ফ্রিডম বাংলা নিউজ

সোমবার, জুন ১৭, ২০২৪ |

EN

রায়পুরের চরাঞ্চল এগিয়ে যাচ্ছে পশু পালন ও কৃষিতে

জিহাদ হোসেন রাহাত, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি | আপডেট: রবিবার, মে ২৬, ২০২৪

রায়পুরের চরাঞ্চল এগিয়ে যাচ্ছে পশু পালন ও কৃষিতে
রায়পুর উপজেলার কোল ছিঁড়ে প্রবাহিত মেঘনা নদীর চরভূমিতে কৃষি বিপ্লব ঘটিয়েছেন চাষিরা। পশুপালনেও এখানে এসেছে আশা জাগানিয়া সাফল্য। যার প্রভাব পড়তে শুরু করছে চরাঞ্চলের অর্থনীতি ও জীবনযাত্রায়।

তবে মেঘনার ভাঙন প্রবণতা না কমায় যায়নি এখানকার মানুষের দুঃখ। ভূমি নাশা মেঘনার ভাঙন দুঃখ ছাড়া প্রায় বাকি সব দুঃখ নিয়েছে বিদায়। তবে রায়পুরের নদীতীর রক্ষায় সরকারের তরফ থেকে নেয়া হয়নি দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ। আগের তুলনায় কিছুটা কমেছে পানি প্রবাহও। নদীর মাঝের অনেক জায়গায় সৃষ্টি হচ্ছে ডুবো চর। এক দশক আগে হওয়া বন্যা আর নিয়মিত জোয়ার ভাটায় পলি পড়ে উর্বর হয়েছে এখানকার ফসলি জমি। দিগন্ত জোড়া এসব বিস্তীর্ণ মাঠে কোনো প্রকার রাসায়নিক সার ব্যবহার ছাড়াই আবাদ করা হচ্ছে নানান প্রকারের ফসল। চোখ যে দিকে যায় সে দিকেই দেখা মেলে চোখ জুড়ানো সবুজের সমারোহ। সয়াবিন,ধান, মিষ্টি আলু, আলু, লাউ, কাঁচা মরিচ, শসা, শিম, বরবটি, কুমড়া, আখসহ নানান প্রজাতির শাক-সবজির চাষ করেন এখানকার কৃষকরা। চরের প্রায় ৪ হাজার ২শ হেক্টর বেলে দো-আঁশ মাটিতে মাসকালাই, মশুর, খেসারি ও ছোলার প্রচুর আবাদ হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, প্রতিবছর ৩-৬ মাস বা তারও অধিক সময় পর্যন্ত চরের ২০০ হেক্টর এলাকা পানিতে ডুবে থাকার কারণে পলিমাটি সমৃদ্ধ হয়। ফলে রাসায়নিক সার ছাড়াই সর্বোচ্চ ফলন পাওয়া যায়। এ উপজেলায় প্রায় ৫ হাজার ৯শ ২০ হেক্টর উঁচু জমি রয়েছে। পাশাপাশি মাঝারি উঁচু জমির পরিমাণ প্রায় ১২ হাজার ২৮০ হেক্টর। 

ছৈয়াল বাজার, পানিরঘাট, মিয়ারহাট, উত্তর-পশ্চিম চরকাচিয়াসহ দুর্গম চর এলাকাগুলোয় বাথান (সমবায়ের ভিত্তিতে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে গরু-মহিষ পালন) পদ্ধতিতে পশুপালন ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বিশেষ করে ভারত থেকে গরু আমদানি বন্ধের পর থেকে বাথান পদ্ধতিতে পশু পালন বৃদ্ধি পায়। অধিকাংশ পরিবার গবাদি পশু পালনের সুফল পাচ্ছে।

ইরিগেশন সাপোর্ট প্রজেক্ট ফর এশিয়া অ্যান্ড নিয়ারইস্ট (ইসপান) প্রণীত এক রিপোর্ট থেকে জানা যায়, দেশের প্রধান পাঁচটি নদীতে চরের আয়তন প্রায় ১ হাজার ৭২২ দশমিক ৮৯ বর্গকিলোমিটার। যা দেশের মোট জমির ১ দশমিক ১৬ শতাংশ। 

মেঘনার চর এলাকার রায়পুরেই প্রায় এক লাখেরও বেশি মানুষের বসবাস। মেঘনার বুকে জেগে ওঠা অসংখ্য ছোট-বড় চরে গড়ে উঠেছে জনবসতি। কৃষি ও পশুপালনই তাদের প্রধান পেশা।

কৃষি বিপ্লবের সঙ্গে সঙ্গে জীবন মানের উন্নতি এখানে দৃশ্যমান। ছন-বাঁশের পরিবর্তে কৃষকের ঘরে এসেছে ইট-বালু-সিমেন্ট। কুপি-হারিকেনের জায়গা দখল করেছে আধুনিক সোলার সিস্টেম। অনেক কৃষক পরিবার সন্তানদের উচ্চ শিক্ষার খরচ বহন করছেন।

চরকাচিয়া গ্রামের কলেজ শিক্ষার্থী শাহীন আলম বলেন, চরে আবাদযোগ্য ফসল এবং চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে মাঠ পর্যায়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কৃষকদের সচেতন করা হলে আরও বেগবান হবে চরের অর্থনীতি।