ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪ |

EN

উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চকরিয়ায় পৌর টোলের নামে চলছে চাঁদাবাজি

জেলা প্রতিনিধি | আপডেট: শুক্রবার, নভেম্বর ২৫, ২০২২

উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চকরিয়ায় পৌর টোলের নামে চলছে চাঁদাবাজি
কক্সবাজারের চকরিয়ায় পৌর টোল আদায়ের নামে চকরিয়া পৌরসভার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে জনতা মার্কেট পুরাতন বাস স্ট্যান্ড থেকে থানা রাস্তার মাথা পর্যন্ত মহাসড়কের উপর যানবাহন থামিয়ে টোল আদায় নামে চলছে চাঁদাবাজি।

টোল আদায়কে কেন্দ্র করে একদিকে রাস্তায় লেগে থাকে যানজট। অন্যদিকে টাকা দিতে না চাইলে চালকদের সঙ্গে আদায়কারীদের ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকে। উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পৌর কর্তৃপক্ষ চাঁদা আদায় কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। জানা গেছে, মহাসড়কে যানবাহন থামিয়ে টোল আদায় বন্ধ করতে হাইকোর্টে দায়েরকৃত রিটপিটিশন নং- ৪৬/৪০/২০২২ এর মোতাবেক গত ২১ এপ্রিল আদেশের আলোকে টার্মিনাল ব্যতিরেকে কোনো সড়ক বা মহাসড়ক থেকে টোল উত্তোলন না করার জন্য সকল সিটি কর্পোরেশন  ও পৌরসভার মেয়র দের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিজ্ঞপ্তি জারি করে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ হতে নির্দেশনা প্রদান করা হয়। গত ২৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের অনুলিপি অনুযায়ী টার্মিনাল ছাড়া টেন্ডার হয় না। আর টেন্ডার ছাড়া টোল আদায় করা যায় না। 

পৌরসভার বিধানের ৯৮ ধারার ৭ নং অনুচ্ছেদ অনুসারে শুধু মাত্র পৌর মেয়র নির্মিত টার্মিনাল ছাড়া পার্কিং ফিথর নামে টোল আদায় সম্পূর্ণ অবৈধ। অথচ বছরের পর বছর ধরে পৌর উন্নয়নের নামে চকরিয়া পৌরসভার নামে টোল আদায়ের রসিদ দিয়ে মহাসড়কের একাধিক স্থানে চাঁদাবাজি চলছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সিটি এলাকা, জেলা, উপজেলা ও পৌর এলাকার সকল প্রশাসনকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। টার্মিনালের বাইরে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে টোল আদায় অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।  কিন্তু আদালতের নিষেধাজ্ঞা মানছে না চকরিয়া পৌর কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের শহীদ আবদুল হামিদ পৌর বাস টার্মিনাল থেকে পৌরশহরের জনতা মার্কেট পুরাতন বাস টার্মিনাল পর্যন্ত সড়কে চলাচলকারী অটো টেম্পু, অটোরিকশা, ইজিবাইক,  সিএনজি, ট্রলি, নছিমনসহ যানবাহন গতিরোধ করে রশিদ দিয়ে গাড়ি ভেদে ১০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত টোলের নামে প্রতি মাসে প্রায় ৩/৪ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। ল এছাড়াও উল্লেখ্য যে, উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১৮টি ইউনিয়ন সহ প্রায় ৪/৫ হাজার সিএনজি ও  অটোরিকশা আছে বলে জানা যায়। বিভিন্ন জায়গা থেকে অটোরিকশা, অটোভ্যান আসলেই এসব যানবাহন থেকে প্রকাশ্যে যানবাহন দাঁড় করিয়ে রশিদের মাধ্যমে টোল নেওয়ার নামে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। টাকা না দিলে প্রতি নিয়ত ড্রাইভার ও সাধারন যাত্রীদের সাথে দূর্ব্যবহার করছে। অবৈধভাবে টোল আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে চকরিয়া পৌরসভা মেয়র আলমগীর চৌধুরী তা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, চকরিয়া পৌরসভা টোল আদায় করেনা এবং টোল আদায়ের জন্য কাউকে ইজারাও দেয়নি।

তবে এ প্রতিবেদক, পৌর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক টোল আদায় বা কাউকে ইজারা না দিলে কীভাবে বছরের পর বিভিন্ন পরিবহন থেকে প্রকাশ্যে টোল আদায় করছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেনি। এবিষয়ে জানতে চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ চন্দন কুমার চক্রবর্তীর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এদিকে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ান বলেন, মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে বাস টার্মিনাল ব্যতিরেকে সড়ক ও মহাসড়ক থেকে অবৈধ টোল উত্তোলন বন্ধ করার নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।  তার পরেও সেই নির্দেশনা অমান্য করে চকরিয়া পৌর কর্তৃপক্ষ অবৈধভাবে টোল উত্তোলন করে থাকে সেটা সম্পূর্ণ অবৈধ। আমি এ বিষয়ে পৌর মেয়রের সাথে কথা বলে প্রথমবারের মতো রিমাইন্ডার দিবো। তার পরেও যদি কেউ এ নির্দেশনা অমান্য করে টাকা উত্তোলন করে তাহলে তাদেরকে চাঁদাবাজ হিসেবে আইনের কাছে সোপর্দ করা হবে।