ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএ গ্রাজুয়েট, নাবিহা আজাদ নূর কে তার উচ্চতর ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন গবেষণাকর্মে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওপেন এক্সেস পাবলিকেশন অ্যাওয়ার্ড এ ভূষিত করেছেন। তার থিসিস এর বিষয়বস্তূ ছিল "রেভোলুশনাইজিনয়ং ওয়ার্ক ফ্রম হোম, এন্ড দা কান্ট্রিবিউশন অফ হিউমান রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট ইন টাইমস অফ কোভিড-১৯" ।
একই গবেষণা কর্মের জন্য ইতিপূর্বে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা প্রশাসন অনুষদ এর পক্ষ থেকে তাকে বেস্ট রিসার্চ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়েছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে হাই ডিস্টিংকশন এ এমবিএ ডিগ্রী গ্রহণ করেছে। নাবিহা আজাদ প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৩.৯৬ সিজিপিএ অর্জন করে মেধা ও কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে বিবিএ প্রোগ্রাম সম্পন্ন করেছেন। বিবিএ তে তার গবেষণা কর্ম ছিল অত্যন্ত মানসম্পন্ন। বিবিএ তে তার থিসিস এর নাম ছিল " দা রিকভারি স্কোপ অফ নন-পারফর্মিং কনসিউমার ল্যান্স এন্ড দেয়ার এফেক্টস অন দা প্রফিটেবিলিটি অফ পূবালী ব্যাংক লিমিটেড"। নাবিহা আজাদ মানারাত ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে স্কুল প্রোগ্রাম সমাপ্ত করে ডিসকভারি সাইন্স টিউটোরিয়াল ( ডিএসটি ) থেকে এ'লেভেলস ও ও'লেভেলস সম্পন্ন করেছেন।
অসাধারণ মেধা ও মননের অধিকারিণী, নাবিহা বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী ও সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৯৭ সনের ১৪ই সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার কানুদাসকাঠি গ্রামে।
নাবিহা আজাদের পিতা, ফয়জুর রব আজাদ উভয় শিক্ষায় শিক্ষিত ব্যক্তিত্ব ও রাজনীতিবিদ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে বি এ অনার্স সহ এম এ ডিগ্রি লাভ করেন এবং ঢাকা সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা থেকে হাদিস বিষয় কামিল ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কৃষি ও সমবায় বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য এবং ঝালকাঠি জেলা পরিষদের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান। নাবিহা আজাদের মাতা, সৈয়দা নাজনীন আহমেদ একজন উচ্চ শিক্ষিতা নারী।
নাবিহা আজাদের পিতামহ (দাদা) ছিলেন অবিভক্ত বাংলার পীর-এ-কামেল, প্রখ্যাত আলেম-এ-দ্বীন ও বর্ষীয়ান বক্তা আলহাজ মওলানা আব্দুর রব (রহঃ)। তিনি তার অনলবর্ষী বক্তব্যদান ও মনস্তাত্ত্বিক উপস্থাপনার জন্য বুলবুলে বাংলাদেশ উপাধিতে দেশ বিদেশের সর্বত্র সর্বজন পরিচিত ব্যক্তিত্ব ছিলেন।
নাবিহা আজাদের মাতামহ (নানা) ছিলেন আওলাদ এ রাসূল (সঃ) মরহুম শাহজাদা সৈয়দ নিজামুদ্দিন আহমেদ, যিনি ছিলেন একাধারে একজন শ্রেষ্ঠ পুরস্কার প্রাপ্ত প্রোথিত যশা ব্যাংকার, লায়ন্স গভর্নর ও আধ্যাত্বিক সুফী সাধক। কর্মজীবনে তিনি রুপালি ব্যাংক, আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। তিনি তার জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক ও বোর্ড অডিট কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। সৈয়দ নিজামুদ্দিন লায়ন্স ৩১৫ এর গভর্নর ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের অন্যতম আধ্যাত্বিক পীর ও সুফী পরিবার চট্টগ্রামের মাইজভান্ডার দরবার শরীফের গাউস-এ-পাক মৌলানা গোলামুর রহমান প্রকাশ বাবা ভান্ডারী কেবলার দৌহিত্র ও একজন আওলাদ-এ-পাক। সৈয়দ নিজামুদ্দিন ইলম-এ-তাসাওউফ ও সুফিইজমের উপর বেশ কিছু গ্রন্থ রচনা করে গেছেন।
নাবিহা আজাদের চাচা জননেতা বজলুল হক হারুন (এমপি), প্রোথিত যশা রাজনীতিবিদ ও নিজ নির্বাচনী এলাকায় অসাধারণ জনপ্রিয় ব্যাক্তিত্ব। তিনি বাংলদেশ আওয়ামী লীগের ২০০১ থেকে এ পর্যন্ত পাঁচ বার মনোনয়ন লাভ করেছেন এবং ২০০৮ থেকে এ পর্যন্ত ঝালকাঠি - ১ (রাজাপুর কাঠালিয়া ) আসনে পরপর তিন বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি দশম জাতীয় সংসদ এ ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন ও নবম জাতীয় সংসদে বাংলাদেশ-সৌদি আরব সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ছিলেন। তিনি ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও রাজাপুর উপজেলার সাবেক সভাপতি।
নাবিহা আজাদ বর্তমানে বিবাহিত। তার স্বামী সৈয়দ ইজাজুল হক একজন আইটি বিশেষজ্ঞ। তিনি আমেরিকার নিউ ইয়র্কের ডেভরই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে উচ্চতর ডিগ্রী গ্রহণ করেছেন। বর্তমানে তারা স্বস্ত্রীক ব্রিটিশ কাউন্সিলে কর্মরত রয়েছেন।
অ্যাওয়ার্ড এ ভূষিত নাবিহা বলেন- আমি খুবই আনন্দিত ও কৃতজ্ঞ আমার বাবা মা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকদের প্রতি। তাদের সহযোগিতাই আমার আজকের সফলতা। আমি আমার কর্ম দিয়ে দেশ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নয়নে কাজ করে যেতে চাই।
উল্লেখ্য তার গবেষণার থিসিসটি এখন থেকে যেকোন গবেষক তাদের গবেষনার কাজে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন।