ফ্রিডম বাংলা নিউজ

রবিবার, এপ্রিল ২৮, ২০২৪ |

EN

২৯৭ কোটি টাকা দুর্নীতি মামলায় জিকে শামীমের জামিন

আদালত প্রতিবেদক | আপডেট: বৃহস্পতিবার, জানুয়ারী ৪, ২০২৪

২৯৭ কোটি টাকা দুর্নীতি মামলায় জিকে শামীমের জামিন
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় বিতর্কিত ঠিকাদার জি কে শামীমকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।

তার জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল মঞ্জুর করে বৃহস্পতিবার (০৪ জানুয়ারি) বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিন ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।

দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।

এ জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

অপরদিকে আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক জানন, জি কে শামীম চার বছর তিন মাস ধরে কারাগারে। এ মামলায় সর্বনিম্ন সাজা তিন বছর। আর সর্বোচ্চ সাজা ১০ বছর। অর্থাৎ সর্বনিম্ন সাজা তিনি ভোগ করেছেন। অথচ মামলাটিতে কেবল একজন সাক্ষীর সাক্ষ্য হয়েছে। তাছাড়া একই অভিযোগে আরেক মামলায় তাকে ১০ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এসব যুক্তিতে রুলটি অ্যাবসুলেট (মঞ্জুর) ঘোষণা করে তাকে নিয়মিত জামিন দেওয়া হয়েছে। তবে এ মামলায় জামিন পেলেও অন্য মামলায় দণ্ডিত জি কে শামীমের এখনই কারামুক্তি মিলছে না।

২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর শামীম ও তার মা আয়েশা আক্তারের বিরুদ্ধে ২৯৭ কোটি ৮ লাখ ৯৯ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এ মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন।

২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি এ মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর আদালত তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

গত বছর ৯ জানুয়ারি ঢাকার ৪ নম্বর বিশেষ জজ শেখ নাজমুল আলমের আদালতে দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিনের সাক্ষ্য রেকর্ড করার মধ্য দিয়ে আলোচিত এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ৭ ফেব্রুয়ারি দিন রাখেন।

ক্যাসিনোবিরোধী অভিযোগের মধ্যে ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর গুলশানের নিকেতনে শামীমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও অভিযান চালায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।  ওই ভবন থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা, এফডিআর, আগ্নেয়াস্ত্র ও মদ উদ্ধার করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বা‌হিনী। অভিযানের সময় জি কে শামীম ও তার সাত দেহরক্ষীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাদের বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা করা হয়। এর মধ্যে দুই মামলায় তার সাজা হয়েছে।

২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জি কে শামীম ও তার ৭ দেহরক্ষীকে অস্ত্র মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শেখ ছামিদুল ইসলাম।

দণ্ডিত অপর আসামিরা হলেন, জি কে শামীমের সাত দেহরক্ষী মো. জাহিদুল ইসলাম, মো. শহিদুল ইসলাম, মো. কামাল হোসেন, মো. সামসাদ হোসেন, মো. আমিনুল ইসলাম, মো. দেলোয়ার হোসেন ও মো. মুরাদ হোসেন।

গত বছরের ১৭ জুলাই মানিলন্ডারিং আইনের মামলায় জি কে শামীমকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম আদালত। বাকি সাত আসামিকে (জি কে শামীমের দেহরক্ষী) চার বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তাদের সম্মিলিতভাবে তিন কোটি ৮৩ লাখ ৩৫ হাজার ৮১৪ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।  

চার বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত সাত আসামি হলেন, মো. দেলোয়ার হোসেন, মো. মুরাদ হোসেন, মো. জাহিদুল ইসলাম, মো. শহীদুল ইসলাম ওরফে শরীফ, মো. কামাল হোসেন, মো. সামসাদ হোসেন ও মো. আনিছুল ইসলাম।

রায়ে আদালত তার জব্দ করা সব ব্যাংক হিসাব ও অস্থাবর সম্পত্তি অবমুক্ত করার আদেশ দেন।