ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪ |

EN

রাজশাহীর শীর্ষ সন্ত্রাসী জিয়া গ্রেফতার

জেলা প্রতিনিধি | আপডেট: শনিবার, অক্টোবর ১৫, ২০২২

রাজশাহীর শীর্ষ সন্ত্রাসী জিয়া গ্রেফতার
রাজশাহীর শীর্ষ সন্ত্রাসী জিয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকালে মহানগরীর সপুরা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। 

গ্রেফতার জিয়া ওই এলাকার মৃত কেরামত আলীর ছেলে। তার বিরুদ্ধে মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় চাঁদাবাজি, হামলা, ভাঙচুর এবং নাশকতাসহ মোট ৯টি মামলা রয়েছে। ওই এলাকাবাসীর কাছে জিয়া একটি আতঙ্কের নাম। দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী জিয়ার গ্রেফতারের খবরে এলাবাসীর মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।   

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, এলাকার ত্রাস জিয়া চিহ্নিত চাঁদাবাজ। এলাকার মানুষ জিয়া এবং তার সহযোগীদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে সব সময় আতঙ্কের মধ্যে থাকেন। মহানগরীর সপুরা, বিসিক ম্যাচ ফ্যাক্টরির মোড়, পার্শ্ববর্তী শাহ মখদুম থানা এলাকা, ছোট ও বড় বনগ্রাম, মালদা কলোনি এবং নওদাপাড়াসহ আশপাশের এলাকায় জিয়া চাঁদাবাজি করে। 

বিশেষ করে এসব এলাকায় কেউ বাড়ি নির্মাণের জন্য ইট-বালু ফেললেই শুরু হয় জিয়া এবং তার সহযোগীদের চাঁদাবাজি। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে নেমে আসে নির্মম নির্যাতন। নির্মাণাধীন বাড়ি ভাঙচুর করে। মারপিটের ঘটনাও ঘটে। জিয়া বাহিনীর ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পান না। করতে পারেন না প্রতিবাদ। এর ফলে জিয়া এবং তার বাহিনী অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। 

সর্বশেষ গত ৭ এবং ৮ অক্টোবর রাজশাহী মহানগর যুবলীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক দুরুল হোদার সপুরা এলাকায় নির্মাণাধীন বাড়িতে হামলা চালায় জিয়া এবং তার ক্যাডার বাহিনী। জিয়া মূলত রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষ নেতার আশ্রয়-প্রশয়ে রয়েছে। বাড়িতে ভাঙচুরের আগে ওই নেতার মদদে জিয়া ২০ লাখ টাকা দুরুল হোদার কাছে চাঁদা দাবি করে। 

দুরুল হোদা চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে জিয়া এবং তার ক্যাডাররা তার নির্মাণাধীন বাড়ি ভাঙচুর করে। লোহার পাইপ দিয়ে দুরুল হোদার মাথা ফাটিয়ে দেয়। এ ঘটনায় জিয়া, জামায়াত নেতা বারী এবং মোস্তাকসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের নামে বোয়ালিয়া মডেল থানায় চাঁদাবাজির মামলা করেন দুরুল হোদা। 

এরপর জিয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে রামদাসহ একটি পোস্ট দেয়। পোস্টে সে দম্ভোক্তি প্রকাশ করে। সেখানে উল্লেখ করে- কেউ তার কিছু করতে পারবে না। এমনকি দুরুল হোদাকে প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকে। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়। এলাকাবাসীর মধ্যে নতুন করে শুরু হয় আতঙ্ক।  

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় জিয়া যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। ওই সময় সে রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিটিউটের শিবিরের সভাপতি এক ডজন নাশকতা মামলার আসামি শাকিলের ডান হাত হিসেবে পরিচিত ছিল। জিয়ার ভাই ইউসুফ আলী জামায়াতের নেতা। ইউসুফ বর্তমানে মহানগরীর শাহ মখদুম থানা জামায়াতের কোষাধ্যক্ষ। আরেক ভাই গণি রাজশাহী মহানগর ছাত্র শিবিরের নেতা। জিয়া বর্তমানে মহানগর আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতার মদদে ওই এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। এছাড়া তার অন্য ভাই এবং নিকটাত্মীয়রা স্থানীয়ভাবে বিএনপি এবং জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।       

বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম জানান, জিয়ার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে নাশকতা, চাঁদাবাজি ও ভাঙচুরসহ থানায় ৯টি মামলা রয়েছে। একটি চাঁদাবাজির মামলায় তাকে বৃহস্পতিবার বিকালে গ্রেফতারের পর আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।