ফ্রিডম বাংলা নিউজ

রবিবার, মে ১৯, ২০২৪ |

EN

হাসপাতালের ভবন নির্মানে ধীরগতি ১৮ মাসের কাজে তিন বছর পার

ঝালকাঠি, প্রতিনিধি | আপডেট: বৃহস্পতিবার, মে ১৯, ২০২২

হাসপাতালের ভবন নির্মানে ধীরগতি ১৮ মাসের কাজে তিন বছর পার
নির্ধারিত সময়ের দ্বিগুণের বেশি পার হলেও শেষ হয়নি ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের আড়াইশ শয্যা বিশিষ্ট ৬ তলা ভবনের নির্মাণ কাজ। পঞ্চম তলা পর্যন্ত নির্মাণ কাজ শেষ হলেও ভেতরের দরজা,জানালা, ইলেকট্রিক, পানির লাইন স্থাপনসহ   আনুষাঙ্গিক কাজের অধিকাংশই বাকি। চলতি সপ্তাহে ষষ্ঠ তলার ছাদের আংশিক ঢালাই দেয়া হয়েছে।

ধীরগতিতে নির্মাণকাজ চলায় আধুনিক চিকিৎসাসেবা পেতে জেলাবাসীকে আরো দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ে হাসপাতালের নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় ক্ষুব্ধ সুবিধা বঞ্চিত সাধারণ রোগীরা। আর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্রুত নির্মাণ কাজ শেষ করার তাগিদ দিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। একই সঙ্গে সেবা কার্যক্রম চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দিতে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক। 

গণপূর্ত প্রকৌশল বিভাগসূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৮ মাসে ছয়তলা এ ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা ছিল। কার্যাদেশ  অনুযায়ী ২০১৯ সালের জুন মাসে ভবনের কাজ শেষ করে কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করার কথা ছিলো। কিন্তু ৩৪ মাসেও শেষ করতে পারেনি কোহিনুর এন্টারপ্রাইজ ও জিএম কনস্ট্রাকশন নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

কোহিনুর এন্টারপ্রাইজের প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির বলেন, 'ছয় তলা এই হাসপাতাল ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয় করোনা মহামারির সময়। তখন নির্মাণ সামগ্রীর দাম ছিলো ঊর্ধ্বমুখী। করোনাকালে  শ্রমিক সংকটও ছিলো বেশ। সে কারনেই কাজের গতি ছিল কম। তবে শিগগিরই ভবনের কাজ শেষ হবে।’

এদিকে কাজের ধীরগতির মধ্যেই আরো তিন তলা বাড়িয়ে ভবনের নবম তলা পর্যন্ত নকশা ও বরাদ্দের অনুমোদন দিয়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। সপ্তম, অষ্টম ও নবম তলার কাজের জন্য সম্প্রতি আরও ৮কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। ঝালকাঠি গণপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী সমরজিৎ সিং বলেন, আগামী ৫ মাসের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে। অসমাপ্ত সকল কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে বলা হয়েছে।'

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, 'নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ হলে আড়াইশ শয্যার সুযোগসুবিধা পাওয়া যেত। সেবার মানও বৃদ্ধি পেত। এখন তো ডাক্তার কম, রোগীর চাপ বেশি, তাই সেবা পেতে আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। 

হাসপাতাল কতৃপক্ষ জানিয়েছেন, জেলা সদরের এই হাসপাতালে ২৩জন চিকিৎসকের মধ্যে বর্তমানে ১৪ জন চিকিৎসকের পদই শূন্য। বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৪ শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। প্রতিদিন সকালে ভর্তিরোগীদের পর্যবেক্ষন এবং অপারেশন শেষ করে সাধারণ রোগীদের সেবা দিতে হিমসিম খেতে হয় চিকিৎসকদের। 

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এইচ   এম জহিরুল ইসলাম ফ্রিডমবাংলাকে বলেন, 'আধূনিক সদর হাসপাতালটি ২০০৩ সালে ৫০শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করনের অনুমোদন পায়। তবে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৫০ শয্যার জনবল দিয়েই চলেছে চিকিৎসা কার্যক্রম। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ১০০ শয্যার জনবল নিয়োগের অনুমোদন দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। 

তিনি আরো বলেন, হাসপাতাল কম্পাউন্ডে বর্তমানে ২৫০ শয্যা ভবনের কাজ শেষ হওয়া দরকার। গণপূর্ত কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য বার বার তাগিদ দেয়া হয়েছে। একই সাথে ২৫০ শয্যার জন্য দ্রুত জনবল নিয়োগ দিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।