ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪ |

EN

এসপি ফারুকীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত!

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: বৃহস্পতিবার, মার্চ ২, ২০২৩

এসপি ফারুকীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত!
নৈতিকস্খলন, বিভাগীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এসপি পদমর্যাদার এক পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বহিষ্কৃত কর্মকর্তার নাম মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুকী। বরখাস্ত হওয়ার সময় তিনি রাঙামাটির বেতবুনিয়া পিএসটিএস-এ দায়িত্বরত ছিলেন।

বুধবার (১ মার্চ) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে বরখাস্ত করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রাঙামাটির বেতবুনিয়া পিএসটিএসে দায়িত্বরত ও সাপ্লাই পুলিশ সদর দফতরের সাবেক এআইজি মো. মহিউদ্দিন ফারুকীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ড, নৈতিকস্খলন, শিষ্টাচার বহির্ভূত কার্যকলাপ এবং অসদাচরণের অভিযোগের মাত্রা ও প্রকৃতি বিবেচনায় তাকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর বিধি ১২(১) অনুযায়ী সরকারি চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।

সাময়িক বরখাস্তের সময় তিনি পুলিশ অধিদফতর ঢাকায় সংযুক্ত থাকবেন এবং বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন। জনস্বার্থে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে জানানো হয় প্রজ্ঞাপনে।

উল্লেখ্য, এর আগেও মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুকীর বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে ভ্রুণ হত্যার অভিযোগে মামলা করেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে ২০২২ সালের ১৫ মার্চ (মঙ্গলবার) ওই নারী মামলাটি দায়ের করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে ডিবি পুলিশকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে ওই বছরের ৮ মে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। 

মামলার অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালে মহিউদ্দিন ফারুকীর সঙ্গে ওই নারীর ফেসবুকের মাধ্যমে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হয়। তারা আগস্ট মাসে একটি রেস্টুরেন্টে দেখা করেন। মহিউদ্দিন ফারুকী ওই নারীকে জানান, তার স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ভালো না। তাকে বিয়ে করলে তিনি স্ত্রীকে তালাক দেবেন। ওই নারী প্রথমে তার প্রস্তাব নাকচ করেন। এরপর মহিউদ্দিন ফারুকী তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে লিপ্ত হতে প্রলুদ্ধ করেন। ৩০ সেপ্টেম্বর মহিউদ্দিন ফারুকী হঠাৎ করে ওই নারীর বাসায় যান। এরপর বিভিন্ন অজুহাতে তিনি বাসায় যাতায়াত করেন। ৯ অক্টোবর মহিউদ্দিন ফারুকী ওই নারীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। এরপর ২০২০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ওই নারীর জন্মদিনে মহিউদ্দিন ফারুকী তাকে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও দেখা করান। এরপর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মহিউদ্দিন ফারুকী ওই নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে থাকেন। পরে ১৭ মার্চ ওই নারী গর্ভবতী বলে তাকে জানান।

এদিকে চিকিৎসক তাকে ভিটামিন ও আয়রন ট্যাবলেট গ্রহণের পরামর্শ দেন। ১৮ মার্চ মহিউদ্দিন ফারুকী তার জন্য কিছু ওষুধ নিয়ে আসেন। কৌশলে তা ওই নারীকে খাওয়ান। রাতে তার পেটে ব্যথা হয়। পরদিন সকালে এসে মহিউদ্দিন ফারুকী আবার তাকে ওষুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি ব্যর্থ হন। পরে মহিউদ্দিন ফারুকী অকপটে স্বীকার করেন ওষুধগুলো গর্ভপাতের ওষুধ।

এদিকে এরপর ২০২১ সালে ১৬ এপ্রিল ওই নারী আবারও গর্ভবতী হওয়ার খবর পান। ২৮ এপ্রিল মহিউদ্দিন ফারুকীকে এ খবর দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হুমকি দেন মহিউদ্দিন ফারুকী। ওই নারী তাকে বিয়ে করতে বলেন। না হলে আইনের আশ্রয় নেবেন বলে জানান। পরে ৬ জুন তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের একটি সন্তান রয়েছে।