ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪ |

EN

নরসিংদীতে চেয়ারম্যান ও ডাকাতসহ ১০ জন গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: বুধবার, ফেব্রুয়ারী ২, ২০২২

নরসিংদীতে চেয়ারম্যান ও ডাকাতসহ ১০ জন গ্রেফতার
নরসিংদীর চরাঞ্চলের সহিংসতা ও টেটা যুদ্ধের মূলহোতা দুই চেয়ারম্যানসহ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৭ জনসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে ২টি বিদেশী পিস্তল, ১ টি দু-নালা বন্দুক, ১টি পাইপগান, গুলি ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত গাড়ীসহ বিপুল পরিমান দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। জেলার বিভিন্ন স্থানে পৃথক পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের  গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যলয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন মাধবদী থানার আমদিয়া এলাকার জাহিদুল হক টিপু, মো. শাহ আলম, সোহাগ মিয়া, পলাশের ঘোড়াশাল এলাকার নূরে আলম, রুবেল, আল আমিন ও আবু তাহের। তারা সবাই ডাকাত দলের সদস্য। অন্যদিকে চরাঞ্চলের মূল হোতা সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়নের বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দ্বীপু (৫০), আসাদুল্লাহ। এবং রায়পুরার দূর্গম চরাঞ্চল মির্জারচর ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাফর ইকবাল মানিক।

পৃথক চারটি অভিযানে ২টি বিদেশি পিস্তল, ১টি ১নালা বন্ধুক, ১টি পাইপগান, ২টি চাইনিজ কুড়াল, ৬টি কার্তুজ, ৫ রাউন্ড গুলি, ১টি রামদা, ২টি ছোরা, ১টি কাভার্ডভ্যান, ১টি সিএনজি, ১২৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করা হয় ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নরসিংদীর আমদিয়া ইউনিয়নের বেলাটি সাকিনস্থ হুওরা বিলে সাদিরের মাছের ঘেরের পাড়ে টং ঘরের ভিতর ডাকাতির প্রস্তুত্তি নিচ্ছে। এসময় সংবাদের ভিত্তিতে মাধবদী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ সৈয়দুজ্জামান পুলিশ নিয়ে ডাকাতদের ঘিরে ফেলে। ডাকাতদল পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পুলিশকে লক্ষ করে গুলি করার চেষ্টা চালায়। ওই সময় ওসি সৈয়দুজ্জামান ডাকাত শাহ্ আলমকে  ঝাপটে ধরিলে গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তখন ডাকাত শাহ আলম তার হাতে থাকা পিস্তলের বাট দিয়া ওসির মাথায় সজোরে আঘাত করে গুরুতর জখম করে। পরে পুলিশ ডাকাতদের চারপাশ থেকে ঘিরে ঘটনাস্থল থেকে ৩ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করে। ওই সময় তাদের কাছ থেকে ১টি বিদেশী পিস্তল, ৫ রাউন্ড গুলি, ১টি ছোরা উদ্ধার করে। অন্যদিকে নরসিংদীর ঘোড়াশালে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ১টি বিদেশী পিস্তাল , ১টি পাইপগান ও দেশীয় অস্ত্রসহ  ৪ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উল্লেখ করা হয়, রায়পুরার চরাঞ্চল মির্জাপুর  ইউনিয়নের সহিংসতা ও টেটাযুদ্ধের মূলহোতা চেয়ারম্যান জাফর ইবাল মানিককে ১টি দুই নালা বন্ধুক ৪টি কাতুজ অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। এলাকার আধিপত্ত বিস্তার ধরে রাখতে এলাকার লোকজনকে বিভক্ত করে আসছে চেয়ারম্যান মানিক। সর্বশেষ গেল শুক্রবার আধিপত্ত টিকিয়ে রাখতে প্রতিপক্ষের উপর হামলা চালায় চেয়ারম্যান মানিক ও তার সমর্থকরা। ওই ঘটনায় ২ জন নিহত হয়। এছাড়া নরসিংদীর সদর উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়নের সহিংসতা ও টেটাযুদ্ধের মূলহোতা বর্তমান চেয়ারম্যান ও আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দীপু ও অপর পক্ষের নেতা আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধাবরন সম্পাদক আসাদুল্লাহসহ তাদের সহযোগীদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 

নরসিংদী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান, নরসিংদীর সদর উপজেলা ও রায়পুরার মেঘনা নদীবেষ্টিত চরাঞ্চলের টেঁটাযুদ্ধ সহিংসতা ও খুনুখোনি বন্ধের লক্ষ্যে টেঁটার মূল নায়ক আলোকবালীর দীপু চেয়ারম্যান ও মির্জাচরের জাফর ইকবাল মানিক চেয়ারম্যানসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মূলত গ্রামের দলপতিদের গ্রেপ্তার করে গ্রামগুলোতে শান্তি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। এই চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে খুনখোনি সহ সংঘর্ষের ইন্ধনের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া পৃথক অভিযানে ৭ জন আন্তজেলা ডাকাতকে গ্রেফতারসহ বিপুল পরিমান অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।  গ্রেপ্তারকৃত ডাকাতদের বিরুদ্ধে একাধিক থানায় মামলা রয়েছে। গত ২দিন জেলার বিভিন্ন স্থানে পৃথক পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।