ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৮, ২০২৪ |

EN

জিটুজি পদ্ধতিতে শেষ আন্তর্জাতিক টেন্ডারে শুরু চাল আমদানি

চট্রগ্রাম ব্যুরো | আপডেট: বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারী ১৬, ২০২৩

জিটুজি পদ্ধতিতে শেষ আন্তর্জাতিক টেন্ডারে শুরু চাল আমদানি
সরকার টু সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে বিগত অর্থবছরের চাল আমদানি ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এখন শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক টেন্ডারে আমদানি।

এর আওতায় ২১ হাজার ৫৭৪ মেট্রিক টন চাল নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে দুটি জাহাজ। এর মধ্যে একটি জাহাজের চাল খালাস শেষ পর্যায়ে। আরেকটিতে খালাস চলছে। এসব চাল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভারতীয় বাগাদিয়া ও এগ্রোকর্পস।

এদিকে রাশিয়া থেকে যুদ্ধের মধ্যেও ৫৪ হাজার ৭০৬ মেট্রিক টন গম নিয়ে একটি জাহাজ চট্টগ্রাম পৌঁছেছে। চট্টগ্রাম খাদ্য বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। বিপুল পরিমাণ চাল ও গম আমদানি করার পরও বাজারে এ দুটি পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী।

চট্টগ্রাম খাদ্য বিভাগ সূত্র জানায়, মঙ্গলবার ‘এমভি সুপার ট্রেডার’ নামে একটি জাহাজ ৫৪ হাজার ৭০৬ মেট্রিক টন গম নিয়ে বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছে। বুধবার অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি ও আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকসহ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে জাহাজ থেকে আমদানি করা গমের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। নমুনা ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।

এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন ‘খাওয়ার উপযোগী’ পাওয়া গেলে এক সপ্তাহের মধ্যেই খালাস শুরু হবে। জাহাজটির ৫৪ হাজার মেট্রিক টন গমের মধ্যে চট্টগ্রাম সাইলোতে খালাস হবে ৩২ হাজার ৮২৩ দশমিক ৬০ মেট্রিক টন। অবশিষ্ট ২১ হাজার ৮৮২ দশমিক ৪০ মেট্রিক টন গম খালাস হবে মোংলা বন্দরে। রাশিয়া থেকে জিটুজি চুক্তির আওতায় আমদানি করা গমের শেষ চালান এটি।

২ ফেব্রুয়ারি ভারত থেকে ‘এমভি অপরাজিতা’ নামে একটি জাহাজ ৯ হাজার ২২৪ দশমিক ১৫০ মেট্রিক টন চাল নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছে। ৪ ফেব্রুয়ারি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বহির্নোঙরে গিয়ে চালের নমুনা সংগ্রহ করেন। নমুনা সংগ্রহের প্রতিবেদন পজিটিভ আসায় ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে চাল খালাস শুরু হয়। বুধবার দুপুর পর্যন্ত জেটিতে ৯ হাজার ১৮০ মেট্রিক টন চাল খালাস শেষ হয়েছে। অবশিষ্ট ৪৩ দশমিক ৯৫০ মেট্রিক টনের খালাস বুধবার রাতের মধ্যে শেষ হবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

একইভাবে ১০ ফেব্রুয়ারি ভারত থেকে ‘এমভি ব্লু লোটাস’ নামে একটি জাহাজ ১২ হাজার ৩৫০ মেট্রিক টন চাল নিয়ে চট্টগ্রামে বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছে। ১১ ফেব্রুয়ারি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বর্হিনোঙরে গিয়ে চালের নমুনা সংগ্রহ করেন। নমুনা সংগ্রহের প্রতিবেদন পজিটিভ আসার পর ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে চাল খালাস শুরু হয়। বুধবার দুপুর পর্যন্ত জেটিতে ৩ হাজার ৮৪৯ মেট্রিক টন খালাস শেষ হয়েছে। অবশিষ্ট ৮ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন চাল খালাস শেষ করতে আরও কয়েকদিন লাগতে পারে।

চট্টগ্রাম চলাচল ও সংরক্ষণ কার্যালয়ের উপনিয়ন্ত্রক সুনীল দত্ত যুগান্তরকে জানান, জিটুজির আওতায় চাল আমদানি শেষ হয়েছে। এখন আন্তর্জাতিক টেন্ডারের আওতায় আমদানি চালের জাহাজ আসছে। দুই জাহাজের মধ্যে একটিতে চাল খালাস শেষ পর্যায়ে আরেকটি জাহাজে খালাস চলছে। এছাড়া জিটুজি আওতায় রাশিয়া থেকে আরেকটি গমের জাহাজ এসেছে। জাহাজটি থেকে গমের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর খালাস শুরু হবে।

সূত্র জানায়, খাদ্য মন্ত্রণালয় জিটুজি ও আন্তর্জাতিক টেন্ডারের আওতায় বিপুল পরিমাণ চাল ও গম আমদানি করলেও এসব চাল এখন বাজারে আসার সুযোগ নেই। শুধু ওএমএস বা খোলাবাজারে সামান্য পরিমাণ চাল আসছে। বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে এসব চাল-গম খোলাবাজারে এলে তবেই চালের বাজার কিছুটা স্থিতিশীল হতে পারে। এদিকে গম ও চালের বাজার এখনো অস্থির। দাম এক দফা কমে তো দুই দফা বাড়ে। এভাবেই দীর্ঘদিন ধরে বাজার অস্থিরতায় রয়েছে।

এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রকারভেদে ৫০ কেজির প্রতি বস্তা চালের দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়েছে। চট্টগ্রামে গত সপ্তাহে প্রতি বস্তা মোটা সিদ্ধ চালের দাম ছিল ২ হাজার টাকা। চলতি সপ্তাহে তা বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ১০০ টাকা। সিদ্ধ মিনিকেটের দাম আগে ছিল ২ হাজার ৭০০ টাকা। এ সপ্তাহে তা ২ হাজার ৮০০ টাকা। গুটি স্বর্ণার দাম ছিল ২ হাজার ২০০ টাকা, এখন ২ হাজার ৩০০ টাকা। ইন্ডিয়ার স্বর্ণার দাম ২ হাজার ৩০০ থেকে বেড়ে ২ হাজার ৪০০ টাকায় উঠে গেছে। এছাড়া গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে পারি সিদ্ধ জাতের চালের দাম ২ হাজার ৪৫০ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬৫০ টাকায়। এছাড়া খুচরা বাজারেও অস্থির চালের বাজার। মোটা চাল কেজিপ্রতি ৫৫ টাকার কমে পাওয়া যাচ্ছে না।