ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪ |

EN

গুচ্ছভর্তি: সময়ের কাছে স্বপ্নভঙ্গ মেহেরুনের

শেখ শাহরিয়ার হোসেন, জবি প্রতিনিধি | আপডেট: শনিবার, মে ২০, ২০২৩

গুচ্ছভর্তি: সময়ের কাছে স্বপ্নভঙ্গ মেহেরুনের
শেখ শাহরিয়ার হোসেন, জবি প্রতিনিধি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের 'বি’ ইউনিটের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে দেশের ২২টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয়বারের মতো গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (২০ মে) গুচ্ছভুক্ত ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ টি কেন্দ্রে একযোগে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তন্মোধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) কেন্দ্রে প্রায় ২০ মিনিট পরে পৌঁছানোর কারণে পরীক্ষা দিতে পারেনি মেহেরুন নেসা খাদিজা এক শিক্ষার্থী।

দেরিতে আসার কারণে কক্ষ পরিদর্শক উক্ত পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরবর্তীতে ওই শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন ভবনে ঘুরিয়ে অনুমতি নেওয়ার পরও পরীক্ষা না নিয়ে হয়রানির অভিযোগ করেছেন ওই শিক্ষার্থী।

বিষয়টি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার সমন্বয়ক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন, সমাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন, কলা অনুষদের ডিনকে জানানো হলে পরীক্ষা শেষ হবার প্রায় ১৫ মিনিট বাকি থাকায় পরীক্ষা নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে উক্ত শিক্ষার্থীকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হকের নিকট নিয়ে গেলে তিনি শিক্ষার্থীকে হয়রানির জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং অভিযোগ করলে হয়রানির সাথে যুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে সময় না থাকায় তিনি পরীক্ষা নিতে না পারার ব্যাপারে অপারগতা প্রকাশ করেন।

মেহেরুন নেসা বলেন, যানজটের কারণে আমি ২০ মিনিট দেরি করে পরীক্ষা দিতে আসি, পরে এক স্বেচ্ছাসেবী আপু আমাকে রফিক ভবনের তৃতীয় তলায় নিয়ে যায়। পরে আমাকে একজন স্যার বলেন, ওএমআর শিট নাই, পরীক্ষা দেওয়া যাবে না। এভাবে হয়রানির মাধ্যমে আরও কিছুটা সময় ক্ষেপণ করে। পরবর্তীতে স্যার বলেন চেয়ারম্যানের অনুমতি নিতে হবে। চেয়ারম্যানের অনুমতি নিতে নিতে ১২টা ৪০ বেজে যায়। অনুমতি নিয়ে আমাকে প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হলেও পরবর্তীতে সেটি আমার নির্ধারিত কক্ষ নয়, এমন কারণ দেখিয়ে তা প্রত্যাহার করা হয়। পরবর্তীতে আমার নির্দিষ্ট কক্ষে (৪০১) উপস্থিত হলেও আমাকে পরীক্ষার দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি।

কান্নারত অবস্থায় মেহেরুন সাংবাদিকদের বলেন, আমাকে যখন পরীক্ষা দিতে দিবে না তাহলে আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেটেই আটকাতো। কেন আমাকে ভিতরে আসতে দিয়ে একজন শিক্ষকের কাছে হেনেস্তার শিকার হতে হলো? 

তিনি আরও জানান, আমার মতো অনেকই দেরিতে এসেও অন্যান্য রুমে পরীক্ষা দিতে পেরেছে। শুধুমাত্র আমাকেই কেন পরীক্ষা দিতে দিলো না। মানবিক দিক বিবেচনা করে অন্যদের পরীক্ষা দিতে দিলো, কিন্তু আমাকে দিলো না কেন?

পরীক্ষার্থীকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হকের নিকট নিয়ে গেলে তিনি বলেন, আমরা চাই না কোনো শিক্ষার্থীদের সাথেই এমন হোক। কিন্তু একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেছে। তাই আমি দুঃখ প্রকাশ করছি, যেহেতু সময় শেষ হয়ে গেছে তাই তার পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয়। আজকে উপকেন্দ্র নটরডেম কলেজের একজন পরীক্ষার্থী ভুল করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চলে এসেছে, আমি জানার পর তারও পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। এই পরীক্ষার্থী যদি লিখিত অভিযোগ প্রদান করে, তাহলে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পরবর্তীতে মেহেরুন নেসা উপাচার্য বরাবর পরীক্ষাকেন্দ্রে শিক্ষকের হয়রানির প্রতিকার চেয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।