ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪ |

EN

নববধূ হত্যায় স্বামীর আমৃত্যু কারাদণ্ড

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি | আপডেট: বুধবার, জুলাই ২০, ২০২২

নববধূ হত্যায় স্বামীর আমৃত্যু কারাদণ্ড
লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে বিয়ের প্রায় ২৫ দিনের মাথায় স্ত্রী ফাতেমা আক্তারকে (১৮) হত্যার দায়ে স্বামী মো. শাহ জাহানের (২৮) আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেনে আদালত। একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

বুধবার (২০ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন। জেলা জজ আদালতের সরকারী কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, ২০১৭ সালের ২২ আগস্ট আসামি মো. শাহ জাহান তার স্ত্রী ফাতেমা বেগমের মাথায় আঘাত করে এবং পুকুরের পানিতে চুবিয়ে হত্যা করে। তার দেওয়া জবানবন্দি এবং সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত শাহ জাহান নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচর উপজেলার চর জুবলী ইউনিয়নের বাউগ্যা গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। ভিকটিম ফাতেমা পার্শ্ববর্তী লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার চর আলগী গ্রামের আলী আকাব্বরের মেয়ে।  

আদালত ও মামলা সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ২৮ জুলাই পারিবারিকভাবে শাহ জাহানের সাথে ফাতেমা আক্তারের বিয়ে হয়। এরপর থেকে যৌতুকের দাবিতে স্বামী তার ওপর নির্যাতন শুরু করে। এরই মধ্যে প্রতিবেশী এক মেয়ের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে শাহ জাহানের। তাই ফাতেমাকে হত্যার পরিকল্পনা করে সে।

বিয়ের কয়েকদিন পর ২১ আগস্ট শাহ জাহানকে নিয়ে ফাতেমা রামগতির চর আফজাল গ্রামে তার বোন রাশেদা বেগমের বাড়িতে বেড়াতে যায়। ওইদিন রাতে তারা সেখানে অবস্থান করে। সকাল সাড়ে ৬টার দিকে দুইজনে বাড়ির কাছের একটি পুকুরে গোসল করতে যায়। দীর্ঘ সময়েও তারা ঘরে ফিরে না যাওয়ায় বাড়ির লোকজন তাদের খুঁজতে থাকে। তবে পুকুর পাড়ে তাদের কাপড় রাখা ছিল। সকাল ৯টার দিকে পুকুরের পানিতে ফাতেমার মরদেহ ভেসে ওঠে। পরে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠায়। তবে ফাতেমার স্বামী শাহ জাহানের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

সূত্র আরও জানায়, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে ফাতেমার মাথায় আঘাত ও পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানানো হয়। এ ঘটনায় ২০১৭ সালের ৯ নভেম্বর ফাতেমার ভাই মো. মহিউদ্দিন ফাতেমার স্বামী শাহ জাহানসহ অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামি করে রামগতি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১১ নভেম্বর চট্টগ্রাম থেকে শাহ জাহানকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে।

এছাড়া তার স্বীকারেক্তি অনুযায়ী শাহ জাহানের পরকীয়া প্রেমিকার ভাই রায়হানকেও গ্রেফতার করা হয়। তবে তদন্তে তার দোষ প্রমাণিত হয়নি। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ৪ এপ্রিল রামগতি থানার উপপরিদর্শক আবদুল হাই আসামি শাহ জাহানকে অভিযুক্ত করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে রায়হানকে নির্দোষ উল্লেখ করা হয়।  

আদালত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে শাহ জাহানের আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।