ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪ |

EN

ভূগর্ভে ইরানের গোপন পরমাণু স্থাপনা

বিশ্ব বাংলা ডেস্ক | আপডেট: মঙ্গলবার, মে ২৩, ২০২৩

ভূগর্ভে ইরানের গোপন পরমাণু স্থাপনা

ছবি: সংগৃহীত

ইরানের মধ্যাঞ্চলের জাগরোস পর্বতমালার একটি চূড়ার কাছে ভূগর্ভে পরমাণু স্থাপনা নির্মাণের কাজ করছেন শ্রমিকরা। অ্যাসোসিয়েট প্রেস (এপি) স্যাটেলাইটের ছবির সূত্র ধরে এই দাবি করেছে। বলা হচ্ছে, এই স্থাপনা সম্ভবত যাবতীয় মার্কিন অস্ত্রের নিশানার বাইরে থাকবে।

স্যাটেলাইট তথ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান প্লানেট ল্যাবস থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে এপি বলছে, ইরানের নাতাঞ্জ পরমাণু স্থাপনার কাছে শ্রমিকরা টানেল খনন করছেন।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের পরমাণুচুক্তি থেকে নিজ দেশকে সরিয়ে নেওয়ার পর তেহরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা বৃদ্ধির হুঁশিয়ারি দেয়। সেই ধারাই এখন অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে চুক্তি পুনরুদ্ধার নিয়ে তেহরান এবং পশ্চিমা বিশ্বের আলোচনা স্থবির হয়ে রয়েছে।
ভূগর্ভে পরমাণু স্থাপনা নির্মাণ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনভিত্তিক আর্মস কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের নন-প্রলিফারেশন পলিসির পরিচালক কেলসি ডেভেনপোর্ট বলেন, ‘এ ধরনের পরমাণু স্থাপনা সুবিধা একটি দুঃস্বপ্নের মতো হবে, যা নতুন করে বিস্তৃত ঝুঁকির ক্ষেত্র তৈরি করবে।

নতুন প্রকল্পটি নির্মাণ করা হচ্ছে তেহরানের দক্ষিণে নাতাঞ্জের পাশে। বিমান হামলা থেকে সুরক্ষিত, ঘেরাও করা এবং আধাসামরিক বাহিনীর প্রহরায় রয়েছে এটি। প্রায় ২.৭ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে এটি নির্মাণ করা হচ্ছে। গত এপ্রিল মাসে স্যাটেলাইটের ছবি থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে।

নাতাঞ্জ স্থাপনার ঘেরাও এলাকার বাইরে এর অবস্থান। যুক্তরাষ্ট্রের থিংকট্যাংক জেমস মার্টিন সেন্টার ফর নন-প্রলিফারেশন স্টাডিজ কর্তৃক একাধিক স্যাটেলাইট ছবি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, পর্বতমালার ধারে নির্মাণকাজের জায়গায় ঢোকার জন্য চারটি পথ রয়েছে। এর মধ্যে দুটি পূর্বে এবং দুটি পশ্চিমে। প্রতিটি ছয় মিটার চওড়া এবং আট মিটার দীর্ঘ। নির্মাণকাজটি চলছে সম্ভবত ২৬০ থেকে ৩২৮ ফুট গভীরে।

নাতাঞ্জ স্থাপনার পাশে নির্মাণকাজের তথ্য সামনে এলো ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক পরমাণুচুক্তি বাতিলের পাঁচ বছর পর। ওই সময় ট্রাম্পের যুক্তি ছিল, চুক্তিতে ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে কোনো কিছু বলা হয়নি। তবে এটি ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রাকে ৩.৬৭ শতাংশ পর্যন্ত স্থির করে দেয়। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী এই মাত্রার জন্য ইউরেনিয়াম মজুদের কথা বলা ছিল ৩০০ কেজির মতো; কিন্তু ওই চুক্তি নস্যাৎ হওয়ার পর বর্তমানে ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত। তবে গবেষকরা বলছেন, প্রকৃতপক্ষে ইরানের বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ৮৩.৭ শতাংশ পর্যন্ত গিয়ে ঠেকেছে। অস্ত্র তৈরির জন্য ৯০ শতাংশ সমৃদ্ধকরণ প্রয়োজন।

সূত্র: এপি