ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শনিবার, জুলাই ৬, ২০২৪ |

EN

ছাত্রলীগের সম্মেলনের শীর্ষ নেতৃত্বে অভিজ্ঞদের উপরই ভরসা

সিয়াম মাহমুদ, বিশেষ প্রতিনিধি | আপডেট: বুধবার, নভেম্বর ৩০, ২০২২

ছাত্রলীগের সম্মেলনের শীর্ষ নেতৃত্বে অভিজ্ঞদের উপরই ভরসা
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বহুল প্রতীক্ষিত ৩০ তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৬ ডিসেম্বর। আর মাত্র সপ্তাহ খানেক পরই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব আসছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্বে কে বা কারা আসবেন তা চূড়ান্ত করার একমাত্র এখতিয়ার সংগঠনের সর্বোচ্চ অভিভাবক শেখ হাসিনার। সংগঠনটির একটি নির্দিষ্ট লিখিত গঠনতন্ত্র থাকলেও, সংগঠনটির আরও একটি গঠনতন্ত্র আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা নিজেই। তাই, সংগঠনের গঠনতন্ত্র ও নিয়মনীতির মাধ্যমে যাচাই-বাছাই এর পরেও স্বয়ং সভানেত্রীর পছন্দের উপর নির্ভর করছে ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব। 

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ছাত্রলীগের এবার নেতৃত্ব নির্বাচনকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরাসরি নেতা বাছাইয়ে নেতৃত্ব দিবেন।

ছাত্রলীগের সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে উচ্ছ্বাস, ফিরে এসেছে প্রাণচাঞ্চল্য। আগামীর নেতৃত্বে কারা আসছেন তারই প্রতীক্ষায় প্রহর গুনছেন কর্মীরা।

ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বের ক্ষেত্রে যে বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে সেটি হলো, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ছাত্রদল ও শিবিরের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রুখে দেয়ার মতো সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী ও লড়াকু নেতাদের বিশেষ বিবেচনা করা হবে। এক্ষেত্রে ১৩ সালে ক্যাম্পাসে ভূমিকা, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন, হেফাজত ইস্যু, কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং নিরাপদ সড়ক আন্দোলনসহ বিভিন্ন সময়ে জামায়াত-বিএনপির করা ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় যেসকল নেতা-কর্মী অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে, তাদের বিষয়ে সুদৃষ্টি রয়েছে সংগঠনের সর্বোচ্চ অভিভাবক শেখ হাসিনার।

একাধিক সূত্রের মাধ্যমে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের আসন্ন ৩০তম জাতীয় সম্মলনের শীর্ষ নেতৃত্বে রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ও সাংগঠনিকভাবে পরিপক্বদের উপরই ভরসা রাখতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।
 
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগামী ৩০ তম সম্মেলনে সাংগঠনিকভাবে পরিপক্ব এমন শীর্ষ নেতৃত্বের দৌঁড়ে সবচেয়ে আলোচিত নামগুলোর তালিকায় রয়েছে সোহান খান, ইয়াজ আল রিয়াদ, মাজহারুল ইসলাম শামীম, সৈয়দ আরিফ হোসেন, কামাল খান, আরিফুজ্জামান আল ইমরান, মাহবুব খান সহ আরও অনেকে।


সোহান খান 
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের বারবার নির্বাচিত সহ সভাপতি মোঃ সোহান খান। ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলায় তার বাড়ি। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক উপ তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ছিলেন তিনি। পারিবারিকভাবে আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান তিনি। গণজাগরণ মঞ্চ, ১৪ সালের জাতীয় নির্বাচন, কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনেও তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন। তাছাড়া, ছাত্রলীগের গঠনতান্ত্রিক নিয়মনীতি পালনের ব্যাপারে সবসময় সোচ্চার ছিলেন তিনি। এরজন্য পর্যায়ক্রমে শোভন-রাব্বানী ও জয়-লেখক পরিষদের দুই কমিটির কাছেই তিনি ছিলেন অপ্রিয়। তবে, ৩০ তম সম্মেলন দাবিতে জোরালো ভূমিকা রয়েছে তার।


ইয়াজ আল রিয়াদ 
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বর্তমান সহ সভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদ। বরিশাল বিভাগের ভোলা জেলায় তার বাড়ি। তিনি সাবেক ত্রাণ ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। পারিবারিকভাবে বিএনপি-জামায়াতের নির্যাতনের শিকার ইয়াজ আল রিয়াদ সব আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ছিলেন ছাত্রলীগের এই নেতা। ২০১৫ সালে হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন সময়ে ঢাবি ক্যাম্পাস থেকে ছাত্রদল নেতাকে ককটেল হাতে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দিয়ে বেশ সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে প্রশংসিত হয়েছিলেন তিনি। বর্তমান ছাত্রলীগের মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির শীর্ষ নেতৃত্বের অগঠনতান্ত্রিক কার্যকলাপের সমালোচনা করা ও ৩০ তম সম্মেলন দাবিতে জোরালো ভূমিকা রয়েছে তার।


