ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪ |

EN

সিরাজগঞ্জে সরকারি বরাদ্দের কম্বল ফেরত দিলেন চেয়ারম্যানরা

জেলা প্রতিনিধি | আপডেট: শুক্রবার, ডিসেম্বর ২, ২০২২

সিরাজগঞ্জে সরকারি বরাদ্দের কম্বল ফেরত দিলেন চেয়ারম্যানরা
এবারের শীতে অসহায় ও দরিদ্রদের মাঝে বিতরণের জন্য সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে ১০টি ইউনিয়নে সরকারি বরাদ্দকৃত কম্বল ফেরত দিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা। ফেরত দেওয়ার পর থেকেই আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।

বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কম্বল ফেরতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি ও গালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল বাতেন।

এর আগে, একই দিন সকালে শাহজাদপুর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে বরাদ্দকৃত কম্বলগুলো ভ্যানযোগে উপজেলা পরিষদ চত্বরে ফেরত পাঠান চেয়ারম্যানরা। পরে ফেরত দেওয়া কম্বলগুলো পরিষদের গোডাউনে রাখা হয়েছে।

ইউপি চেয়ারম্যানদের সূত্রে জানা যায়, শীতে অসহায় ও দরিদ্রদের জন্য শাহজাদপুরের ১৩টি ইউনিয়নে ৩৫০পিস করে কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ দেওয়ার পর স্ব স্ব ইউনিয়নের চেয়ারম্যানেরা কম্বল বিতরণের তালিকা করছে। এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া আফরিন চেয়ারম্যানদের জানান যে, বরাদ্দকৃত কম্বল থেকে এমপি মহোদয় নিজে বিতরণের জন্য প্রতিটি ইউনিয়নের বরাদ্দ থেকে ২০০ পিস করে কম্বল চেয়েছেন। চেয়ারম্যান আরও জানান, একটি ইউনিয়নে বিপুলসংখ্যক দরিদ্র ও অসহায় মানুষ রয়েছে। সেই মানুষগুলোর মাঝে বিতরণের জন্য মাত্র ৩৫০ পিস কম্বল আমরা বরাদ্দ পেয়েছি যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। আবার যদি এমপি মহোদয়কে ২০০ পিস দেওয়া হয় তাহলে আমরা কীভাবে মানুষের মাঝে এই অল্পসংখ্যক কম্বল বিতরণ করব। তাই ফেরত দেওয়া হয়েছে।

কম্বল ফেরতের বিষয়ে গালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল বাতেন বলেন, তীব্র শীতের কারণে দরিদ্র ও অসহায় শীতার্ত মানুষদের জন্য উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের মাঝে সরকারি বরাদ্দ ৩৫০ পিস করে মোট ৪ হাজার ৪৫০ পিস কম্বল দেওয়া হয়। কিন্তু এমপি সাহেব নিজে বিতরণের জন্য তা থেকে ২০০ পিস চেয়েছেন। বাকি ১৫০ পিস আমরা বিতরণ করবো। তাই সরকারি বরাদ্দ পাওয়া কম্বলগুলো আমরা ফেরত দিয়েছি।

হাবিবুল্লাল নগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও চেয়ারম্যান সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাচ্চু বলেন, আমাদের মাঝে যে কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা থেকে ২০০ পিস কম্বল এমপি মহোদয় বিতরণ করবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। এ কারণে আমরা বিতরণ না করে বরাদ্দ পাওয়া কম্বলগুলো ফেরত দিয়েছি।

শাহজাদপুর উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম বলেন, চেয়ারম্যানরা কম্বল ফেরত দিয়েছে কি না এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।

স্থানীয় সংসদ সদস্য কম্বল নিজ হাতে বিতরণ করতে চেয়েছে কি না তার সত্যতা যাচায়ের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া আফরিনের মুঠোফোনে বারবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহম্মদ বলেন, স্ব-স্ব উপজেলায় সরকারিভাবে কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দকৃত কম্বলগুলো বিতরণের বিষয়ে আমার কোন মতামত নেই।

সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের সংসদ সদস্য মেরিনা জাহান কবিতা বলেন, কম্বল ফেরত দেওয়ার কোন নির্দেশ দেয়নি। আমি বলেছি প্রতিটা ইউনিয়নে গিয়ে কম্বল বিতরণ করবো। বিষয়টি নিয়ে চেয়ারম্যানদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। তাদের সাথে বসে বিষয়টি সমাধান করা হবে।