ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শনিবার, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

জঙ্গিরা কি আবার শক্তি সঞ্চয় করছে: নেপথ্যে কী?

ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২১

জঙ্গিরা কি আবার শক্তি সঞ্চয় করছে: নেপথ্যে কী?

২০১৬ সালে জুলাই মাসে ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলায় দেশি-বিদেশি নাগরিকসহ ২২ জন নিহত হওয়ার পর জঙ্গিবিরোধী অভিযানে ওই বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধারাবাহিক সফল অভিযানে ৩৮ জন নব্য জেএমবি নিহত হয়৷ অনেকে গ্রেফতার হন। ওই সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দাবী করে আসছিল বাংলাদেশে জঙ্গিদের মেরুদণ্ড ভেঙ্গে গেছে৷ নতুন হামলা করার মতশক্তি নাই তাদের৷ দীর্ঘ চাপের মুখে থাকলেও জঙ্গিরা এখন প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে৷ ডিমেতালে জঙ্গিরা আবার শক্তি সঞ্চয় করছে এমনটাই এর আগে বিভিন্ন গনমাধ্যমে এমনটাই বার্তা দিয়ে আসছিল।

 

গত কয়েকদিন ধরে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আবার জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অপারেশন শুরু করেছে।

 

`সম্প্রতি শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ময়মনসিংহে ডাকাতির প্রস্তুতির সময় চারজন জঙ্গি আটকের পর তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজ রাজধানীর বসিলায় জঙ্গি অভিযান শুরু করা হয়। র‌্যাব বলছে ময়মনসিংহে যে শীর্ষ নেতার কথা বলেছিলাম, উনিই এখানে বসবাস করছিলেন। তাঁকে ধরতে জামালপুর, রাজশাহীতে অভিযান শুরু হয়। আজ গভীর রাত থেকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বসিলা ব্রিজের পাশে একটি হাউজিং সোসাইটিতে অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাব। এবং বাড়িটিতে অভিযান চালিয়ে শীর্ষস্থানীয় জঙ্গিনেতা আশরাফুজ্জামান থেকে আটক করা হয় এরপর ওই বাসাতেই ডগ স্কোয়াড এবং বম্ব ডিসপোজেবল ইউনিট অভিযান চালায়।

 

জানা গেছে এর আগে র‌্যাব ময়মনসিংহ থেকে জেএমবির চার সদস্যকে আটক করে এবং তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করার মাধ্যমে তারা বসিলা জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পায়। গ্রেপ্তারকৃতরা শুধু ময়মনসিংহ নয়, সাম্প্রতিক সময়ে জামালপুর রাজশাহীসহ বিভিন্ন জায়গায় জঙ্গিদের নতুন করে সংঘটিত হবার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। যদিও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বলছে যে, বাংলাদেশে জঙ্গিদের এখন বড় ধরনের সহিংসতা করার কোন ক্ষমতা নাই এবং তারা যখন পরিকল্পনা গ্রহণ করছে, তখনই তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।

 

আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা এটাও বলছেন যে জঙ্গিদের চেয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা একধাপ এগিয়ে আছে। কাজেই যখনই তারা কোনো পরিকল্পনা করছেন, তখনই তাদেরকে আটক করা সম্ভব হচ্ছে।

 

তবে একথা সত্যি যে বেশ কিছুদিন নিরব থাকার পর সাম্প্রতিক সময়ে আবার জঙ্গিরা সরব হয়েছে। আর এটিই কেন হচ্ছে, কেমন করে হচ্ছে এটি নিয়ে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থারা এখন কাজ করছেন বলেও জানা গেছে। একাধিক সূত্র মনে করছে যে জঙ্গীদের সক্রিয় হবার পিছনে কিছু বাস্তব কারণ রয়েছে।

 

প্রথমত, আফগানিস্তানে তালেবানদের উত্থান। আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক সময়ে তালেবানদের উত্থান এদেশের জঙ্গিবাদকে উৎসাহিত করেছে। বিশেষ করে যারা তালেবানদের সহায়তা করার জন্য বিভিন্ন সময় আফগানিস্তান গিয়েছিলেন, তারাই বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠনগুলো পরিচালনা করেন। তারা এখন ‘আফগানিস্থানে বিজয়ের পর বাংলাদেশেও তারা কিছু একটা করার পরিকল্পনা নিচ্ছে।

 

দ্বিতীয়ত, যুদ্ধাপরাধীদের পৃষ্ঠপোষকতা। দেশে-বিদেশে যে যুদ্ধাপরাধী গোষ্ঠী আছে, তারাও এখন জঙ্গিদেরকে উস্কানি দিচ্ছে। কয়েকদিন আগেই জামাতের নয়জন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে জঙ্গিদেরকে মদদ দেওয়া এবং সরকারবিরোধী নাশকতার অভিযোগ আনা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছেন দুটি ঘটনা একই সূত্রে গাঁথা, অর্থাৎ স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীরা এখন জঙ্গিবাদের মাধ্যমে নিজেদেরকে সংগঠিত করতে চাইছেন।

 

তৃতীয়ত, বিএনপি এবং মূল ধারার ভূমিকা। বিএনপি এখন নতুন করে আন্দোলন করতে চাচ্ছে কিন্তু নিজেদের আন্দোলন করার শক্তি এবং সাহস তাদের নেই। আর এ কারণে তারা জঙ্গিদেরকে সামনে রেখে একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে, যে পরিস্থিতি তৈরি হলে তারা তারা রাজপথে নামতে পারবে। জঙ্গিরা যদি সক্রিয় হয়, সেক্ষেত্রে সরকারও সেদিকেই নজর দেবে। ফলে বিএনপি সহজে মাঠে নামতে পারবে না। ইত্যাদি নানা হিসেব-নিকেষের মাধ্যমেই জঙ্গীরা আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে বিভিন্ন সূত্র দাবি করছে।