ফ্রিডম বাংলা নিউজ

রবিবার, মে ১৯, ২০২৪ |

EN

শীতলপাটির গ্রাম হাইলাকাঠি

ঝালকাঠি, প্রতিনিধি | আপডেট: বুধবার, মে ১৮, ২০২২

শীতলপাটির গ্রাম হাইলাকাঠি
দেশের যে কয়টি জেলায় শীতলপাটি তৈরি হয় তার মধ্যে ঝালকাঠি জেলা অন্যতম। এটি ঝালকাঠির বহুকালের পুরোনো ঐতিহ্য।  বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে অর্থাৎ গরমকালে শীতলপাটির কদর বাড়ে।

ঝালকাঠি সবচেয়ে বেশি শীতলপাটি তৈরি হয় রাজাপুর উপজেলার হাইলাকাঠি গ্রামে। এ গ্রামটিকে শীতল পাটির গ্রাম বলা হয়। বাংলাদেশে শীতল পাটির যে চাহিদা রয়েছে তার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ঝালকাঠির হাইলাকাঠি গ্রাম জোগান দেয়।এখানকার পাটিকররা ব্যস্ত সময় কাটায় গ্রীষ্মকালে।  হিন্দু ধর্মাবলম্বী এই কারুশিল্পীরা পাটিকর নামেই পরিচিত। গরম কালের চার মাসের আয় দিয়েই তারা প্রায় পুরো বছর চলে।

হাইলাকাঠি ছাড়াও রাজাপুর উপজেলার ডহরশংকর, সাংগর এবং জগন্নাথপুর গ্রামের প্রায় ২'শ টি পরিবার শীতলপাটি তৈরি করে। এছাড়া নলছিটি উপজেলার তিমিরকাঠি, কামদেবপুর, ঝালকাঠি পৌর এলাকার, বাঁশপট্টি ও কাঁশারীপট্টির কয়েকটা বাড়িতে শীতলপাটি তৈরি হয়। সব মিলিয়ে এ জেলায় প্রায় ৩শো'র বেশি পরিবার শীতলপাটির সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।

হাইলাকাঠিতে ‘‘আশার আলো শীতল পাটি বহুমুখী সমিতি" নামে একটি সংগঠনও রয়েছে। এই সমিতি দ্বারাই এখানকার পাটি বুনন কাজ সম্মিলিত ভাবে পরিচালিত হয়। যদিও বর্তমানে সমিতির কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। এই সংগঠনের সাবেক সভাপতি বলাই চন্দ্র পাটিকর বলেন, 'এখানকার দশ বারো বছরের ছেলে-মেয়ে থেকে ষাটোর্ধ বয়সী বৃদ্ধরাও কারিগর। সবাই পাটি বুনানোর কাজ করে। আনুমানিক ২৫০ থেকে ৩০০ বছর যাবৎ বংশ পরস্পরায় এটি চলে আসছে।'

ঝালকাঠির তৈরি শীতলপাটি ব্যবসায়ীদের হাত ধরে চলে যাচ্ছে ঢাকা, খুলনা, সিলেট, চট্রগ্রাম ও বরিশালের বাজারে। রপ্তানি পণ্য হিসেবে এটি স্বীকৃতি না পেলেও ব্যক্তিগতভাবে কলকাতাসহ ইউরোপ আমেরিকার বেশ কয়েকটি দেশে নিয়মিত যাচ্ছে।

এখানকার একটি সাধারণ পাটি এক হাজার টাকায় কিনে কমপক্ষে আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি করেন দোকানিরা। আর মসৃণ উন্নতমানের পাটি বিক্রি হয় অকর্ষনীয় দামে।

ঝালকাঠির শিল্প সহায়ক কেন্দ্রের উপ-ব্যবস্থাপক শাফাউল করিম বলেন, বিসিকের সহায়তায় বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের ২১টি জেলায় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উন্নয়নে ঋণ সহায়তার ব্যবস্থা করেছে। শীতলপাটির জন্য ঝালকাঠিও ওই ২১ জেলার তালিকাভুক্ত হয়েছে।' তিনি আরো বলেন, নলছিটির কামদেবপুরের অনেক পাটিকরকে আমরা আর্থিক ঋণ সহায়তা দিয়েছি। অনেককে নিবন্ধনও করিয়েছি।

ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী  ফ্রিডমবাংলাকে বলেন, ঝালকাঠি জেলার সম্ভাবনাসমূহকে বিকশিত করার জন্য পেয়ারার পাশাপাশি শীতল পাটিকে জেলা ব্রান্ডিং করা হয়েছে। এই শিল্পটিকে বাচিয়ে রাখতে সরকারী ভাবে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে।