ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, অক্টোবর ১৮, ২০২৪ |

EN

এসব ষড়যন্ত্র কিসের আলামত?

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: বুধবার, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২১

এসব ষড়যন্ত্র কিসের আলামত?

দেশে যখন করোনা মহামারি, অর্থনীতিকে সচল রাখার তীব্র সংগ্রাম, তখন যে কিছু কিছু মহল গভীর ষড়যন্ত্রে নেমেছে। পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল এবং অস্থির করার চেষ্টা করছে। এরকম ষড়যন্ত্রের একটি দৃশ্যমান ঘটনা হলো গত সোমবার। ৮ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা সারাদেশকে হতবাক করেছে। এই মামলায় পরিকল্পিত ভাবে দেশের অন্যতম প্রধান শিল্প পরিবার বসুন্ধরা গ্রুপকে টার্গেট করা হয়েছে। আইনজ্ঞরা বলছেন, এটি আদতে কোন হত্যা বা ধর্ষণের মামলা নয় বরং বসুন্ধরা গ্রুপকে ধ্বংসের একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। এই মামলায় দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানকে আসামী করা হয়েছে। মুনিয়ার ঘটনার সঙ্গে যার কোন ধরনের সংশ্রব বা সংশ্লিষ্টতা নেই। যিনি একজন সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যবসায়ী ব্যক্তিত্ব। এই উদ্দেশ্য মূলক মামলায় মোট আটজন আসামীর মধ্যে ৫ জনই নারী। ৫ নারী কি মুনিয়াকে ধর্ষণ করেছে?

 

গুলশানের একটি ফ্লাটে গত ১৯ এপ্রিল মুনিয়া আত্মহত্যা করেন। তার মৃত্যুর পর তার বড় বোন নুসরাত তানিয়া আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগে একটি মামলা করেন গুলশান থানায়। প্রশ্ন উঠেছে, মুনিয়ার মৃত্যুর পরপরই নুসরাত তানিয়া এই মৃত্যুকে আত্মহত্যা বললেন, আবার এখন তিনিই এটাকে হত্যাকাণ্ড বলছেন। কেন? এর পেছনে কি ব্লাকমেইলিং এর উদ্দেশ্য আছে?

 

আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলায় নুসরাত শুধু মাত্র বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অভিযুক্ত করেছিলেন। এখন তিনি ঘটনার সাথে সম্পর্কহীন আরো ব্যক্তিদের জড়ালেন। এর পেছনে উদ্দেশ্য বুঝতে অসুবিধা হবার কথা নয়। উদ্দেশ্য হলো বসুন্ধরা গ্রুপকে ক্ষতিগ্রস্ত করা, এই গ্রুপের সুনাম হানি করা। এ সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যায় মুনিয়া এবং শারুনের কথোপকথন থেকে। এদের দুই জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। মুনিয়ার সঙ্গে শারুনের হোয়াটসআপ চ্যাটে শারুন লিখেছিল ‘তুমি কিছু করলে বসুন্ধরা গ্রুপ শেষ হয়ে যাবে। তাহলে কি বসুন্ধরা গ্রুপকে শেষ করতেই এই সাজানো মামলা?

 

আমরা লক্ষ্য করছি যে, গত কিছুদিন ধরেই সাইবার যুদ্ধে বাংলাদেশ। যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডা থেকে যুদ্ধাপরাধীদের টাকায় কিছু ব্যক্তি এবং গোষ্ঠী বর্তমান সরকার এবং রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নোংরা, কুৎসিত এবং ভয়ংকর অপপ্রচারে নেমেছে। তারা আজগুবি সব কল্পকাহিনী ছড়িয়ে সরকার সম্পর্কে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। এই গোষ্ঠী মুনিয়ার ইস্যুকে লুফে নেয়। আবার গতকালের মামলায় নুসরাতের আইনজীবী হলেন বিতর্কিত আইনজীবী এম সরোয়ার হোসেন। যিনি স্বাধীনতা বিরোধী এবং যুদ্ধাপরাধী গোষ্ঠীর আইনজীবী। তার বিরুদ্ধে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় যুক্ত থাকারও অভিযোগ রয়েছে। তাহলে এই মামলা কি রাষ্ট্রদ্রোহী, যুদ্ধাপরাধী গোষ্ঠী এবং লন্ডনে পলাতক গোষ্ঠীর পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। সরকারের বিরুদ্ধেই এটি আরেকটি চক্রান্ত?

 

কারণ বসুন্ধরা গ্রুপের সঙ্গে প্রায় ৫০ লাখ মানুষের রুটিরুজির সম্পর্ক রয়েছে। দেশের প্রায় দুই কোটি মানুষ এই শিল্প গ্রুপের উপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল। এধরনের কুৎসিত, আপত্তিকর এবং ভিত্তিহীন অভিযোগে যদি এই গ্রুপটি ব্যবসা গুটিয়ে ফেলে তাহলে তার বিরূপ প্রভাব অর্থনীতিতে পরবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে সরকার, রাষ্ট্র।

 

শুধু বসুন্ধরা গ্রুপ নয়, এধরনের খামখেয়ালী পনা মামলা এবং মিথ্যাচার অন্যান্য বড় শিল্প উদ্যোক্তাদেরও আতংকে ফেলবে। তারাও ব্যবসা গুটিয়ে নেবে। করোনা সংকটের এই সময়ে এটি দেশের অর্থনীতির উপর ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

 

আমরা দেখেছি ওয়ান ইলেভেনের আগে প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টার ব্যবসায়ী এবং রাজনীতিবিদদের চরিত্র হননের খেলায় মেতেছিল। এটি ছিলো ষড়যন্ত্রের একটি অংশ। এর পরপরই এসব ভুয়া এবং সাংবাদিকতার রীতিনীতি বিবর্জিত রিপোর্ট দিয়েই ওয়ান ইলেভেন সরকার ক্ষমতা দখল করেছিল। সেরকম একটি পরিস্থিতি তৈরি করার জন্যই কি এই মামলা? মুনিয়ার মৃত্যুর পর পুলিশ তিনমাস ধরে তদন্ত করেছে। ডাক্তাররা ময়না তদন্ত করেছেন? এরপর দেখা গেছে এটি আত্মহত্যা। একটি আত্মহত্যা কে হত্যাকাণ্ড বানানোর এই মহা ষড়যন্ত্রে নুসরাত একটি পুতুল। তার পেছনে যারা রয়েছে তারা রাষ্ট্র এবং সরকারের জন্য বিপদজনক। এদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় না আনলে, গণতন্ত্র ও আইনের শাসনই সংকটে পড়বে।