ফ্রিডম বাংলা নিউজ

রবিবার, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪ |

EN

ফেরিস্বল্পতা: ঈদযাত্রায় মহাদুর্ভোগের আশঙ্কা

মো: লিটন খান,শিবচর, মাদারীপুর | আপডেট: শুক্রবার, এপ্রিল ২২, ২০২২

ফেরিস্বল্পতা: ঈদযাত্রায় মহাদুর্ভোগের আশঙ্কা
ঈদে দক্ষিণাঞ্চলের ঘরমুখো মানুষকে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে ভোগান্তি ফেরির সংখ্যা কম থাকা এবং শুধুমাত্র সকাল-সন্ধ্যা চলাচল করায় এবার ঈদে ঘরে ফিরতে ভোগান্তি পোহাতে হবে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। গত বর্ষা মৌসুম থেকে টানা ভোগান্তির শিকার এ নৌপথে চলাচলকারী যাত্রীরা। ঈদে ফেরির সংখ্যা বাড়ানো এবং ২৪ ঘণ্টা ফেরি চালু রাখার দাবি জানিয়েছেন নৌরুটে চলাচলকারী যাত্রীরা।

বিআইডব্লিউটিসি'র বাংলাবাজার ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দীন আহমেদ বলেছেন, ঈদে যাত্রীদের ভোগান্তির কথা ভেবে কর্তৃপক্ষকে ফেরির সার্ভিস বাড়ানোর বিষয়টি জানানো হয়েছে।

বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা গেছে, ঈদ সামনে রেখে প্রতিবছরই বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে যাত্রীদের ঢল নামে। লঞ্চ, স্পিডবোট এবং ফেরিতে থাকে উপচে পড়া ভিড়। ঈদ মৌসুমে নৌ-রুটে লঞ্চ ও স্পিডবোটের পাশাপাশি ফেরিতেও যানবাহন ও যাত্রীদের প্রচুর ভিড় থাকে।

বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে বর্তমানে শুধু দিনের বেলায় ফেরি সার্ভিস চালু রয়েছে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রো রোসহ মাত্র ৫টি ফেরি চলাচল করে। এ ছাড়া মাঝিকান্দি-শিমুলিয়া রুটে চলে ২টি ফেরি। দুই নৌপথে মাত্র ৭টি ফেরি দিনের বেলা চলাচল করছে। পদ্মা সেতুর পিলারে ফেরির ধাক্কা লাগার ঘটনার পর প্রায় আট মাস ধরে এই নৌপথে ফেরি চলাচলে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। দীর্ঘদিন পুরোপুরি বন্ধ থাকার পর কয়েক মাস ধরে সীমিতসংখ্যক ফেরি চলছে এই নৌপথে। গাড়ির চাপ বৃদ্ধি পেলে বাংলাবাজার ঘাট এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। টার্মিনালে সিরিয়ালে থাকতে হয় যানবাহনগুলোকে। তবে নৌপথে ব্যক্তিগত যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স, রোগীবাহী গাড়িসহ ছোট যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। পণ্যবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাস পারাপার বন্ধ এ নৌপথে।

বিআইডব্লিউটিএর বাংলাবাজার লঞ্চঘাট সূত্রে জানা গেছে, নৌপথে ৮৭টি লঞ্চ চলাচল করছে। ঈদে যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘবে লঞ্চগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ধারণক্ষমতা মেনেই লঞ্চে যাত্রী পারাপার করা হবে।

আলাপ করলে যাত্রীরা জানান, নৌপথে ফেরি পারাপার হতে বাংলাবাজার ঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। ফেরির সংখ্যা কম এবং সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ফেরি চলাচল করায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক যানবাহন পার হতে পারছে না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘাটে বসে থেকে বিকেল হয়ে গেলে বিকল্প পথে ছুটতে হয় ব্যক্তিগত গাড়ির যাত্রীদের। ফলে যাত্রীদের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।

গাড়িচালক মো. ইদ্রিস বলেন, ঘাটে গাড়ির চাপ কম থাকলে দ্রুতই ফেরিতে ওঠা যায়। আর ফেরিতে উঠতে পারলে পদ্মা পার হতে বেশি সময় লাগে না। কিন্তু ফেরিতে উঠতে পারাটাই চ্যালেঞ্জ। ঈদে এমনিতেই যাত্রীর চাপ বাড়ে। এ সময় ফেরির সংখ্যা ও চলাচলের সময় না বাড়ালে ভোগান্তি বাড়বে।

অ্যাম্বুলেন্স চালক মো. জহির জানান, ঘাটে রোগী পারাপারের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার রয়েছে। তবে ঈদে ফেরি না বাড়ালে যাত্রীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হবে। কর্তৃপক্ষের কাছে ফেরির সংখ্যাসহ সময় বাড়ানোর দাবি জানান তিনি।

লঞ্চে পার হওয়া যাত্রী মো. আজাদ বলেন, পদ্মা পার হতে লঞ্চে বেশি সময় লাগে না। তবে বাতাস থাকলে মাঝপদ্মায় বেশ ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়। ঈদের আগে লঞ্চে যেন গাদাগাদি করে পার না করা হয়, সেদিকে প্রশাসনের নজর রাখা জরুরি।

যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘবে বিআইডব্লিউটিএ কী ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে তা এখনো নিশ্চিত নয়।

বিআইডব্লিউটিএর মেরিন কর্মকর্তা (শিমুলিয়া ঘাট) আহমদ আলী বলেন, বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে ফেরি বাড়ানোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এখন পর্যন্ত আগের নিয়ম অনুযায়ী ফেরি চলাচল করছে।

বিআইডব্লিউটিসি'র বাংলাবাজার ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দীন আহমেদ জানান, ঈদ সামনে রেখে কর্তৃপক্ষকে ফেরির সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়টি জানানো হয়েছে। বর্তমানে বাংলাবাজার ও মাঝিকান্দিতে দিনের বেলা ৭টি ফেরি চলছে। সন্ধ্যার পর বাংলাবাজার পথে বন্ধ থাকলেও মাঝিকান্দি পথে ফেরি চালু থাকে। তবে মাঝিকান্দি রুটে গাড়ি চলাচলের সড়ক তেমন উন্নত নয়। ফলে সড়কেই গাড়ি আটকে থাকে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ঈদের আগে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে।