ফ্রিডম বাংলা নিউজ

রবিবার, মে ১৯, ২০২৪ |

EN

অস্ত্রধারী, বিবাহিতরা শীর্ষ পদে; ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে বিতর্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: শনিবার, জুলাই ৩০, ২০২২

অস্ত্রধারী, বিবাহিতরা শীর্ষ পদে; ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে বিতর্ক
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে সভাপতি হয়েছেন আসলাম উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান শুভ। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, অস্ত্রধারী ছাত্রত্বহীন আসলাম উদ্দিন ১০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে সভাপতি ও ৭ লক্ষ টাকার বিনিময়ে আশিকুর রহমান শুভ সাধারন সম্পাদক হয়। 

জনশ্রুতি আছে, কমিটির সর্বোচ্চ পদে থাকা সভাপতি ও সাম্পাদক দুজনেই বিবাহিত।

এ ছাড়া গঠিত কমিটিতে স্থান পেয়েছে অছাত্র, মাদকসেবী ও বিতর্কিতরা। এ নিয়ে চলছে নানা সমালোচনা।

ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের ৫-এর 'গ' ধারায় আছে, বিবাহিত ব্যক্তি ছাত্রলীগের কমিটিতে স্থান পাবেন না। এরপরও মিরপুর উপজেলা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটিতে স্থান পেয়েছেন বিবাহিতরা। যে কারণে বিষয়টি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান অনিক ও সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মিরপুর উপজেলা ছাত্রলীগের ৬৮ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষিত হয়। কমিটির মেয়াদ দেওয়া হয়েছে এক বছর।


খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নবগঠিত মিরপুর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটির সভাপতি আসলাম উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান শুভ বিবাহিত। আসলামের স্ত্রীর নাম সাদিয়া খাতুন এবং শুভর স্ত্রীর নাম মাহফুজা আক্তার। যার কাবিনামাও ফ্রিডম বাংলা নিউজের হাতে সংরক্ষিত আছে।

গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে কমিটিতে স্থান দেওয়ায় সমালোচনার ঝড় বইছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। 

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা ও পদবঞ্চিতদের অভিযোগ, বিবাহিত, অস্ত্রধারী আসলাম উদ্দিনকে সভাপতি ও আশিকুর রহমান শুভকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। এ ছাড়া অছাত্র, মাদকসেবী ও বিতর্কিতদেরও নাম এসেছে কমিটিতে। অবৈধভাবে সুবিধা নিয়ে বিতর্কিত ও অযোগ্যদের পদ দিয়েছেন অনিক-চ্যালেঞ্জ। এভাবে সংগঠন চলে না।

এ ছাড়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান অনিক ও সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জের বিরুদ্ধে ‘কমিটি বাণিজ্যের’ অভিযোগ জানিয়েছেন তারা।

বর্তমান উপজেলা সভপতি আসলাম উদ্দিন বলেন, কমিটিকে প্রশ্নবৃদ্ধ করতেই সংবাদকর্মীদের ভুল তথ্য, মিথ্যা কাবিননামা দিয়ে একটি মহল এসব প্রচার করছে। আমি বিবাহিত না। বিয়ের ব্যাপারটা অনেক আগে জেলার নেতারা তদন্ত করেই আমাকে সাধারণ সম্পাদক বানিয়েছেন। তবে অস্ত্রের শোডাউন এবং কখনো অস্ত্র কাঁধে, আবার কখনো অস্ত্র হাতে নিয়ে শোআপের বিষয় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি ফ্রিডমবাংলানিউজকে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। 



সম্প্রতি স্থানীয় সাংবাদিক রুবেল হত্যার সাথে জড়িত মজল কিলার ইমনের সাথে বেশ সক্ষতা রয়েছে সভাপতি আসলাম উদ্দিনের। মজল কিলার (ইমন) ও উপজেলা সভপতি আসলাম উদ্দিনের দুজনের একটি ছবি ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেজবুকে দেখা গিয়েছে।

কমিটিতে স্থান পাওয়া বর্তমান উপজেলা সাধারণ সম্পাদক বিবাহের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এসব অসত্য সোস্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত বিয়ের কাবিননামার বিষয়টি ভূল প্রমানিত হওয়ার পরেই আমাদের এই কমিটি ঘোষণা করা হয়। 

অর্থের বিনিময়ে কাঙ্খিত পদ পেয়েছেন প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংঙ্গঠনের মধ্যে থাকা পদ বঞ্চিতরা এবং যারা আমার ভালো চায় না তারাই সাংবাদিকদের ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে । এগুলি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। 

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান অনিকের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি মিটিংয়ে আছি বলে ফোন কেটে দেন।

কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ বলেন, সাধারণ সম্পাদক শুভ ও সভাপতি আসলাম বিবাহিত কি না সেসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কাজি ও অন্যান্নদের সাথে আমরা কথা বলেছি, এমন অভিযোগের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। তথ্য আমার জানা নেই। 

তবে উপজেলা সভাপতি আসলাম উদ্দিনের অস্ত্রের ছবি, অছাত্র ও মাদকসেবী নিয়ে কিছু বলেননি তিনি।



গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে কমিটিতে স্থান দেওয়ায় সমালোচনার ঝড় বইছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। জেলা ছাত্রলীগ, মিরপুর ও কুমারখালী উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে অস্ত্রধারী, বিবাহিত, মাদকসেবীদের নাম আসায় বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের।