ফ্রিডম বাংলা নিউজ

রবিবার, এপ্রিল ২৮, ২০২৪ |

EN

স্কুল আছে রাস্তা নেই, বিপাকে শিক্ষার্থীরা

জেলা প্রতিনিধি | আপডেট: রবিবার, সেপ্টেম্বর ৫, ২০২১

স্কুল আছে রাস্তা নেই, বিপাকে শিক্ষার্থীরা
নওগাঁর পত্নীতলায় স্কুল আছে কিন্তু যাতায়াতের কোনো রাস্তা নেই। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে উপজেলার নজিপুর ইউনিয়নের নাদৌড় গ্রামের শেখ রাসেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের। 

জানা গেছে, বিদ্যালয়টি ২০১২ সালে স্থাপিত হয়। কিন্তু প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে কোমলমতি শিশুদের যাতায়াতের জন্য এখন পর্যন্ত কোনো রাস্তা তৈরি হয়নি। গ্রামের সরু আইল যাতায়াতের একমাত্র ভরসা। বিদ্যালয়ের তিন পাশে ধান ক্ষেত এবং এর পাশেই রয়েছে একটি পুকুর আর সেই পুকুরের পাশ দিয়ে সরু চিকন আইল রাস্তা সেটাও পুকুর গর্ভে বিলীনের পথে। বিদ্যালয়ে প্রবেশে রাস্তা না থাকায় শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এমন অবস্থার সৃষ্টি হলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। একটি কালভার্ট থাকলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় এ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। বর্ষা মৌসুমে পুকুরটি যখন পানিতে ভরে যায় তখন কোন উপায় থাকে না। মাঝে মধ্যেই ঘটে দুর্ঘটনা। সরু রাস্তা হওয়ার কারণে ওই বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা অনেক সময় পুকুরে পড়ে গিয়ে কাপড়, বই-পত্র ভিজিয়ে ফেলার ঘটনাও ঘটেছে বহুবার। এমতাবস্থায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও বছরের পর বছর ধরে সেই ভোগান্তি নিয়েই চলে আসছে শিক্ষালাভের প্রক্রিয়া।

বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণীর ছাত্র এখলাসের মা শিউলি বেগম বলেন, রাস্তা না-থাকার কারণে বাচ্চারা একা একা স্কুলে যেতে চায় না। বাচ্চাকে স্কুলে পাঠিয়ে দুঃশ্চিন্তায় থাকি পুকুরে পড়ে যায় কি না এজন্য স্কুলে এসে বসে থাকতে হয়। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবু আফতাব বলেন, রাস্তা না থাকায় অনেক ভোগান্তি হয়। স্কুলে ছাত্রছাত্রী আসতে চায় না। অভিভাবকরা বাচ্চাদের দিতে চান না। ইতিমধ্যে অনেক ছাত্র-ছাত্রীই অন্য স্কুলে চলে গেছে। বর্ষা মৌসুমে আরো বেশী সমস্যা হয় জমির আইল দিয়ে আসতে গিয়ে পাশে পুকুরে পরে বইখাতা ভিজে যাওয়ারও ঘটনা ঘটেছে। অনেক শিক্ষক ও পোষ্টিং নিতে চান না। শতাধিক শিক্ষার্থী নিয়ে বিদ্যালয় শুরু হলেও এখন ৬১জন আছে। 
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বিমল বলেন, গ্রামীণ পাকা সড়ক থেকে বিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় অর্ধ কিলোমিটার রাস্তাটি না থাকার কারণে ব্যহত হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থা। শিক্ষক শিক্ষার্থীরা এমন দুর্ভোগ পোহালেও বারবার জানানো হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নিচ্ছেন না। 

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সাদেক উদ্দীন জানান, রাস্তার বিষয়টি তাদের মাথায় আছে, এমপি মহোদয়কে বলে বরাদ্দের ব্যবস্থা করা হবে। 

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল গাফ্ফার বলেন, বিষয়টি তিনি জানেন। এর আগে একজন সুহৃদ ব্যক্তি ওই বিদ্যালয়ের জন্য জমি দান করেছেন। পরবর্তীতে সেখানে রাস্তার জন্য কেউ জমি দিতে না চাওয়ায় কাজটি থমকে আছে। জমি দিতে রাজি হলে তিনি ব্যক্তিগত খরচে হলেও রাস্তাটি তৈরী করে দিবেন বলে আশ্বস্ত করেন। 

স্থানীয় সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকার জানান, সরকার স্কুল কানেকটিং রোড নামক একটি উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। দেশের যেসব স্কুলে এক কিলোমিটার এর কম দূরত্বের এমন রাস্তার প্রস্তাবনা রয়েছে, পর্যায়ক্রমে সবগুলোই এ প্রকল্পের আওতায় আসবে।