ফ্রিডম বাংলা নিউজ

রবিবার, মে ১৯, ২০২৪ |

EN

ভাঙ্গনের মুখে নুর-রেজা কিবরিয়ার দল: নেপথ্যে টাকা ভাগাভাগি

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: সোমবার, জুলাই ২৫, ২০২২

ভাঙ্গনের মুখে নুর-রেজা কিবরিয়ার দল: নেপথ্যে টাকা ভাগাভাগি
কমিটি গঠন নিয়ে বিরোধের জেরে নূর এবং রেজা কিবরিয়ার নতুন রাজনৈতিক দল গণঅধিকার পরিষদ ভাঙ্গনের মুখে। গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। অন্যদিকে সদস্যসচিব ভিপি নুরুল হকের বিরুদ্ধে প্রবাসী অধিকার পরিষদ নামে একটি সংগঠন গঠন করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে গত দুই দিন ধরে গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে চলছে অস্থিরতা, মিছিল, পাল্টা মিছিল, হুমকি। এমনকি বহিষ্কার, পাল্টা বহিষ্কারের ঘটনাও ঘটছে।

উল্লেখ্য যে, প্রবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রবাসী অধিকার কমিটি বলে একটি অঙ্গসংগঠন গঠন করা হয়। যে অঙ্গসংগঠনটি গঠনের ক্ষেত্রে দলীয় নিয়ম-নীতি মানা হয়নি বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এই অঙ্গসংগঠনটি গঠনের মূল উদ্দেশ্য ছিলো প্রবাসীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া। কিন্তু অঙ্গসংগঠনটি গঠিত হবার পরপরই টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে রেজা কিবরিয়া এবং ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হকের মধ্যে মতপার্থক্য তৈরি হয়। নুরুল হকের অনুসারীরা কেন্দ্রীয় কার্যালয় দখলে রাখে। অন্যদিকে, রেজা কিবরিয়ার অনুসারীরা সেই কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে পেশিশক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা করে। এর মাধ্যমে গণঅধিকার পরিষদ নামে সদ্য জন্ম নেওয়া রাজনৈতিক দলটি এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে ভাঙ্গনের মুখে পতিত হতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য যে, গত বছরের ২৬শে অক্টোবর সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত শাহ এএমএস কিবরিয়ার পুত্র রেজা কিবরিয়াকে আহ্বায়ক এবং ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হককে সদস্য সচিব করে গণঅধিকার পরিষদ শুরু হয়। রাজধানীর পল্টনে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়। বর্তমানে দলটির কয়েকটি অঙ্গসংগঠন সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ছাত্র অধিকার পরিষদ, যুব অধিকার পরিষদ, শ্রমিক অধিকার পরিষদ, নারী অধিকার পরিষদ ইত্যাদি। সাম্প্রতিক সময়ে প্রবাসী অধিকার পরিষদ নামে একটি সংগঠন গঠন করা হয়। যদিও এটি আনুষ্ঠানিকভাবে গণঅধিকার পরিষদের কোন অঙ্গ সংগঠন নয়। কিন্তু নুরুল হক প্রবাসী অধিকার পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই সংগঠন প্রবাসীদের অধিকার নিয়ে কাজ করার পাশাপাশি গণঅধিকার পরিষদের রাজনীতি পরিচালনা ব্যয় যোগাতে প্রবাসীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে। মূলত রেজা কিবরিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পরই তিনি জানতে পারেন যে, বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে রেজা কিবরিয়া নাম ভাঙ্গিয়ে নুরুল হক বেশকিছু টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়েছেন। এটিই জানার পরপরই তিনি তার অনুসারীদেরকে এ ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন।

গণঅধিকার পরিষদের একটি অংশের অভিযোগ, গত সোমবার রাতে এই বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর নুরুল হক একক সিদ্ধান্তে কয়েকজনকে দল থেকে অব্যাহতি দেন। অব্যাহতি দেয়ার পিছনে কারণ ছিলো যে, তারা রেজা কিবরিয়ার পক্ষ অবলম্বন করে গণঅধিকার পরিষদের সাথে প্রবাসী অধিকার পরিষদের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। জানা গেছে যে, প্রবাসী অধিকার পরিষদের যে কমিটি নুরুল হক গঠন করেছিলেন সেই কমিটির পাল্টা হিসেবে রেজা কিবরিয়ার সর্মথকরা আরেকটি কমিটি গঠন করেন। এরকম পাল্টাপাল্টি কমিটি গঠনের প্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার নূরুল হক গণঅধিকার পরিষদের ৩ জন নেতাকে অব্যাহতি দেন, যাকে অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বলে দাবি করছেন অব্যাহতি পাওয়া ব্যক্তিরা এবং এরা সকলেই রেজা কিবরিয়া সমর্থক বলে জানা গেছে। এই গণঅধিকার পরিষদ গঠনের পর অনেকেই এটাকে বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন, রেজা কিবরিয়াকে অনেকে রাজনীতিতে তৃতীয় শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করছিলেন। কিন্তু হালুয়া-রুটির ভাগ-বাটোয়ারাকে নিয়ে যে এত তাড়াতাড়ি গণঅধিকার পরিষদ ভাঙ্গনের মুখে পড়বে সেটা সম্ভবত অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকও ভাবতে পারেননি।

সুত্র: বাংলাইনসাইডার