ফ্রিডম বাংলা নিউজ

রবিবার, মে ১৯, ২০২৪ |

EN

পাকিস্তান সভ্য হবে কবে?

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: রবিবার, জুলাই ২৪, ২০২২

পাকিস্তান সভ্য হবে কবে?
পাকিস্তান চরম অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে নিপতিত। দেশটির মুদ্রার মান ক্রমশ নিচে নেমে যাচ্ছে। এই মুহূর্তে ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানের রুপির মান ২২৫ রুপি। দেশটিতে নানা সংকট ক্রমশ দানা বেধে উঠছে, অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি। পাকিস্তান আরেকটা শ্রীলংকা হতে যাচ্ছে, এমন ভবিষ্যৎবাণী করছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহল। অথচ দেশটির মধ্যে চলছে রাজনৈতিক সহিংসতা এবং রাজনৈতিক টানাপোড়েন। কিন্তু নিজের দেশে যাই হোক না কেন, একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র হয়েও পাকিস্তানের নজর অন্য রাষ্ট্রের দিকে। 

পাকিস্তান বিশ্বে বোধহয় সেরকম একটি বিরল রাষ্ট্র যে রাষ্ট্রটি নিজের নাক কেটে অন্যের যাত্রা ভঙ্গ করতে চায়। নিজের দেশের কোনো ঠিক নাই, নিজের দেশের সবক্ষেত্রে ব্যর্থ, নিজের দেশে চলছে চরম অরাজকতা-বিশৃঙ্খলা, অথচ অন্য দেশের ক্ষতি করার দিকে তাদের মনোযোগের কমতি নেই। পাকিস্তান সম্ভবত সেই বিরল রাষ্ট্র যারা নিজের দেশের উন্নতির চেয়ে অন্য দেশের ক্ষতিসাধনে বেশি আগ্রহী। পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের সাবেক এক প্রধান বলেছিলেন যে, পাকিস্তান অন্য দেশের অনিষ্ট করার জন্য যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে সেই অর্থ দিয়ে এক দশমাংশ দারিদ্র বিমোচন করা যেত। ভারতের ভেতর দাঙ্গা সৃষ্টি, ভারতে রাজনৈতিক অশান্তি সৃষ্টি, ভারতে সহিংসতা সৃষ্টির পিছনে যেমন পাকিস্তানের ভূমিকা রয়েছে তেমনি বাংলাদেশ যেন এগিয়ে যেতে না পারে, বাংলাদেশে যেন মৌলবাদের উত্থান ঘটে, বাংলাদেশে যেন স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি অপতৎপরতা চালাতে পারে সেজন্য পাকিস্তান ব্যস্ত সময় কাটায়।

সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের এই সমস্ত তৎপরতা কমেছে বলে অনেকে মনে করেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো ভিন্ন। পাকিস্তানের দুষ্টুমি মোটেও কমেনি। বরং পাকিস্তান তার অভ্যাস পাল্টাতে পারেনি। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাকে বিক্রিত করে পাকিস্তান তাদের দূতাবাসের অফিশিয়াল ফেসবুকে দিয়েছিল। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে ব্যাপক প্রতিবাদ, সমালোচনা হয়। এই সমালোচনার প্রেক্ষিতে একপর্যায়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাকিস্তান দূতাবাসের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং পাকিস্তান দূতাবাসকে প্রতিবাদ জানায়। এই প্রতিবাদের মুখে শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান আজ তাদের ফেসবুকের পাতা থেকে বাংলাদেশের পতাকার বিতর্কিত উপস্থাপন থেকে সরে এসেছে। যে বিকৃতভাবে বাংলাদেশের পতাকা উপস্থাপন করা হয়েছিল সেটা তারা আজ সরিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়েছে। এর মধ্যদিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠেছে যে, পাকিস্তান মানুষ হবে কবে?

পাকিস্তান কখনই কি সভ্য হতে পারবেনা? কারণ, বাংলাদেশ ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এক দেশ। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা শহীদের রক্তে রঞ্জিত। বাংলাদেশের ভূখণ্ডে প্রতি ইঞ্চি জমিতে রয়েছে শহীদের রক্তের দাগ। আর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেই বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছিল। আর এই স্বাধীনতা ৩০ কোটি শহীদের রক্তে রঞ্জিত। কাজেই আমরা যখন আমাদের পতাকা নিয়ে গর্ব করবো তখন আমাদের পতাকাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা, আমাদের পতাকাকে বিকৃত যারা করবে তারা আমাদের স্বাধীনতার শত্রু। পাকিস্তান নিঃসন্দেহে আমাদের স্বাধীনতার শত্রু এবং আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের ৫১ বছর পরও তারা এখন পর্যন্ত ক্ষমাপ্রার্থনা করেনি। তারা আমাদের যেকোনো অগ্রগতি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী কাজের জন্য নিজেদেরকে নিয়োজিত রাখে। এই পতাকা বিকৃতি পাকিস্তানের একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিলো না। বরং তারা জেনে বুঝে এটা করেছে। বাংলাদেশ পাকিস্তানের চেয়ে এখন যোজন-যোজন এগিয়ে। বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের কোন তুলনাই হতে পারে না। কিন্তু তারপরও পাকিস্তান বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে যে কাণ্ডটি করেছে তা পরাজিতের ঈর্ষা এবং পরাজিতের বিকৃত প্রতিহিংসা ছাড়া আর কিছুই নয়।

সুত্র: বাংলাইনসাইডার