ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বুধবার, জুন ২৬, ২০২৪ |

EN

বাহুবলে হারিয়ে যাচ্ছে বাঁশ ও বেত শিল্প! বাপ-দাদার পেশা পাল্টাচ্ছে অনেকে

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি | আপডেট: মঙ্গলবার, অক্টোবর ১৭, ২০২৩

বাহুবলে হারিয়ে যাচ্ছে বাঁশ ও বেত শিল্প! বাপ-দাদার পেশা পাল্টাচ্ছে অনেকে
বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়ায় গ্রামবাংলার বাঁশ ও বেত শিল্প এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। এ কারণে গ্রামের হাটবাজার গুলোতে বাঁশ-বেতের তৈরি শিল্প আগের মতো আর চোখে পড়ে না। এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত থাকা পরিবারগুলো এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

সঠিক সময়ে রোপণ, প্রয়োজনীয় পরিচর্যা, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিকল্পনার অভাবে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় বাঁশ ঝাড় উজাড় হয়ে যাচ্ছে। ফলে এলাকা থেকে বাঁশ-বেত নির্ভর শিল্প এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। 

সরেজমিনে জানা যায়, একসময় গ্রামের হাটবাজারগুলোতে বাঁশের তৈরি অনেক ধরনের হস্ত শিল্প বিক্রি হতো। যেমন কুলা, ডালা, টুপরি, কুড়ি চালুন, তালাই টেমাই, টোপা, ঝাঁটা হোঁচা, মই, মাছ ধরার জোলঙ্গা, পলো, দারকি, ধীল, চাঁই, বানা এবং বিভিন্ন শৌখিন খেলনা সামগ্রী। এ ছাড়া এলাকায় কাঁচা ঘর তৈরিতে বাঁশের খুঁটি, বেড়া, ঘরের দরজা ইত্যাদি উপকরণও ব্যবহার হতো। 

এ বিষয়ে বাঁশের তৈরি শিল্প বিক্রেতা উপজেলার মিরপুর  ইউনিয়নের চারগাও গ্রামের আবিদ আলী বলেন,আগে বাঁশের তৈরি জিনিসপত্র নিজেরা বাড়িতে তৈরি করে বাজারে বিক্রি করেছি, তখন লাভ হতো। কিন্তু এখন তেমন লাভ হয় না। রাত-দিন খেটে যা তৈরি করি হাটবাজারে সে তুলনায় বিক্রি নেই। 

সরকারি ভাবে কোনো সাহায্যে সহযোগিতাও পাচ্ছি না। অনেক দুঃখ কষ্টে দিন কাটছে আমাদের। অভাবের তাড়নায় গোত্রের অনেকেই অন্য পেশায় চলে গেছেন। উপযুক্ত কাজ এবং অভিজ্ঞতার অভাবে আমরা অন্য পেশায় যেতে পারিনি।’ 

সাতকাপন ইউপির দারিপুর গ্রামের সবুজ মিয়া বলেন, পেশা ছেড়ে দিয়ে এখন অটো ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছি। আমাদের গোত্রের ২ /৩টি পরিবার ছাড়া সবাই পেশা পরিবর্তন করেছেন। এক সময় পল্লিতে বাঁশ ও বেত ঝাড় থাকায় বাঁশের তৈরি শিল্পের প্রচুর ব্যবহার ছিল। 

কিন্তু আগের মতো এখন বাঁশ, ঝাড় আর বেত চোখে পড়ে না। এর দুষ্প্রাপ্যতার কারণে একদিকে যেমন গ্রামীণ অর্থনীতির চালিকা শক্তি কুটির শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তেমনি নিঃস্ব হচ্ছে সংশ্লিষ্ট পেশাজীবী পরিবারগুলো।