ফ্রিডম বাংলা নিউজ

রবিবার, মে ১৯, ২০২৪ |

EN

সরকার ও জনগণের মধ্যে দেয়াল তৈরি করছে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: মঙ্গলবার, জুলাই ২৬, ২০২২

সরকার ও জনগণের মধ্যে দেয়াল তৈরি করছে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা
প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশ রেলওয়েতে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে আন্দোলন করেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি। শুরুতে একাই এই আন্দোলন চালিয়ে গেলেও ধীরে ধীরে তার সাথে যোগ দিয়েছিল তার শিক্ষার্থী বন্ধু-বান্ধব, সহপাঠীরা। তার আন্দোলনের যৌক্তিতা থাকার কারণে ইতোমধ্যে দেশজুড়ে রনির আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে। তার ৬টি দাবি হয়ে উঠেছে দেশের ১৬ কোটি মানুষের গণ দাবি।

দেশের বিভিন্ন জায়গার রেল স্টেশনে আন্দোলন করার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। রনি অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর শুনানিও করেছে এবং রনির করা অভিযোগের সততা পেয়ে রেলের অনলাইন টিকিট সিস্টেম অপারেটিং প্রতিষ্ঠান সহজকে দুই লাখ টাকা জরিমানাও করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এদিকে গণমাধ্যমে কল্যাণে রনির আন্দোলনের খবর পৌছেছে হাইকোর্টে। রেলের দুর্নীতি আর অনিয়ম নিয়ে রেলওয়ে কর্মকর্তাদের তিরস্কারও করেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত।

সোমবার রেলের দুর্নীতি বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা স্মারকলিপি দিয়েছে মহিউদ্দিন রনি। এর কিছুক্ষণ পরই রেল ভবন থেকে ডাক আসে রেলসচিব হুমায়ুন কবীরের। দীর্ঘ ৪ ঘণ্টা বৈঠক শেষে আন্দোলন স্থগিত করে মহিউদ্দিন রনি। বৈঠকে রেল সচিব বলেছেন যে, ‘রেলের টিকিট সিস্টেম আরও উন্নত করা হচ্ছে। রনির দাবির সঙ্গে রেলওয়েও একমত। রনির দাবি রেলওয়ে মেনে নিয়েছে বলেও জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, সিস্টেম উন্নত করার নির্দেশ দিয়ে সহজকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ই-টিকিটিং সিস্টেম উন্নত করার কাজ চলছে।’ রেলওয়ের এমন আশ্বাস পেয়ে আন্দোলন স্থগিত করেছে রনি। 

তবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষিত থাকলেও রেল কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ নিতে এতো সময়ক্ষেপন করলো কেন সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রেলের টনক নড়তে কেন এতো সময় লাগলো সেটা নিয়ে সমালোচনার চর্চা হচ্ছে বিভিন্ন মহলে। বিশ্লেষকরা এ ঘটনার জন্য রেল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছেন। এ ঘটনাকেও এক ধরনের দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনা বলে দাবি করছেন বিশ্লেষকরা। বিশ্লেষকরা বলছেন যে, রেলওয়ের এই দুর্নীতি একদিনে তৈরি হয়নি। বছরের পর বছর ধরে এই দুর্নীতি চলে আসছে। কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে শুরু করে রেল ভবন এবং রেলের সাধারণ কর্মচারী থেকে শুরু করে উর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রতিটি ধাপ দুর্নীতি এবং সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত। রনি বারবার আলোচনার আহ্বান জানোলে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি কর্তৃপক্ষ। তারা বিভিন্ন সময় নানা আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কথা বলে ঘটনাটিকে এড়িয়ে যাওয়া চেষ্টা করেছিল। এতে করে সরকার সম্পর্কে দেশের সাধারণ মানুষের কাছে ভুল যাচ্ছে। আর এর ফলে সরকার ও জনগণের মধ্যে এক ধরনের অদৃশ্য দেয়াল তৈরি হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।