছেন যে, আওয়ামী লীগ সরকার কখনো বিচ্ছিন্নতাবাদীদেরকে বাংলাদেশের জমি ব্যবহার করতে দেবে না। আর এ কারণেই একটি গোপন রাজনৈতিক নীলনকশা চলছে, যে নীলনকশার প্রধান লক্ষ্য হলো বিএনপিকে শক্তিশালী করা, যেন এই অঞ্চলে একটি জঙ্গিবাদের এবং সন্ত্রাসবাদের লালনক্ষেত্রে পরিণত করা যায়। কারণ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় থাকবে ততক্ষণ পাকিস্তান এবং চীনের যে আকাঙ্ক্ষা, পুরো এলাকায় একটি উগ্র-মৌলবাদী পরিকাঠামো তৈরি করা সেটি বাস্তবায়ন হবে না।