ঝালকাঠি সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়নের দুটি পুরোনো আয়রন ব্রীজের মালামাল জব্দ করেছে সদর থানা পুলিশ। সোমবার বিকেলে ব্রীজের মালামাল আটক করে থানায় আনলেও মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।
পুরান আয়রন ব্রিজের লোহার মালামাল বিক্রি করার অভিযোগের তীর খোদ পোনাবালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দিকে। তবে চেয়ারম্যান ঘটনা অস্বিকার করেছেন।
এসব মাল অবৈধ ভাবে বিক্রি করেছে চেয়ারম্যান আবুল বাসার খান। সংবাদকর্মীদদের এমনই অভিযোগ করেছেন ঐ ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ড মেম্বর নান্না খলিফা।
তিনি বলেন, 'চেয়ারম্যান বাসার নয়া খালের পুরনো সেতুর লোহার মালামাল বেশ কিছুদিন আগে তাঁর বাড়িতে নিয়ে রেখেছিলো। মঙ্গলবার বিকেলে গোপনে ভাঙ্গারি ব্যাবসায়ীদের কাছে তা বিক্রি করে দেন। মালগুলো ট্রাকে করে নিয়া যাওয়ার সময় স্থানীরা আটক করে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে সব মাল উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।'
ঐ মাল ক্রয়কারী ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী মো. মুনছুর বলেন, 'পোনাবালিয়ার চেয়ারম্যান আবুল বাসার সাহেব আমাকে ডেকে বলেছে, কিছু মালামাল বিক্রি করার আছে। আমি ৬৭ হাজার ৫০০ টাকায় লোহার মালামাল ক্রয় করেছি।
ব্রীজের লোহার সরকারী অ্যাঙ্গেল গুলো চেয়ারম্যান তার বাড়িতে রেখেছিলো বলে তথ্য নিশ্চিত করেছে গ্রাম পুলিশ মিন্টু হাওলাদার। তিনি বলেন, 'নয়া খালের পুরোনো ব্রীজের মালামালগুলো চেয়ারম্যানের বাড়িতেই ছিল। সেগুলো কিভাবে বাইরে আসলো, তা আমার জানা নেই।'
মালামাল আটকের বিষটি নিশ্চিত করে সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খোকন বলেন, ২৩ মে বিকেলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পেরে পোনাবালিয়া খেয়াঘাটে যাই। সেখান থেকে সরকারি সেতুর লোহার মালামাল নলছিটি নিয়ে যাওয়ার পথে আমরা ট্রাকসহ আনুমানিক দের টন লোহার মাল আটক করেছি।
ঝালকাঠি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খলিলুর রহমান বলেন, 'ঘটনার সত্যতা যাচাই করার পর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। সঠিক তথ্য উদঘাটনের জন্য গতকালকেই ঐ ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী মুনছুরকে থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এটার বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাবেনা।
এ ব্যাপারে পোনাবালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবুল বাসার খান বলেন, 'আমার কাছে কোন সেতুর মালামাল ছিলোনা, আমি এগুলো বিক্রিও করিনি। একটি চক্র আমাকে ফাঁসানো চেষ্টা করছে।
এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। সেতুর লোহার মালামাল বিক্রির জন্য ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ইউপি সদস্যসহ স্থানীয় বাসিন্দারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইউপি সদস্য বলেন, পোনাবালিয়া ইউনিয়নে নয়াখালের সেতু ও আলমগীর হাওলাদারের বাড়ির সামনে খালের দুটি আয়রণ ব্রীজ পুরনো হওয়ায় ভেঙে যায়। ২০২১ সালে নতুন করে সেতু দুটি নির্মাণ করে দেয় এলজিইডি। পুরনো সেতু দুটি ভেঙে লোহার দেড়টন মালামাল ইউপি চেয়ারম্যানের ছিলারিশ গ্রামের বাড়িতে হেফাজতে রাখা ছিলো।