ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪ |

EN

অসহ্য যানজট

রাজধানীবাসীর স্বস্তি আসবে কবে?

ফারজানা ববি নাদিরা | আপডেট: সোমবার, মার্চ ১৪, ২০২২

রাজধানীবাসীর স্বস্তি আসবে কবে?
রাজধানীতে যানজটের মাত্রা সহ্যের সীমা ছাড়িয়েছে অনেক আগেই। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনেক গবেষণায় ঢাকার যানজটের পরিধি, মানুষের জীবনযাত্রায় তার প্রভাব, যানজটে প্রতিদিন কত কর্মঘণ্টা ক্ষতি হচ্ছে, অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ কত এমন অনেক তথ্য উঠে এসেছে। যানজট কমানোর লক্ষ্যে সরকার কিছু প্রকল্প হাতে নিয়েছে। অনেক উড়ালসেতু করা হয়েছে। কিন্তু যানজট কমছে না। বরং দিন দিন যানজটের কারণে ঢাকার রাস্তায় গাড়ি চলার গতি কমছে। 

বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায়, দুই বছর আগেও ঢাকার রাস্তায় গাড়ি চলার গড় গতি ছিল ঘণ্টায় সাড়ে ছয় কিলোমিটার। বর্তমানে তা নেমে এসেছে ৪.৮ কিলোমিটারে, যা মানুষের হাঁটার গড় গতির চেয়েও কম। মানুষের হাঁটার গতি গড়ে ঘণ্টায় ৪.৮৩ কিলোমিটার। আগামী দিনগুলোতে আমাদের চলাচলের এই অধোগতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা অনুমান করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। 

গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে অর্থাৎ গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর অনেক রাস্তায় যানবাহন প্রায় থমকে গিয়েছিল। বাসে বা অন্যান্য যানবাহনে থাকা বহু মানুষকে দেখা গেছে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে গন্তব্যে যেতে। যাঁরা হেঁটে যেতে পারছেন না, তাঁরা কেবলই বিরক্তি প্রকাশ করছেন। নিজেদের অসহায়ত্ব তুলে ধরছেন। যানজট হঠাৎ করে অত্যধিক বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে অনেকে স্কুল-কলেজ খুলে যাওয়াকেও একটি কারণ হিসেবে দেখছেন। কিন্তু এটিও নগরজীবনের একটি অতি স্বাভাবিক ও অপরিহার্য বিষয়। 

জানা যায়, কয়েক বছর আগে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সংশোধিত কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনায় (আরএসটিপি) আশঙ্কা করা হয়েছিল, ২০৩০ সালের দিকে সড়কে যানবাহনের গতি মানুষের হাঁটার গতির চেয়েও কমে আসতে পারে। কিন্তু সেটি ২০২২ সালেই দেখতে হবে, তা কি কেউ অনুমান করেছিলেন? এমন অসহনীয় যানজটের জন্য বিশেষজ্ঞরা যে বিষয়গুলোকে মূলত দায়ী করছেন, তার মধ্যে রয়েছে ঢাকার রাস্তায় ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যানবাহন, ছোট বা ব্যক্তিগত গাড়ির আধিক্য, মাত্রাতিরিক্ত মোটরসাইকেল, রাস্তায় নিয়ম-কানুন না মানা, সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি এবং উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের জন্য সড়ক বা সড়কের একাংশ বন্ধ থাকা, বাসগুলো যত্রতত্র দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করানো, রাস্তায় অবৈধ পার্কিং, অযান্ত্রিক যানবাহনের এলোমেলো চলাচল ইত্যাদি। একে তো রাজধানীতে রাস্তার তুলনায় যানবাহনের সংখ্যা অনেক বেশি, তার পরও প্রতিদিন নামছে শত শত গাড়ি। তদুপরি রাইড শেয়ারিং বা ব্যক্তিগত ছোট গাড়ি বা মোটরসাইকেলের ভাড়াভিত্তিক চলাচল বৈধ করে দেওয়ায় প্রতিটি গাড়ির প্রতিদিনের ট্রিপ সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। এতে রাস্তায় অতিরিক্ত চাপ তৈরি হয়েছে। যানজটে নাকাল নগরবাসীর দুর্ভোগ যে পর্যায়ে গেছে তাতে যানজটের তাৎক্ষণিক সমাধান নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা জরুরি হয়ে উঠেছে। 

উন্নয়নকাজ বা খোঁড়াখুঁড়ি যেন দিনের বেলা বা পিক টাইমে যান চলাচল বাধাগ্রস্ত না করে তা নিশ্চিত করতে হবে। ছোট গাড়ির সংখ্যা কমাতে হবে। মোটরসাইকেল ও অযান্ত্রিক যানবাহনের জন্য আলাদা লেন রাখা প্রয়োজন। অবৈধ পার্কিং বন্ধ করাসহ ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা জোরদার করতে হবে।