জেলা প্রতিনিধি | আপডেট: শুক্রবার, অক্টোবর ২২, ২০২১
চট্টগ্রামের
জেএম সেন হল পূজা
মণ্ডপে হামলার ঘটনায় ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক
নূরের নেতৃত্বাধীন যুব অধিকার পরিষদের
তিন নেতাসহ দশজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
কোতোয়ালি
থানার ওসি নেজাম উদ্দিন
বলছেন, যুব অধিকার পরিষদের
চট্টগ্রামের ওই নেতাদের ‘পরিকল্পনাতেই’
১৫ অক্টো্বর বিজয়া দশমীর দিনে পূজা মণ্ডপে
হামলা হয়েছিল।
গ্রেপ্তাররা
হলেন- যুব অধিকার পরিষদ
চট্টগ্রাম মহানগরের আহ্বায়ক মো. নাছির (২৫),
সদস্য সচিব মিজানুর রহমান
(৩৭), বায়েজিদ থানা শাখার আহ্বায়ক
মো. রাসেল (২৬) এবং ইয়ার
মোহাম্মদ (১৮), মো. মিজান
(১৮), গিয়াস উদ্দিন, ইয়াসিন আরাফাত (১৯), হাবিবুল্লাহ মিজান
(২১), মো. ইমন (২১)
ও ইমরান হোসেন।
বৃহস্পতিবার
রাতে চট্টগ্রামের সাতকনিয়া ও নগরীর বিভিন্ন
স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ওসি
নেজাম উদ্দিন বলেন, হামলার পর ঘটনাস্থলের সিসি
ক্যামেরার ভিডিও এবং স্থির চিত্র
দেখে তাদের চিহ্নিত করা হয়। সব
মিলিয়ে ওই ঘটনায় মোট
১০০ জনকে এ পর্যন্ত
গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
যুব
অধিকার পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগরের সদস্য সচিব মিজানুর রহমানযুব
অধিকার পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগরের সদস্য সচিব মিজানুর রহমান“হামলার মূল পরিকল্পনায় ছিলেন
যুব অধিকার পরিষদ নেতা নাছির, মিজানুর
ও রাসেল। তাদের পরিকল্পনাতেই জুমার নামাজ শেষে তাৎক্ষণিক মিছিল
ও সমাবেশ করা হয়। পরে
সেই মিছিল থেকে হামলা চালানো
হয়।”
দুর্গা
পূজার মধ্যে কুমিল্লার একটি মন্দিরে কুরআন
অবমাননার কথিত অভিযোগ তুলে
১৩ অক্টোবর কয়েকটি মন্দিরে হামলা ও ভাংচুর চালানো
হয়। এর পর দেশের
বিভিন্ন জেলায় মন্দিরে ও পূজা মণ্ডপে
হামলা হয়। তা ঠেকাতে
গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষও বাঁধে, বিভিন্ন স্থানে প্রাণহানিও ঘটে।
কুমিল্লার
ঘটনার জেরে ১৫ অক্টো্বর
বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের আগে চট্টগ্রাম নগরীর
জেএম সেন হল পূজা
মণ্ডপে হামলা হয়।
আন্দরকিল্লা
শাহী জামে মসজিদ থেকে
জুমার নামাজের পর মিছিল নিয়ে
এসে জেএম সেন হল
পূজা মণ্ডপের গেইট ভেঙে ভেতরে
প্রবেশের চেষ্টা চালায় হামলাকারীরা।পুলিশ ফাঁকা গুলি ও টিয়ার
শেল ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ
করে দেয়।
ওই
ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে কোতোয়ালি
থানায় একটি মামলা করে।
সেখানে ৮৩ জনের নাম
উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও
কয়েকশ ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।
ওসি
নেজাম উদ্দিন জানান, হামলার ঘটনার পরপরই টেরিবাজারের ব্যবসায়ী সমিতির এক নেতার আত্মীয়
ইমরান মাজেদ রাহুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
তার
মধ্যমেই সেদিন টেরিবাজার এলাকার দোকান কর্মচারী, ঘাটফরহাদবেগ, খলিফাপট্টি এলাকার লোকজনকে মিছিলে সম্পৃক্ত করা হয়েছিল বলে
তারা তদন্তে জানতে পেরেছেন।
ওসি
বলেন, যুব অধিকার পরিষদ
নেতা মিজানুর আগে ইসলামী ছাত্র
শিবিরের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন।
ফেইসবুক গ্রুপ বাঁশের কেল্লার অ্যাডমিন প্যানেলেরও সদস্য ছিলেন তিনি।
“পরিকল্পিতভাবে
মিছিল করে তারা মণ্ডপে
হামলার চেষ্টা চালায়। হামলার পরপর অভিযান শুরু
হলে তারা বিভিন্ন স্থানে
পালিয়ে যায়। তাদের গতিবিধি
নজরে রেখে সাতকারিয়া উপজেলা
থেকে নাছিরকে এবং নগরীর বিভিন্ন
স্থানে অভিযান চালিয়ে অন্যদের গ্রেপ্তার করা হয়।”
এ
বিষয়ে যুব অধিকার পরিষদের
আহ্বায়ক নুরুল হক নূরের বক্তব্য
জানতে পারেনি।
তবে
গত সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু
ভাস্কর্যের সামনে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের এক বিক্ষোভ সমাবেশে
তিনি বলেছিলেন, কুমিল্লার ঘটনার পর সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা
ছড়িয়ে বিভিন্ন স্থানে পূজা মণ্ডপ ও
হিন্দুদের ওপর যেসব হামলা
হয়েছে, তা ‘সাজানো; বলে
তিনি মনে করছেন। তার
ভাষায়, ‘রাজনৈতিক ছত্রছায়ায়’ সেসব ঘটনা ঘটানো
হয়েছে।