ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪ |

EN

সাংবাদিক রুবেলকে সাংবাদিকতার জন্য হত্যা করা হয়নি, আরও একজন গ্রেপ্তার

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি | আপডেট: শুক্রবার, জুলাই ২২, ২০২২

সাংবাদিক রুবেলকে সাংবাদিকতার জন্য হত্যা করা হয়নি, আরও একজন গ্রেপ্তার
কুষ্টিয়ায় আলোচিত সাংবাদিক  হাসিবুর রহমান রুবেল হত্যার ঘটনায় জড়িত ইমরান শেখ ইমন (৩২) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছেন পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) রাত ১১টা ৫০মিনিটের দিকে রাজারহাট মোড় হতে ইমনকে গ্রেফতার করা হয়।

ইমরান শেখ ইমন কুষ্টিয়া শহরের কোর্টপাড়া এলাকার ৫৬, স্যার ইকবাল রোডের শামসুল আলম সামুর ছেলে।  তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক, চুরি ও মারামারির  চারটি মামলা রয়েছে।

শুক্রবার (২২ জুলাই) বিকাল ৪টার দিকে কুষ্টিয়া পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস বিফিংয়ের মাধ্যমে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. খাইরুল আলম।

এরআগে গত শুক্রবার (১৫ জুলাই) দিবাগত রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে রুবেল হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে কাজী সোহান শরিফ (৪০) ও খন্দকার আশিকুর রহমান জুয়েল (৩৫) নামে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের অভিযানিক দল। 

প্রেস ব্রিফিংয়ে এসপি খাইরুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, আলোচিত হত্যাকাণ্ডের মামলাটি স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মো. খাইরুল আলম সরাসরি নিজে তদারকি করেছেন এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফরহাদ হোসেন খাঁনের (জেলা বিশেষ শাখা) নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। পুলিশ সুপারের সার্বিক নির্দেশনা এবং তদন্ত কমিটির অক্লান্ত পরিশ্রমে ঘটনার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রাথমিক তথ্য পাওয়ায় ইমরান শেখ ইমনকে গ্রেফতার করা হয়। 

এসপি আরও বলেন, বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষন, সিডিআর পর্যালোচনা, ডিজিটাল এভিডেন্সের মাধ্যমে তদন্ত  কমিটি ইমনের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার বিষয়ে তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেছেন। তদন্তের স্বার্থে হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে না। তবে সাংবাদিক রুবেলকে সাংবাদিকতার জন্য হত্যা করা হয়নি। গ্রেফতারকৃত আসামিদের দেয়া তথ্য যাচাই বাচাই করা হচ্ছে। সাংবাদিক রুবেল হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতার করা হবে। গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে অন্যান্য কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

এসময় কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফরহাদ হোসেন খাঁনের (জেলা বিশেষ শাখা) কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বিরুল আলম সহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকতা ও কুষ্টিয়ার সর্বস্তরের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, নিখোঁজের পাঁচ দিন পরে গত ৭ জুলাই দুপুর দেড়টার দিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কুমারখালী পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তেবাড়িয়া গ্রামের গোলাম কিবরিয়া ব্রিজের (নির্মাণাধীন) নিচে গড়াই নদী থেকে হাসিবুর রহমান রুবেলের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন শুক্রবার (৮ জুলাই) ময়নাতদন্ত শেষে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পৌর গোরস্থানে জানাজার পর রুবেলের দাফন সম্পন্ন হয়।

এর আগে ৩ জুলাই রাত ৯টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের সিঙ্গার মোড়ে হাসিবুর রহমান রুবেল তার পত্রিকা অফিসে অবস্থান করছিলেন। এ সময় মোবাইলে একটি কল এলে তিনি অফিস পিয়নকে ‘বাইরে থেকে আসছি’ বলে বের হন। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। পরে নিখোঁজের পাঁচ দিন পরে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় গত ৮ জুলাই শুক্রবার রাতে কুমারখালী থানায় রুবেলের চাচা মিজানুর রহমান মেজর বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

নিহত হাসিবুর রহমান রুবেল কুষ্টিয়া জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, স্থানীয় দৈনিক কুষ্টিয়ার খবর পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও দৈনিক আমাদের নতুন সময় পত্রিকার কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি ছিলেন। তিনি কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এ ব্লক এলাকার মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে।