ফ্রিডম বাংলা নিউজ

রবিবার, মে ১৯, ২০২৪ |

EN

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফেরানোর কোনো উদ্যোগ নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: মঙ্গলবার, আগস্ট ২, ২০২২

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফেরানোর কোনো উদ্যোগ নেই
শোকের মাস শুরু হলেই বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসার দাবি উচ্চারিত হয়। এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন আশ্বাস দেওয়া হয় কিন্তু বাস্তবে বঙ্গবন্ধুর দণ্ডিত খুনিদের মধ্যে যে পাঁচজন এখনো পলাতক আছেন তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে তেমন কোনো অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায় না।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর তার খুনিদের কয়েকজনের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে, আর কয়েকজন পালিয়ে রয়েছে। সর্বশেষ বঙ্গবন্ধুর অন্যতম দণ্ডিত খুনি আব্দুল মাজেদকে পুলিশ গ্রেফতার করে। মাজেদ দীর্ঘদিন ভারতে পালিয়ে ছিল। দেশে ফিরে এলে তাকে গ্রেপ্তার করে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। মাজেদকে বাদ দিয়ে বঙ্গবন্ধুর আরও ৫ খুনি এখনো পলাতক রয়েছে। প্রতি বছর আগস্ট মাসে এই খুনিদেরকে ফিরিয়ে আনার কথা বলা হয়, দাবি উচ্চারিত হয়। কিন্তু বাস্তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যতটা দক্ষতার সঙ্গে এই কাজটা করা উচিত ছিল এবং এক্ষেত্রে যতটুকু মনোযোগ দেওয়া দরকার ছিলো, সেই মনোযোগ দেয়নি বলেই অনেকে অভিযোগ করেছেন।

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের মধ্যে রাশেদ চৌধুরী বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয়ে অবস্থান করছেন। রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনার জন্য বিভিন্ন সময় যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আবেদন করা হয়েছে। যে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন মানবাধিকারের কথা বলে সেই যুক্তরাষ্ট্রই বঙ্গবন্ধুর খুনিকে কেন রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে, সেটিও একটি বড় প্রশ্ন। এ নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে খুব বেশি কথাবার্তা বলা হয় না।

কানাডায় অবস্থান করছেন নুর চৌধুরী। নুর চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনার জন্য একাধিকবার সরকার উদ্যোগ নিয়েছিলো। কানাডার সরকারের কাছে বলা হয়েছে, এমনকি কানাডার প্রধানমন্ত্রীকেও এ ব্যাপারে অনুরোধ করা হয়েছিলো। কিন্তু তারপরও নুর চৌধুরীকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। কানাডার পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে বলা হয়েছে যে, যেহেতু কানাডা মৃত্যুদণ্ডে বিশ্বাস করে না এবং নুর চৌধুরীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে সেজন্য নুর চৌধুরীকে তারা বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করছেনা।

বঙ্গবন্ধুর আরেক খুনি শরিফুল হক ডালিম এখন পাকিস্তানে আছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে ডালিমের অবস্থান সম্পর্কে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে কোনো হালনাগাদ তথ্য নেই। ডালিমকে উদ্ধারের ক্ষেত্রেও কোনো অগ্রগতি নেই।

বঙ্গবন্ধুর আরেক খুনি খন্দকার আবদুর রশিদও পাকিস্তানে আছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। তবে এ ব্যাপারে সরকারের কাছে সুস্পষ্ট কোনো তথ্য-প্রমাণ নেই।

আর একজন পলাতক রিসালদার মোসলেম উদ্দিন কিছুদিন আগে ভারতের ছিলো বলে তথ্য প্রকাশ হয়েছিল এবং তাকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করবে বলে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর জানা যায় যে, না এই ব্যক্তি রিসালদার মোসলেম উদ্দিন নয়।

ফলে বঙ্গবন্ধুর ৫ দণ্ডিত খুনিদের এখনো দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি এবং দেশে ফিরিয়ে এনে তাদের দণ্ড কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। বিভিন্ন মহল মনে করে যে, এ ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরবচ্ছিন্ন কূটনৈতিক যোগাযোগ করা দরকার এবং এই বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে চাপ প্রয়োগ করা দরকার। কিন্তু বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিভিন্ন দিবসেই শুধুমাত্র এই প্রসঙ্গ করে, মাঝে মাঝে এই প্রসঙ্গটি নিয়ে কথাবার্তা বলা হয়। কিন্তু পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাস গুলোর দায়িত্ব এ নিয়ে কূটনৈতিক দেনদরবারকে নিরবচ্ছিন্ন করা। সেটি করার ক্ষেত্রে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সীমাবদ্ধতা রয়েছে বলেই অনেকে মনে করেন।