ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪ |

EN

শার্শায় বন্ধের নির্দেশনা দিলেও ৩টি ডাক্তার চেম্বার খোলা

জয়নাল আবেদীন, বেনাপোল প্রতিনিধি | আপডেট: মঙ্গলবার, জানুয়ারী ৩১, ২০২৩

শার্শায় বন্ধের নির্দেশনা দিলেও ৩টি ডাক্তার চেম্বার খোলা
জেলা ও উপজেলার দুইজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করলেন তিনজন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি। আর তাতেই রক্ষা পেল যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়ার তিনটি বেসরকারি চেম্বারের নানা ডিগ্রীধারী তিনজন চিকিৎসক। 

বিশেষ তদবিরে সপ্তাহ খানেক বন্ধ থাকার পর অবশেষে খুলে গেল তাদের চেম্বার। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ ম্যানেজ হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা ও জনৈক জনপ্রতিনিধি ছত্রছায়ায় চিকিৎসা সেবার নামে ভুই ফোঁড়ের মতো গজিয়ে ওঠা অনেক প্রতিষ্ঠানের নেই কোন বৈধ কাগজপত্র। 

স্থানীয় লোকজন জানান, বাগআঁচড়ার হুমায়ুন কবির (আর.এম.পি. ই.এম.ও) আইমিত্র অপটিশিয়ানের তামিম অপটিক্যাল, নবজাতক, শিশু ও কিশোর চিকিৎসায় বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মো: আবু সাঈদ (জিপিসি, পিসি, সাতক্ষীরা, বি.আর.এম.পি (ঢাকা) বিএ পরিচালিত শিশু চেম্বার ও শিশুরোগে অভিজ্ঞ পল্লী চিকিৎসক মো: হাসানুজ্জামান (ডি.এম.এফ) এই তিনটি ডাক্তারের বৈধ কোন কাগজপত্র দেখাতে না পারায় গত সপ্তাহে চেম্বার বন্ধ ঘোষনার নির্দেশনা দেয় যশোর জেলা সিভিল সার্জন। এক সপ্তাহ পর আবারও চালু করা হয়েছে এসব চেম্বার। তারা চেম্বারে বসে আবারো চিকিৎসা শুরু করেছেন। চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অপ চিকিৎসার নামে হরহামেশায় লেখা হচ্ছে বিভিন্ন কোম্পানির কোটিশন গ্রপের ওষুধ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তাদের কারো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সার্টিফিকেটসহ চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ইকুপমেন্ট নেই। ঢাকা, যশোর ও কেশবপুরের কতিপয় প্রতারক চক্রের কাছ থেকে ভুয়া সার্টিফিকেট নিয়ে নিয়ম বর্হিভূতভাবে চলছে তাদের ডাক্তারী ব্যবসা। চিকিৎসা সেবার নামে সর্বশান্ত করা হচ্ছে এলাকার সাধারন মানষকে। ভুল চিকিৎসায় অকালেই নিভে যাচ্ছে অনেক জীবন প্রদীপ। জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উঠেছে স্বজনপ্রীতি ও সমঝোতার অভিযোগ।

এদিকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাজির হওয়ার কথা মৌখিক ভাবে জানালে বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাপ শুরু করে তারা। রোববার স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সাথে দেনদরবারে বসার কথা চাউর হলেও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তা অস্বীকার করেছেন। তবে বিশ্বস্থ একটি সুত্র জানিয়েছেন, তিনজন ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধি এসব ভূয়া চিকিৎসকদের পক্ষ নিয়ে বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে আবু সাইদ কোন সদুত্তর দিতে পারেনি। হুমায়ন কবির ও হাসানুজামান তাদের মোবাইল ফোন ধরেনি। শুরু করেছেন দৌড়ঝাঁপ।

বিষয়টি নিয়ে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইউসুফ আলি তিন জন ডাক্তারের চেম্বার বন্ধ রাখার কথা স্বীকার করেন। পরে তারা কাগজপত্র দেখানোর পর খোলার অনুমতি দেয়া হয়েছে।

তবে এলাকার লোকজন বলছেন, তাদের ডাক্তারীর কাগজপত্র ভূয়া। দেনদরবারের বিনিময়ে বিষয়টি ম্যানেজ করে পুনরায় চেম্বারগুলো আবার খোলা হয়েছে। তারা তদন্ত পূর্বক অভিযান ও অবৈধ এসব চেম্বার বন্ধসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন।