ফ্রিডম বাংলা নিউজ

রবিবার, মে ১৯, ২০২৪ |

EN

জামায়াত নিয়ে নতুন সংকটে বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: শনিবার, জুলাই ২৩, ২০২২

জামায়াত নিয়ে নতুন সংকটে বিএনপি
বিএনপি এখন মাঠের রাজনীতির চেয়ে কূটনীতিকপাড়ায় বেশি ঘোরাফেরা করছে। কূটনৈতিক অঙ্গনে বিএনপি আগামী নির্বাচন নিয়ে একটি পরিস্থিতি তৈরি চেষ্টা করছে। সেই চেষ্টার অংশ হিসেবে বিভিন্ন পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকদের সাথে নিয়মিত বৈঠক করছে। কিন্তু এসব বৈঠকের ফলাফল খুব একটা ইতিবাচক হচ্ছেনা বিএনপি'র জন্য। বরং এই সমস্ত বৈঠকের মধ্যে দিয়ে বিএনপি নতুন সংকটের মধ্যে পড়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন বৈঠকে বিএনপির কাছে জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। শুধু পশ্চিমা দেশগুলো যে এই প্রশ্নটি করেছে এমনটি নয়, জামায়াত নিয়ে বিএনপির মধ্যেই এখন নতুন করে সংকট তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে বিভিন্ন জেলায় জামায়াতের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলছেন বিএনপির নেতৃবৃন্দ। জামায়াত এখন একলা চলো নীতি অনুসরণ করছে। যার ফলে বিভিন্ন জেলায় বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের এক ধরনের বিরোধের খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিএনপির সিনিয়র নেতারা এ বিষয়টা নিয়ে উদ্বিগ্ন।

গত দুই বছর ধরে জামায়াত নিজের সংগঠন গোছানোর কাজেই মনোযোগ দিয়েছে। আর এই মনোযোগ এর অংশ হিসেবে জামায়াত তৃণমূল পর্যন্ত সংগঠন বিস্তার করছে। এই সংগঠন বিস্তৃতির ক্ষেত্রে জামায়াতের টার্গেট হচ্ছে বিএনপি এবং সমমনা দলগুলো। জামায়াতের পক্ষ থেকে মনে করা হচ্ছে যে, যারা বিএনপি এবং সমমনা রাজনীতির সঙ্গে বিশ্বাসী তারাই জামায়াতে আসতে পারে। নতুন সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম জামায়াত একটা বড় টার্গেট করেছে বিএনপিতে যারা পরিত্যক্ত, হতাশ এবং দলীয় কর্মকাণ্ড থেকে নিজেদেরকে গুটিয়ে নিয়েছে তাদের। এর ফলে তৃণমূলে বিএনপি সংগঠন বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়েছে। বিএনপির নেতারাও এ কথা স্বীকার করেছে। বিশেষ করে ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা, যশোর, কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে বিএনপি নেতাদেরকে জামায়াতের নিয়ে আসা হচ্ছে। এটি একটি বড় ধরনের সংকেত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সাম্প্রতিক সময়ে ২০ দলীয় জোট অনেকটাই অকার্যকর হয়ে গেছে। এই অকার্যকর হওয়ার প্রেক্ষিতে জামায়াতও এখন বিএনপির সাথে কোনো ধরনের আন্দোলন বা কর্মসূচিতে আগ্রহী নয়। সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে বৈঠক করেছে অভিন্ন আন্দোলনের কৌশল নির্ধারণের জন্য, কিন্তু জামাতের সাথে প্রকাশ্যে কোনো বৈঠক করেনি। এই বিষয়টি জামায়াত ইতিবাচকভাবে নেয়নি। বরং জামায়াতও বিএনপিকে বাদ দিয়ে একা সংগঠনকে এগিয়ে নেয়ার মনোভাব ব্যক্ত করেছে। জামায়াতকে বিএনপি না পারছে ছাড়তে, না পারছে সঙ্গে রাখতে। বিএনপি যখন জামায়াতের সঙ্গে প্রকাশ্য কর্মসূচি করবে তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোকে এ নিয়ে আপত্তি প্রকাশ করছে। ফলে কৌশলগত কারণে জামায়াতকে বিএনপি প্রকাশ্যে নিতে পারছে না। আবার জামায়াত ছাড়া বিএনপি চলতেও পারছে না। তবে এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা যেটি বিএনপির জন্য সৃষ্টি হয়েছে, তা হলো বিএনপির তৃণমূলের একটি বড় অংশ জামায়াতে চলে যাচ্ছে, যার ফলে বিএনপি সাংগঠনিক ভাবে অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিএনপি নেতারা মনে করছেন যে, জামায়াত এখন সংগঠন গোছানোর ক্ষেত্রে আগ্রাসী ভূমিকা পালন করছে, তারা কর্মীসংখ্যা বানাচ্ছে এবং বিএনপিকে তারা টার্গেট করেছে। এই বিষয়টি নিয়ে বিএনপি নেতারা নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনাই শুধু করছে না, লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াকেও বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। যদিও তারেক জিয়া বলেছেন যে, তিনি বিষয়টি দেখবেন কিন্তু এখন পর্যন্ত এইটির ব্যাপারে কোনো সুরাহা হয়নি। ফলে জামাত নিয়ে বিএনপি এক নতুন সঙ্কটের মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছে।