ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শনিবার, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

তিন কারনে বিএনপিতে চাপা উল্লাস

ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: মঙ্গলবার, আগস্ট ৩১, ২০২১

তিন কারনে বিএনপিতে চাপা উল্লাস

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের পর একটি ধ্বংসস্তূপের মধ্যে পতিত হয়েছিল বিএনপি। টিকবে কি টিকবে না নিয়ে নানামুখী আলোচনা হচ্ছিল খোদ বিএনপি` মধ্যেই। এমনকি বিএনপি` স্থায়ী কমিটির একাধিক নেতা বিএনপি` নেতৃত্বে খোলনলচে পাল্টে ফেলার দাবি তুলেছিলেন। তারা বলছিলেন যে, এই অবস্থায় বিএনপি বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এভাবেই দলটি চলছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই গত এক মাসে বিএনপি যেন চাঙ্গা হয়েছে।


বিএনপি সজীব সতেজ হওয়ার পেছনে তাদের দলের কোনো অবদান নেই। তাদের সাংগঠনিক কোনো দক্ষতাও নেই। বরং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কিছু কিছু নেতার কথাবার্তার কারণে বিএনপি এখন আবার আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে। কোনো রকম কাজ না করেই বিএনপি নেতারা এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। আবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আর বিএনপি নেতাদের বক্তব্য পাশাপাশি উপস্থাপিত হচ্ছে গণমাধ্যমে। বিএনপিতে নিয়ে চাপা উল্লাস। একাধিক ইস্যুতে এখন বিএনপি` মধ্যে চাঙ্গা ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে গত কিছুদিন ধরে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের ভূমিকা নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাদের যে সাঁড়াশি আক্রমণ সেই আক্রমণের ফলে বিএনপি লাভবান হচ্ছে। বিএনপি নেতারাই বলছেন, একাধিক ভাবে লাভবান হচ্ছে বিএনপি।

 

আওয়ামী লীগ মনে করছে বিএনপি তার প্রধান প্রতিপক্ষ:

যেভাবে আওয়ামী লীগ শোকের মাস পালন করেছে তাতে সুস্পষ্টভাবে লক্ষণীয় যে আওয়ামী লীগ টার্গেট করেছে বিএনপিকে। জিয়াউর রহমানের ভূমিকা, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় খালেদা জিয়া এবং তারেক জিয়ার ভূমিকা, বঙ্গবন্ধুর খুনিদেরকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার জন্য জিয়া, খালেদা জিয়ার ভূমিকা ইত্যাদি আলোচনায় আসছে এবং সর্বশেষ এই বিতর্কের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জিয়ার কবর। এই সবকিছুর ফলে বিএনপি একটি সুযোগ পেয়েছে। রাজনীতির মাঠে ইস্যুহীন, প্রায় কর্মতৎপরতাহীন বেকার বিএনপি এখন সরব হয়েছে। বিএনপি এখন এসব ইস্যু নিয়ে কথা বলছে। সাধারণ মানুষ যারা বিএনপিকে ভুলতে বসেছিল তারা বিএনপিকে নতুন করে চিনছে।

 

বিএনপি নেতাকর্মীরা চাঙ্গা হয়েছে:

যখন বিএনপি আক্রান্ত হচ্ছে, সমালোচিত হচ্ছে তখন নেতাকর্মীদের নিয়ে বিএনপি সংঘটিত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। সব সময় দেখা যায় যে, যেকোনো রাজনৈতিক দল যখন সংকটে পড়ে তখন নেতাকর্মীরা নিজেদের মধ্যে বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়। বিএনপি` ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা তাই হয়েছে। এখন জিয়ার কবর কিংবা জিয়া মুক্তিযুদ্ধা ছিল কিনা এই সমস্ত বিতর্কে বিএনপি সাংগঠনিকভাবে আগের চেয়ে শক্তিশালী হচ্ছে।

 

বিএনপির সংকটগুলো আড়ালে চলে যাচ্ছে:

বিএনপির মধ্যে যে নজিরবিহীন কমিটি বাণিজ্য, পদ বাণিজ্য সে সমস্ত বিতর্কে যখন বিএনপি লন্ডভন্ড অবস্থায় তখন জিয়ার ভূমিকা নিয়ে বিতর্কের ফলে এই সমস্ত বিতর্কগুলো ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে। ফলে বিএনপি নেতারাও এখন অনেক স্বস্তিতে আছেন। বিএনপি` একজন নেতা বলেছেন যে, যদি সরকার বিএনপিকে এভাবে আক্রমণ না করতো তাহলে পরে বিএনপি` ভাঙন ছিল একটি সময়ের ব্যাপার মাত্র। কারণ ঢাকা মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণের কমিটিসহ বিভিন্ন এলাকার কমিটির দিয়ে যে পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল তাতে বিএনপি` অনেক নেতাই দল ত্যাগ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এমনকি বিএনপিতে একটি গণপদত্যাগের কথাও শোনা যাচ্ছিল। এর আগে বিএনপির সিনিয়র নেতা, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছিল। সেটি নিয়েও তিনি এক রকমের অবসরে গিয়েছিলেন। বিএনপি` একটি বড় অংশ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে নিজেদেরকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে বিএনপি যেন সজীব সতেজ হচ্ছে। মৃতপ্রায় বিএনপিকে বাঁচিয়ে তোলা হচ্ছে আওয়ামী লীগের কিছু নেতার সমালোচনায়।

 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে, বিএনপি` অবস্থা এখন এতই নাজুক যে তারা কোনোভাবে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ নয়। অথচ আওয়ামী লীগ সব আক্রমণের মূল লক্ষ্যবস্তু বিএনপিকে নির্ধারণ করে বিএনপিকেই যেন চাঙ্গা করছে। আর যার ফলে বিএনপি` মধ্যে দেখা যাচ্ছে চাপা উত্তেজনা।

সৌজন্যে: বাংলাইনসাইডার