ভরা কোর্ট রুমে অপরাধীকে ফাঁসির সাজা ঘোষণার পর বিচারক তাঁর পেনের নিবটা ভেঙে দিচ্ছেন- এই দৃশ্যটা আপনি নিশ্চই দেখেছেন সিনেমা বা সিরিয়ালে। বাস্তব জীবনে তো অনেকেরই এমন দৃশ্য দেখা হয়ে ওঠে না, তবে বাস্তবেও কিন্তু ঠিক ওই একই কাজ করেন যে কোন বিচারপতি। কিন্তু, প্রশ্ন হচ্ছে ফাঁসির সাজা ঘোষণার পর বিচারকরা পেনের নিব ভেঙে ফেলেন কেন? এর পিছনে কারণটা আসলে কী?
নিব ভেঙে ফেলার পিছনে নানা রকম দার্শনিক ব্যাখ্যা হয়। কিন্তু, এর পিছনে মূলত তিনটি কারণ রয়েছে। তবে বলা ভা্লো, তিন রকম ভাবনা থেকেই বিচারকরা এই কাজ করে থাকেন। সেই কারণগুলো এবার জেনে নেওয়া যাক-
১) কোনও একটি পেন দিয়ে একবার মৃত্যুদণ্ডের সাজা লিখে ফেলার পর বিচারকরা ওই পেন দিয়ে ভবিষ্যতে আর কোনও বিচারের কাজ করতে চান না কারণ ওই পেনটিকে (মূলত নিবটি যা দিয়ে লেখা হয়) 'অশুচি' বলে মনে করা হয়। আসলে কারও জীবন কেড়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তকে অশুভ ভাবা হয়।
২) আরেকটা ভাবনা হল, একবার ফাঁসির সাজা ঘোষিত হলে সেই রায়কে আর চ্যালেঞ্জ করা যায় না। তার প্রতীক হিসাবে ওই রায় লেখা হয়েছে য পেন (পেনের নিব) দিয়ে তাকে ভেঙে ফেলে ওই রায়কেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। একমাত্র উচ্চতর আদালত (নিম্নতর আদালত যদি রায় দিয়ে থাকে) কেবল সেই রায়কে পুনর্বিচার করতে পারে।
৩) আবার এরকমও মনে করা হয় যে, বিচারক 'অপরাধ বোধ' থেকে পেনের নিব ভেঙে ফেলেন। কারণ, প্রান নেওয়ার ক্ষমতা শুধু ঈশ্বরেরই আছে বলে মনে করা হয়। তাই বিচারক পেনের নিব ভাঙার মধ্যে দিয়ে বুঝিয়ে দেন যে তিনি শুধু তাঁর পেশাদারি দায়বদ্ধতাটুকুই সারলেন।