ফ্রিডম বাংলা নিউজ

মঙ্গলবার, এপ্রিল ১৬, ২০২৪ |

EN

বিএনপিতে উল্লাস: হরতালের আভাস

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: শনিবার, আগস্ট ৬, ২০২২

বিএনপিতে উল্লাস: হরতালের আভাস
গতকাল মধ্যরাতে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি বিএনপির জন্য আনন্দময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। বিএনপি নেতারা এ নিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেছে। আজ বিএনপির নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ে বিএনপি নেতাদেরকে উল্লসিত অবস্থায় দেখা যায়। একে অন্যের সঙ্গে কোলাকুলিও করেছেন। বিএনপির নেতারা বলছেন যে, জ্বালানি মূল্যবৃদ্ধির ফলে যে সংকট তৈরি হবে সেই সংকট সরকার সামাল দিতে পারবে না। এর ফলে সরকারবিরোধী আন্দোলনে জনগণ এমনি এমনি চলে আসবে।

বিএনপি মনে করছে যে, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে তাদের যে আন্দোলন সেই আন্দোলন নতুন প্রাণ পাবে। এমনিতেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে বিএনপি কর্মসূচি পালন করছে। এই কর্মসূচি পালনকালে ভোলায় সহিংসতার ঘটনা ঘটে। সেখানে বিএনপির দুজন নেতা মারা যায়। এর ফলে বিএনপির মাঠের আন্দোলন বেগবান হয়েছে বলে বিএনপি নেতারা মনে করছেন। এই পরিস্থিতিতেই আবার রেকর্ড পরিমাণ জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে জন অসন্তোষ বাড়বে বলে বিএনপি নেতারা মনে করছেন।

বিএনপি এখন প্রতিদিন কিছু না কিছু কর্মসূচি দিচ্ছে। বিএনপির ভেতরে হরতাল দেওয়ার চাপ রয়েছে। তবে বিএনপি এখন পর্যন্ত হরতালের পথে যায়নি। এমনকি ভোলায় পূর্ণ দিবস হরতাল দিয়ে সেখান থেকে বিএনপিকে পিছু হটতে হয়েছে। দুপুর বারোটার পর হরতাল প্রত্যাহার করা করা হয়েছে। বিভিন্ন বিদেশি কূটনীতিকরা বিএনপিকে হরতাল-অবরোধের মতো ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু এখন যখন জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি হলো তখন হরতাল একটা গণদাবী বলে বিএনপির অনেক নেতা মনে করছেন। বিএনপি নেতারা মনে করছেন, এই মূল্যবৃদ্ধির ইস্যুতেই সরকারকে বড় ধরনের চাপে ফেলা যাবে এবং এ কারণেই বিএনপি নেতারা এখন হরতালসহ বিভিন্ন কর্মসূচির অপেক্ষায় আছে।

বিএনপির একজন নেতা বলছেন যে, যেভাবে মূল্যবৃদ্ধি করা হয়েছে তা জনগণ মেনে নিতে পারবে না এবং জনগণের জন্য এই ভার বহন করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। কাজেই, জনগণ রাস্তায় নামবে। বিএনপি অবশ্য বলছে যে, হরতাল দিবে কিনা তা নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে। ইতিমধ্যে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের লক্ষ্যে বিএনপি ২০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেছিল। এই বৈঠকের মাধ্যমে একটি অভিন্ন আন্দোলনের রূপরেখা তারা তৈরি করার চেষ্টা করছে। কিন্তু এখন যখন জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি করলো তখন আর সময়ক্ষেপণ করা উচিত নয় বলেই বিএনপির কিছু কিছু নেতা মনে করছেন।

বিএনপির কোনো কোনো নেতা বলছেন যে, আন্দোলনের এখনই সময়। এখন যদি বড় ধরনের আন্দোলন করা যায় তাহলে সেটি খুব সহজেই সফল হবে এবং সেই আন্দোলনকে নির্বাচন এবং সরকারবিরোধী আন্দোলনের দিকে নিয়ে যাওয়া যাবে। তবে বিএনপি এখনো হরতাল দেবে কিনা বা কতদূর পর্যন্ত আন্দোলন করবে সেই সিদ্ধান্ত এখনো নেয়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বিএনপি তিন দিনের কর্মসূচি ৮ তারিখে শেষ হবে, তার মধ্যেই হরতাল দেয়া হতে পারে। তবে বিএনপির কোনো কোনো শরিকদের মধ্যে হরতাল ঘোষণার চাপ রয়েছে। এমনকি বাম গণতান্ত্রিক মোর্চাও হরতাল ডাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে বিএনপি মনে করছে যে, এই প্রথম সরকারবিরোধী আন্দোলনের একটা বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে। সেই সুযোগ থেকে তারা হাতছাড়া করতে চায় না। সামনে দিনগুলোতে জ্বালানি তেলের ইস্যুই আন্দোলনের প্রধান অস্ত্র হিসেবে বিএনপি ব্যবহার করবে বলে জানা গেছে।