ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪ |

EN

শার্শায় ব্রীজ নির্মাণে ধীরগতি,হাজারো মানুষের ভোগান্তি

জয়নাল আবেদীন, বেনাপোল প্রতিনিধি | আপডেট: সোমবার, মে ১৫, ২০২৩

শার্শায় ব্রীজ নির্মাণে ধীরগতি,হাজারো মানুষের ভোগান্তি
শার্শার নাভারণ হতে গোড়পাড়া সড়কের পৃথক দুটি স্থানে বেতনা নদীর উপর একই রকম দুটি ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হলেও চলছে ধীর গতিতে। বহুদিন পরে শার্শা উপজেলার কাজিরবেড় ও গাতিপাড়া সহ এ অঞ্চলের মানুষের কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন যেন বিষাদে রুপ নিয়েছে। 

বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে মাত্র ৬০ ও ৪০ শতাংশ কাজ শেষ হওয়ায় দুপাড়ের মানুষ সহ এ অঞ্চলের মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। নিত্য চলাচলে নানাবিধ সমস্যা ও ব্যবসা বাণিজ্যে চরম লোকসানের কবলে পড়েছেন এ অঞ্চলের মানুষেরা।

চলাচলের রাস্তা অনুপযোগী হওয়ায় স্কুল কলেজের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা শতভাগ ক্লাসে হাজির হতে পারেছেন না। নানা রকম প্রতিবন্ধকতা ঠেলে কিছু শিক্ষার্থী ক্লাসে হাজির হলেও অনুপস্থিত থাকছেন প্রায় ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী। অতিদ্রুত ব্রীজ দুটি দৃশ্যমান দেখতে চান তারা।

সরেজমিনে তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, গত বছরের ৯ জানুয়ারি ২০২২ এ কাজ শুরু হয়ে আগামী ৩ জুলাই ২০২৩ এ শেষ করার তারিখ নির্ধারণ করেছে যশোরের আইসিএল প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। 

দীর্ঘদিনের পুরাতন ও ঝুকিপূর্ণ ব্রীজ ভেঙে ৬০ মিটার লম্বা ব্রীজ দুটি তৈরি করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী বিভাগ (এলজিইডি)। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি একই সাথে দুটি ব্রীজের কাজ শুরু করার কথা থাকলেও ব্রিজের নির্মাণ কাজ কচ্ছপ গতিতে চালিয়ে যাচ্ছে বলে সরেজমিনে তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়। 

ব্রীজ নির্মাণের কাজ এক বছর পেরিয়ে গেলেও বিভিন্ন কার্য্যজটিলতায় দুটি ব্রীজের কাজ সব মিলিয়ে ৬০ ও ৪০ শতাংশ হয়েছে। 

স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী বিভাগ (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে দুটি ব্রীজ জরাজীর্ণ ও ঝুকিপূর্ণ ছিলো। দু গ্রামের মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করলেও আক্রান্ত ব্রীজে প্রায়ই ঘটতো ছোটবড় দূর্ঘটনা। 

এ অবস্থার পরিপেক্ষিতে দুই গ্রামের  লোকজন নতুন ব্রীজের জন্য দীর্ঘদিন ধরে করে আসা দাবি নিরলসভাবে বাস্তবায়নে কাজ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী বিভাগ। একটু দেরি হলেও অবশেষে তাদের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে দুই গ্রামের মানুষের যাতায়াতে ভোগান্তি ও এলাকায় উৎপাদিত নানা কৃষিপণ্য আনা-নেওয়ায় বিঘ্ন সৃষ্টি হওয়ায় আর্থিক ভাবে চরম ক্ষতির মুখে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।  এ পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন যাতে কষ্টের মধ্যে না পড়তে হয় সে জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের প্রতি আহবান জানান স্থানীয় ও এ সড়কে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ। 

তবে কার্য্যজটিলতায় সময় কিছুটা পার হয়ে গেলেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি আগামী তিন মাসের  মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করার চেষ্টা করবেন বলে  জানান। দুটি ব্রীজের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ কোটি ১১ লাখ টাকা। 

স্থানীয়রা জানান, একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য দীর্ঘদিনের দাবি ছিল তাদের। ব্রীজ দুটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে দুই গ্রামের  মানুষের যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনাময় দার খুলবে। তবে সময়মত কাজ শেষ না হওয়ায় জনভোগান্তিতে রয়েছে দুই গ্রামের মানুষ সহ আশেপাশের হাজার হাজার মানুষ। 

যশোরের আইসিএল প্রাইভেট লিমিটেড নামে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার সুখেশ মজুমদার বলেন, আমরা ইতোমধ্যে গাতিপাড়া খেয়াঘাট ব্রীজের কাজ ৬০ শতাংশ এবং কাজির বেড় ব্রীজের ৪০ শতাংশ কাজ শেষ করেছি। বাকী কাজ আগামী ৬ মাসের মধ্যে শেষ করতে পারবো। এখন জনভোগান্তি হলে কিছু করার নেই।

যশোর এলজিইডি'র ফিল্ড রেসিডেন্স ইঞ্জিনিয়ার নুরুল ইসলাম বলেন, আমরা দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দদের সাথে কথা বলেছি। আশা করছি শিঘ্রয় কাজ শেষ হবে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষ যেন ভাল ভাবে চলাচল করতে পারে সে জন্য পাশেই কাঠের সেতুটি উপযোগী করে তুলছি। কাঠের সেতু দুটিতে জনসাধারণ চলাচল স্বাভাবিক হলে জনভোগান্তি কমে আসবে। 

শার্শা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী (এলজিইডি) এম এম মামুন হাসান জানান, কার্য্যজটিলতায় ব্রীজ দুটির  নির্মাণ কাজ দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ না হলেও খুব শিঘ্রয় শেষ হবে মনে করছি। যথা সময়ে কাজ শেষ করতে করনীয় বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে।