ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪ |

EN

পরিচয় লুকিয়ে হোটেলে ওঠেন ‘শুটার মাসুম’

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: রবিবার, মার্চ ২৭, ২০২২

পরিচয় লুকিয়ে হোটেলে ওঠেন ‘শুটার মাসুম’
ঢাকার মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ওরফে টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফনান হত্যাকাণ্ডের পর ‘মূল শুটার’ মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশ ঢাকা থেকে পালিয়ে বগুড়ার একটি আবাসিক হোটেলে উঠেছিলেন। সেখান থেকে সীমান্তপথে অন্য দেশে পালানোর পরিকল্পনা ছিল তাঁর। বগুড়ার অখ্যাত হোটেলে উঠতে তাঁকে সহায়তা করেছে এক বন্ধু।

মাসুম মোহাম্মদকে গ্রেপ্তার অভিযানে অংশ নেওয়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, মাসুম রেজিস্টারে নাম–পরিচয় না লিখে পরিচয় গোপন করে হোটেলে অবস্থান করছিলেন। গ্রেপ্তারের সময় তিনি ছিলেন ধীরস্থির ও স্বাভাবিক।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজ রোববার সকাল আটটার দিকে বগুড়া সদর থানা–পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে মাসুমকে গ্রেপ্তার করে। বগুড়া শহরের উপকণ্ঠ চারমাথা বাস টার্মিনাল এলাকায় ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের পাশে খাজা আবাসিক হোটেল থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর মাসুম মোহাম্মদ জানিয়েছেন, তাঁর বাড়ি চাঁদপুরের মতলব উপজেলায়। তিনি ঢাকায় বসবাস করেন।

গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে রাজধানীর ব্যস্ত সড়ক শাহজাহানপুরের আমতলা মসজিদ এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুলকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় এলোপাতাড়ি গুলিতে রিকশারোহী কলেজছাত্রী সামিয়া নিহত হন।

আজ রোববার ডিএমপির গোয়েন্দা শাখার সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, হত্যার পরদিন রাতে ঢাকা থেকে একটি গাড়িতে করে জয়পুরহাটে যান মাসুম। সেখান থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে তিনি ভারতে যেতে চেয়েছিলেন। তবে সেদিন যেতে না পেরে তিনি বগুড়ায় চলে আসেন।

বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা বলেন, শুটার মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশকে গ্রেপ্তার অভিযানে অংশ নেয় সদর থানা–পুলিশের একটি দল। এতে নেতৃত্ব দেন বগুড়া সদর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক তাজমিলুর রহমান এবং উপশহর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক জিল্লুর রহমান।

পরিদর্শক তাজমিলুর রহমান বলেন, ডিএমপির গোয়েন্দা শাখার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রোববার সকাল আটটার দিকে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় দোতলা হোটেলের ১ নম্বর কক্ষে অবস্থান করছিলেন শুটার মাসুম। তাঁর ছবি আগে থেকেই পাঠানো হয়েছিল। সেই ছবি দেখে মাসুমকে শনাক্ত করা হয়। এ সময় মাসুম খুব ধীরস্থির ও স্বাভাবিক ছিলেন। ধরা পড়ার পর অপকটে তিনি আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুলকে গুলি করে হত্যার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, জাহিদুলকে লক্ষ্য করে তিনি গুলি করেছেন। কিন্তু পরে শুনেছেন, তাঁর গুলিতে একটি মেয়েও মারা গেছেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাসুম মোহাম্মদ বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর পরিচিত একজনের সহায়তায় তিনি বগুড়ার এই অখ্যাত হোটেলে এসে উঠেছেন। এখান থেকে সীমান্তপথে পালিয়ে অন্য দেশে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁর।

অভিযানে অংশ নেওয়া উপশহর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক জিল্লুর রহমান বলেন, অখ্যাত সেই হোটেল রেজিস্টারে মাসুমের নাম–ঠিকানা উল্লেখ ছিল না। নাম–পরিচয় না লিখেই তিনি কক্ষে উঠেছিলেন। তবে মামলা যেহেতু ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা তদন্ত করছে, সে কারণে মাসুম মোহাম্মদের আত্মগোপনে সহায়তাকারী হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

সুত্র: প্রথম আলো