মাজহারুল ইসলাম শামীম
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বর্তমান সহ সভাপতি মাজহারুল ইসলাম শামীম। চট্টগ্রাম বিভাগের চাঁদপুর জেলায় তার বাড়ি। তিনি ছাত্রলীগের সাবেক প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক ও উপ ত্রাণ ও দূর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। ছাত্রলীগের গঠনতান্ত্রিক নিয়মনীতির বরাবরই সোচ্চার ছিলেন তিনি। 


কামাল খান 
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সহ সভাপতি কামাল খান। বৃহত্তর ফরিদপুরের মাদারীপুর জেলায় তার বাড়ি। মাস্টারদা সূর্য সেন হল ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতা ১২-১৩ সালে ঢাবি ক্যাম্পাসে ছাত্রদল-শিবিরের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের পোগ্রামে সক্রিয় ছিলেন। এরপর থেকে ছাত্রলীগের পরবর্তী সকল কর্মসূচিতে সরব উপস্থিতি ছিলো তার। 


ইমরুল হাসান নিশু
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সহ সভাপতি ইমরুল হাসান নিশু। বৃহত্তর ফরিদপুরের মাদারীপুর জেলায় তার বাড়ি। বিভিন্ন সময়ে ছাত্রলীগের ভেতরে ঘটে যাওয়া অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে সোচ্চার ছিলেন তিনি। 


সৈয়দ আরিফ হোসেন
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বর্তমান সহ সভাপতি সৈয়দ আরিফ হোসেন। বরিশাল জেলায় বাড়ি তার। তিনি কবি জসিম উদ্দিন হল, ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। হল সভাপতি থাকাকালীন সময়ে সাংগঠনিক তৎপরতায় বেশ আলোচনায় ছিলেন তিনি। বিভিন্ন সময়ে ছাত্রলীগের ভেতরে ঘটে যাওয়া অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে সোচ্চার ছিলেন তিনি। 


আরিফুজ্জামান আল ইমরান
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের বর্তমান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান আল ইমরান। বরিশাল বিভাগের বরগুনা উপজেলার পাথরঘাটা উপজেলায় তার বাড়ি। তিনি ছাত্রলীগের উপ আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক ও মহসিন হল, ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি ছিলেন। ২০১৩ সালে ছাত্রদল-শিবিরের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের কর্মসূচি, ১৪ সালের জাতীয় নির্বাচন, কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে তিনি সামনের সারিতেই ছিলেন। 


মাহবুব খান 
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের বর্তমান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব খান। সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলায় তার বাড়ি। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ছিলেন। সংগঠনের গঠনতন্ত্র মেনে ও মুজিবাদর্শে বিশ্বাসী কাজ করে যাওয়াসহ ক্যাম্পাস থেকে ছাত্রদলের নেতাদেরকে স্বশরীরে প্রতিহত করে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। এছাড়াও, বিভিন্ন সময়ে ছাত্রলীগের ভেতরে ঘটে যাওয়া অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় বেশ আলোচনায় রয়েছেন তিনি। এমনকি ৩০তম সম্মেলন দাবিতে জোরালো ভূমিকা রয়েছে তার। 


মুজাহিদুল ইসলাম সোহাগ
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম সোহাগ। ময়মনসিংহ বিভাগের শেরপুর জেলায় তার বাড়ি।  তিনি ছাত্রলীগের সাবেক উপ পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। মুহসিন হলের সাবেক এই নেতা গণজাগরণ মঞ্চ থেকে শুরু করে ছাত্রলীগের আর্দশিক ও গঠনতান্ত্রিক নিয়মনীতি মেনে দলীয় কর্মসূচিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। এছাড়া সর্বশেষ কোটা সংস্কার আন্দোলন ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনসহ ধর্মীয় উগ্রতার বিরুদ্ধে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেছেন। 


শামীম পারভেজ 
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক শামীম পারভেজ। ঢাকা বিভাগের নরসিংদী জেলায় তার বাড়ি। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সহ সম্পাদক। 

আল আমীন সিদ্দিক সুজন
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক আল আমীন সিদ্দিক সুজন। উত্তরবঙ্গের নীলফামারী জেলায় তার বাড়ি। তিনি শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন। 


হাসানুর রহমান হাসু 
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের উপ সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক হাসানুর রহমান হাসু। উত্তরবঙ্গের গাইবান্ধা জেলায় বাড়ি তার। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি ছিলেন।