ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪ |

EN

নির্বাচনি চমক দেখাতে কেটে রাখা রাস্তা এখন খাল

জেলা প্রতিনিধি | আপডেট: বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৩, ২০২৩

নির্বাচনি চমক দেখাতে কেটে রাখা রাস্তা এখন খাল
মনোহরদীতে এক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের ভুলে একটি রাস্তা খননের পর এখন সেটি বর্ষার ভরা খালে পরিনত হয়েছে।এ কারনে এলাকার ৬টি শিক্ষা  প্রতিষ্ঠানের বিপুল পরিমান শিক্ষার্থী,কৃষিপন্য বাজারজাতকারী কৃষক, ২০টি পোল্ট্রি খামার মালিক, রোগী সাধারন ও প্রাত্যহিক চলাচলকারী লোকজনের চরম দুরবস্থা দুর্ভোগ চলমান চলছে এখানে।

সরেজমিনে গিয়ে এলসকাবাসীর সাথপ আলাপ কালে জানা যায়,প্রায় বছরাধিক সময় আগে মনোহরদী উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর দক্ষিন পাড়ার এ গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি পাকাকরনের উদ্দেশ্যে ৩/৪ ফুট গভীর করে এ থেকে মাটি খনন করা হয়।অভিযোগ,কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান এমদাদুল হক আকন্দ কর্তৃক তড়িঘড়ি করে নির্বাচনী চমক দেখাতে সম্পূর্ণ স্বউদ্দোগে কোনরুপ সরকারী বরাদ্দ ব্যতিরেকে রাস্তাটির উন্নয়ন কাজে হাত দেন।কৃষ্ণ পুর গ্রামের মালেক ডিলারের বাড়ী থেকে শাহজাদা ভূইয়ার বাড়ী পর্যন্ত রাস্তাটিতে খনন কাজ করা হয়।পরে নির্বাচনে তিনি পরাজিত হলে সে উদ্দোগ থেমে যায়।।ফলে বছরাধিক কালধরে রাস্তাটি যান চলাচলের সম্পূর্ণ অযোগ্য হয়ে পড়ে।এমনকি বৃষ্টির পানিতে রাস্তাটি রীতিমতো একটি ভরা বর্ষার খালে পরিনত হয় বলেও অভিযোগ এলাকাবাসীর।এ নিয়ে এলাকার জনরোষ গোপন থাকে না।

এ রাস্তায় পা পিছলে পড়ে আহত হয়েছেন বেশ ক'জন।গ্রামের সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ কাজল (৬১) জানান,প্রায় এক বছর আগে মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়ে এ রাস্তার কাঁদায় পড়ে পা মচকেছে তার। এখনো ভালো হয়নি সেটি।রাস্তার ধারের দোকানী হানিফা (৩৭)এর দোকানে বসে কথা হলো তার সাথে।সে সময় সেখানে উপস্থিত আরেক কাজল মিয়া (৫৫) জানান,একই অবস্থা ঘটেছে তারও।ঈদগাহ মসজিদে নামাজ পড়তে এসে পা পিছলে আহত হন তিনি।এতে দু'জনের কাঁধে ভর দিয়ে বাড়ী ফিরতে হয় তাকে।উৎপাদিত কৃষি পন্যাদি কিনতে বেপারী আসেন না এলাকায় রাস্তার এ অবস্থার জন্য।ফলে কৃষি পন্যের দর মেলে কম।ভোগান্তির শেষ থাকে না বলে জানান গ্রামের সব্জী ব্যবসায়ী সুরুজ মিয়া (৫০)। দোকানী হানিফা (৩৫) জানান,খননকৃত রাস্তার ভাঙ্গনে তার দোকানে ভাঙ্গন শুরু হয়। সেটি মেরামত করতে ইট আনতে ১৫শ' টাকার গাড়ীভাড়া ২৫শ' টাকা গুনতে হয় তাকে। কৃষ্ণপুর দক্ষিনপাড়ার এ রাস্তার দু'পাশে কম করে হলেও ২০টি পোল্ট্রি খামার আছে বলে জানানএলাকাবাসী।

এর প্রায় সবকটি এখন বন্ধ রয়েছে শুধুমাত্র এ রাস্তার কারনে বলে জানালেন সেখানকার ফরিদ (৬০), আরেক ফরিদ( ৪০) ও লিটন (৩৮)সহ বেশ ক'জন পোল্ট্রি খামারী।মনোহরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক পলাশ মাহমুদ এ ব্যাপারে তার ফেসবুক পেজে সড়ক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বরাবরে একটি খোলা চিঠি পোষ্ট করে বেশ আলোড়ন তুলেছেন।নানাভাবে চেষ্টা করেও এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সাবেক চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। কৃষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান দুলাল রাস্তাটির জন্য জনদুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন,সাবেক চেয়ারম্যান হঠাৎ করেই কোন বাজেট বরাদ্দ বা টেন্ডার ছাড়াই নির্বাচনের আগে স্বউদ্দোগে রাস্তাটি খনন করান। নির্বাচনে তিনি পরাজিত হবার পর রাস্তাটি সেভাবেই পড়ে থাকে।এতে রাস্তার দু' পাশের লোকজনসহ চলাচলকারীগন রীতিমতো অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। সে কারনে সম্প্রতি তিনি এলাকার এমপি ও শিল্পমন্ত্রীর সহায়তায় রাস্তাটিকে উন্নয়ন পরিকল্পনার আওতায় এনে এটি পাকাকরনের ব্যবস্থা করেছেন। এ ব্যাপারে মনোহরদী উপজেলাপ্রকৌশলী মীর মাহিদুল ইসলাম জানান,রাস্তাটি পাকাকরনে একটি প্রকল্প প্রনীত হয়েছে।জনদূর্ভোগ নিরসনে খুব দ্রুতই সেটির টেন্ডার হবার পর কাজ শুরু হবে বলে আশা করছেন তিনি।