ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪ |

EN

উপাচার্যের পর এবার ইবি রেজিস্ট্রারের কন্ঠসদৃশ অডিও ফাঁস

ক্যাম্পাস প্রতিবেদক | আপডেট: বুধবার, মার্চ ১৫, ২০২৩

উপাচার্যের পর এবার ইবি রেজিস্ট্রারের কন্ঠসদৃশ অডিও ফাঁস
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্যের পর এবার ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ. এম. আলী হাসানের কন্ঠসদৃশ অডিও ফাঁস হয়েছে। সেখানে এক ঠিকাদারের সাথে আর্থিক লেনদেনের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ. এম. আলী হাসানকে কথা বলতে শুনা যায়।

মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) রাত ১২টার পরে 'সাথী খাতুন' নামক এক ফেসবুক আইডি থেকে চার খন্ড বিশিষ্ট একটি ফোনালাপ প্রকাশ করা হয়।

অডিওর প্রথম ১ মিনিট ৪ সেকেন্ডের কথোপকথনে ঠিকাদার এবং রেজিস্ট্রারকে বলতে শুনা যায়,
ঠিকাদার- স্যার আজকেতো জমা দিলাম কালকে ক্যাশ হবে। তো টাকাটা কখন কিভাবে আপনাকে প্লেস করবো সেটা যদি একটু বলতেন প্রিপারেশন নিয়ে নিতাম আরকি।
রেজিস্ট্রার- তিনটার সময় কুষ্টিয়ায় দিতে পারবেন
ঠিকাদার- তিনটার সময় পাবো না স্যার সাড়ে চারটার সময় পাবো
রেজিস্ট্রার- সাড়ে চারটার সময়...
ঠিকাদার- জি স্যার, ব্যাংক থেকে সাড়ে চারটার সময় পাবো। চারলাখ টাকাটা পাবো হইলো আপনার টোটাল টাকাটাই পাবো। আপনার চারলাখ টাকাটা আমি সাড়ে চারটায় পাবো সাড়ে পাঁচটার মধ্যে আপনাকে দিতে পারবো।
রেজিস্ট্রার- ফোনে এসব বলার দরকার নাই।
ঠিকাদার- আচ্ছা স্যার। না না আমি সেইফ জায়গায় আছি স্যার
রেজিস্ট্রার - না না না ফোনে বলা যাবে না আরকি
ঠিকাদার- তাইলে আমি ফোন দিলে রিসিভ করিয়েন একটু
রেজিস্ট্রার - হ্যা হ্যা
ঠিকাদার- ওকে থ্যাংক্যু

দ্বিতীয় কথোপকথন ১ মিনিট ৪ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট ৩৭ সেকেন্ড কথোপকথনে বলতে শুনা যায়,
আসসালামু আলাইকুম
ওয়ালাইকুম আসসালাম
রেজিস্ট্রার- কে বলছেন?
ঠিকাদার- মঈন সাহেব বলছিলাম
রেজিস্ট্রার- ভালো আছেন?
ঠিকাদার- কে বলছিলেন?
রেজিস্ট্রার- আমি ডাইরেক্টর প্লানিং বলছিলাম
ঠিকাদার- ওহ স্যার। স্যার ঐটা সাড়ে চারটার দিকে মনে হয় চারটার দিকে পেমেন্ট হবে।
রেজিস্ট্রার- আচ্ছা ঠিকাছে। আর এই বিষয়গুলো...
ঠিকাদার- না বলবো না। আমি বুজতে পারসি। আমি শুধু খালি ইঙ্গিত দিবো আপনাকে। যে আমার হয়ে গেছে কোথায় আসবো শুধু এটুকুই বলনো।
রেজিস্ট্রার- ঠিকাছে।

১মিনিট ৩৭ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট ৫৬ সেকেন্ড পর্যন্ত তৃতীয় কথোপকথনে বলতে শুনা যায়,
রেজিস্ট্রার - ও আচ্ছা হয়েছে?
ঠিকাদার- ব্যাংকে আছি স্যার। এখনো হয়নি স্যার হবে। বসে আছি ব্যাংকে। কনফার্মেশনের জন্য বসে আছি ঢাকার। হইলে আমি বলবোনে আপনাকে।
রেজিস্ট্রার - আচ্ছা। আমি আছি শহরের ভিতরেই।
ঠিকাদার- আচ্ছা ঠিকাছে স্যার থাকেন।

শেষ কথোপকথনে বলতে শুনা যায়,
ঠিকাদার- আসসালামু আলাইকুম স্যার
রেজিস্ট্রার - কি অবস্থা?
ঠিকাদার- একটু অপেক্ষা করতে হবে স্যার।সমস্যা একটা হয়ে গেছে স্যার। আর একটু অপেক্ষা করেন স্যার।
রেজিস্ট্রার- আর কত অপেক্ষা করবো
ঠিকাদার- একটু অপেক্ষা করেন স্যার। কোথাও বসে চা টা খান।
রেজিস্ট্রার - কত সময় লাগবে বলেন
ঠিকাদার- এই আধাঘন্টার মতো লাগবে আর
রেজিস্ট্রার - কত
ঠিকাদার- ক্লিয়ারেন্স নিতে প্যাচ লেগে গেছে স্যার। ক্লিয়ারেন্স নিতে হয়েছে ঢাকা থেকে। এই আধাঘণ্টার মধ্যে হয়ে যাবে গা স্যার। একটু বসেন স্যার ঐ জায়গায় কোথাও যাইয়েন না।
রেজিস্ট্রার- আরেহ বাবা এদিকে ব্যাংক বন্ধ করে দিয়ে দিবে তো।
ঠিকাদার- আরেহ বইলেন না ঢাকা থেকে ক্লিয়ারেন্স নিতে হয়েছে।কিভাবে যে কি হয়েছে আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। আপনার যে চেক দিয়েছিল সেটি অনলাইন চেক না। এই চেক হলো ম্যানুয়াল চেক। আপনি অল্প একটু অপেক্ষা করেন। স্যার আপনি একটু অপেক্ষা করেন আসতেছি ব্যাগে ভরতেছি। প্লিজ একটু রাখেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ. এম. আলী হাসান বলেন, এটা সম্পূর্ণ এডিট করা। আমি আইনি পদক্ষেপ হিসেবে জিডি করতেছি। আমার সামাজিক মর্যাদা হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এটা করা হয়েছে। আমি বিচারের ভার আল্লাহর উপর ছেড়ে দিলাম।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, আমি এই বিষয়টি শুনেছি। আমরা ভিসি স্যারের সাথে কথা বলে এই বিষয়ে মিটিং করছি এরপরে সিদ্ধান্ত নিবো।

প্রসঙ্গত, এর আগে ইবি উপাচার্যের কন্ঠ সদৃশ্য বেশ কয়েকটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে  শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য সংক্রান্ত আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে কথা বলতে শোনা যায়।