২০১৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ইতিহাসের সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোট পেয়ে ডাকসুর সহ সাধারণ সম্পাদক তথা এজিএস পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। নিয়ম অনুযায়ী , কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদের নির্বাচিত মোট পচিশ জনের সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের মাধ্যমে পাচ জন সিনেট অধিবেশনের শিক্ষার্থীদের পক্ষ হতে প্রতিনিধিত্ব করে থাকেন । সেই সময় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদের মোট পচিশ জনের মাঝে ছাত্রলীগের প্যানেল হতে নির্বাচিত তেইশ জন শিক্ষার্থী প্রতিনিধির প্রচন্ড সদিচ্ছা আর অপরিসীম রাজনৈতিক সদিচ্ছাতেই কেবল তৎকালীন ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরের সিনেট প্রতিনিধি হওয়া সম্ভব ছিল। কিন্তু দেখা গেল সিনেট প্রতিনিধি হওয়া নির্বাচিত ছাত্রনেতাদের মাঝে নারী শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করার মত কোন নারী নেতৃত্ব নেই । সেই সময় সিনেট অধিবেশন গুলোতে যেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আঠারো হাজার নারী শিক্ষার্থীর প্রতিনিধি কণ্ঠস্বর থাকে এমনটা নিশ্চিত করতে সাদ্দাম হোসেন ডাকসু হতে নিজের সমর্থিত অংশগ্রহণের পরিবর্তে একজন নারী নেতৃত্বকে সুযোগ করে দিলেন সিনেট অধিবেশন গুলোর জন্য । শিক্ষার্থী সমাজ তথা নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি প্রচন্ড দায়বদ্ধতায় এমন উদার সিদ্ধান্তে সেদিন "জেন্ডার রুলস ব্রেকিংয়ের" প্রশংসায় পঞ্চমূখ হয়েছিলেন এই ছাত্র নেতা ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন কালে মধুর ক্যান্টিনের রোজনামচার দিনগুলোতে শুধু ছাত্ররাজনীতি কিংবা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ততা এমন শিক্ষার্থী নয় , রাজনীতির বাহিরেও বিভিন্ন বিভাগ ,বর্ষের শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত তার কাছে ছুটে এসেছে নানা অভাব অভিযোগ আর সমস্যার কথা তুলে ধরতে । গদ বাধা ট্রেডেশনাল ছাত্ররাজনীতির পরিবর্তে সময়োপযোগী নতুনত্বের সংযোজনে ছাত্ররাজনীতিতে তিনি পাওয়ার পলিটিক্সের পরিবর্তে পলিসি পলিটিক্সের প্রবক্তা হয়েছেন । সেই দিন গুলোতে মধুর ক্যান্টিন কেবল গদবাধা রাজনীতি নয় বরং একজন সাদ্দাম হোসেনের কাছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সকল সমস্যার "ফিক্সিং পয়েন্ট" এ পরিনত হয়েছিল । সিনেট অধিবেশনে দাড়িয়ে তিনি সর্বপ্রথম শিক্ষার্থীদের জন্য স্বাস্থ্যবীমা , নারী শিক্ষার্থীদের পরিবহনের বিশেষ বাস সুবিধা , বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন ফি হ্রাস করা সহ সময়োপযোগী অনেক সংযোজন এবং পরিববর্তন সাধন করেছেন ।বিশ্ববিদ্যালয়ের ইভিনিং কোর্স প্রসঙ্গে তিনি দ্যার্থহীন ভাবে বলেছিলেন , বিশ্ববিদ্যালয় কোন টাকা উৎপাদনের কারখানা নয়। ছাত্ররাজনীতির কর্মযজ্ঞে তিনি বারং বারই বলেছেন, ছাত্ররাজনীতি হবে জব ফেস্ট , ক্যারিয়ার ফেস্ট , বুক ফেয়ার কিংবা গানের আসরের আয়োজক।
সর্বশেষ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৩০তম সম্মলেনের মধ্য দিয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতির দায়িত্ব পান সাদ্দাম হোসন । সাংগঠনিক দায়িত্বপালনে প্রতন্ড দক্ষতা , অনল বর্ষী বক্তৃতা , নির্মল সৌজন্যতা আর সময়োপযোগী নতুনত্বের সংযোজনে ছাত্ররাজনীতির মহলে তিনি পোষ্টারবয় । গদ বাধা প্রটোকলের পরিচিতির বাহিরে তিনি পছন্দ করেন জ্ঞান চর্চায় আধুনিক পারদর্শিতা । তিনি একজন ছাত্রনেতা অথচ ছাত্র রাজনীতির পরিক্রমায় অনবদ্য পারদর্শিতার বাহিরেও সাদ্দাম হোসেনকে দেখা যায় Mental Health Awareness নিয়ে কথা বলতে , তাকে কথা বলতে অনুরোধ জানানো হয় সংস্কৃতির ময়দান থেকে , কথা বলেন Career Development Programming এ , কথা বলেন বিতর্কের মঞ্চ কিংবা দেশমাতানো গানের আসরে। এমনকি তাকে দেখা যায় সংবাদ মাধ্যম গুলোতে আমন্ত্রিত হয়ে ক্রীড়াঙ্গন নিয়েও কথা বলেত । এমনটি নয় যে সাদ্দাম হোসেন সকল বিষয়ের জন্যই উত্তম পারদর্শী কিন্তু সাদ্দাম হোসেন সকল ক্ষেত্রেই উপযোগী ,সময়োপযোগী আর স্মার্ট। একজন ছাত্রনেতা তো ঠিক এমনই হবে , যেখানে রাজনীতির বাহিরেও যে ছেলে-মেয়েরা শুধু গান করে , কবিতা পরে , খেলাধুলায় পারদর্শী তারাও তাকে পছন্দ করবে । এবং সাদ্দাম হোসেন ঠিক এমনই ।
সামসুল আরেফিন সেজান
উপ প্রচার সম্পাদক ,
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ , কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