ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪ |

EN

'সরকারের এজেন্ট তাই ফখরুল হরতাল ডাকে না'

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: বুধবার, আগস্ট ৩, ২০২২

'সরকারের এজেন্ট তাই ফখরুল হরতাল ডাকে না'
বিএনপিতে হরতালের দাবি ক্রমশ তীব্র হয়ে উঠছে। ভোলার ঘটনায় আজ নূরে আলম সিদ্দিকী নামে আরেকজন মৃত্যুবরণ করেছে। এই মৃত্যুর পর সরকারের বিরুদ্ধে হরতাল ডাকার দাবি বিএনপিতে আরও জোরালো হয়েছে। গত মঙ্গলবার বিএনপি ভোলার ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। সেই প্রতিবাদ সভায় দলের নেতাকর্মীরা হরতাল হরতাল দাবিতে স্লোগান দেয়। কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এতে বিরক্ত হন এবং তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আগে রাজপথ দখল করো, তারপর হরতাল করতে হবে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এই বক্তব্য বিএনপি'র মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। স্থানীয় তৃণমূলের নেতারা এমনকি কেন্দ্রীয় নেতারা পর্যন্ত মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে সরকারের এজেন্ট হিসেবে মনে করছেন। সরকারকে খুশি রাখতেই মির্জা ফখরুল এখন হরতাল ডাকছেন না বলে তাদের বক্তব্য। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আগে মির্জা ফখরুলকে টেনেহিঁচড়ে মহাসচিবের পদ থেকে নামানোর কথা বলছেন বিএনপি'র অনেক নেতাকর্মী।

আজ ভোলার ঘটনায় দ্বিতীয় মৃত্যুর পর বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে এবং বিভিন্ন স্থানে ফখরুলবিরোধী স্লোগান দিতে দেখা যায়। দলের নেতাকর্মীরা মনে করছেন যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কারণেই বিএনপি বড় ধরনের আন্দোলনে যেতে পারছে না। বিএনপি'র ঢাকা মহানগর উত্তরের একজন নেতা বলেছেন যে, আমাদের মহাসচিব রাজপথ দখল করতে বলেছেন। কিন্তু কর্মসূচি না হলে, হরতাল না হলে রাজপথ দখল করবো কিভাবে। একটা হরতালের ঘোষণা তিনি দেন, দেখুন যে আমরা রাজপথ দখল করতে পারি কিনা। কিন্তু কোনো কর্মসূচি ছাড়া রাজপথ দখলের কথা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কিভাবে বলেন। তিনি কি সরকারকে খুশি করতে চাইছেন? একসাথে দুটি কাজ কিভাবে সম্ভব? বিএনপি'র কেন্দ্রীয় একজন নেতা বলেছেন, আমরা বারবার বিভিন্ন সময় বলে আসছি যে, রাজপথের আন্দোলন দিতে হবে, কঠোর কর্মসূচি দিতে হবে। যেন সরকার নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মানতে বাধ্য হয় এবং একইসাথে সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তিও দেয়। কিন্তু সেই পথে যাচ্ছে না মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি লোকদেখানো কিছু কর্মসূচি করছেন। এই কর্মসূচির মাধ্যমে তিনি সরকারের সাথে দেন-দরবার করছেন, দফরফা করছেন এবং নিজে লাভবান হচ্ছেন। কিন্তু দলের কোনো লাভ হচ্ছে না।

বিএনপি'র নেতারা মনে করেন যে, নির্বাচনের বাকি আছে দেড় বছর কম সময়। এই সময়ের মধ্যে যদি সরকারের বিরুদ্ধে বড় ধরনের আন্দোলন গড়ে তোলা না যায়, তাহলে পরে কোনোভাবেই সরকারকে চাপে ফেলা যাবে না। এখন যে স্টাইলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দল পরিচালনা করছেন, বিএনপি নেতারা তাতে বিরক্ত। তারা বলছেন যে, বিএনপি কতগুলো নামসর্বস্ব, সাইনবোর্ড সর্বস্ব দলের সাথে বৈঠক করে কালক্ষেপণ করছে। এর ফলে বিএনপি'র কোনো লাভ হচ্ছে না, জনগণও বিভ্রান্ত হচ্ছে। এই দলগুলোর অধিকাংশর সঙ্গেই সরকারের নানা রকম যোগাযোগ রয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সরকারের গোপন সখ্যতা এবং গোপন যোগাযোগের বিষয়টি নতুন করে সামনে এসেছে। বিএনপির অধিকাংশ কর্মীরাই মনে করেন, মির্জা ফখরুল আসলে আন্দোলনবিমুখ একটি লোক। সরকার নাখোশ হবে বা তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, এই বিবেচনা থেকেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হরতালের তীব্র বিরোধী। কিন্তু হরতাল-অবরোধ ইত্যাদি কর্মসূচি ছাড়া যেমন রাজপথে নামা যাবে না, তেমনি সরকারকেও চাপে ফেলা যাবে না বলে বিএনপি নেতারা মনে করছেন। এই পরিস্থিতিতে বিএনপি'র সরকারবিরোধী আন্দোলন ক্রমশ ফখরুলবিরোধী আন্দোলনে রূপ নিচ্ছে।